প্রায় ৯০ শতাংশ ভোটগণনা শেষে দেখা যাচ্ছে, নেতানিয়াহুর ডানপন্থি ব্লক ৫৯টি আসন জেতার পথে রয়েছে। সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিশ্চিতে তাদের অন্তত ৬১টি আসন জিততে হতো।
মঙ্গলবারের এ ভোটে নেতানিয়াহুর বিরোধীপক্ষও ৫৬টি আসন জিততে চলেছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, এ দুই পক্ষের কেউই সরকার গড়ার মতো প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় ৫টি আসন জেতার পথে থাকা আরব দল রা’আমের দরকষাকষির সুযোগ বেড়ে যাবে।
ইসরায়েলের এবারের নির্বাচনের ফলাফল আরও অনেক কিছুর পাশাপাশি দেশটির সঙ্গে ফিলিস্তিনের সম্পর্ক কেমন হবে তার পথও ঠিক করে দিতে পারে, বলছেন তারা।
রা’আম এখন পর্যন্ত নেতানিয়াহু কিংবা তার বিরোধী শিবিরের মধ্যে কাকে সরকার গঠনে সমর্থন দেবে- তা জানায়নি।
অবশ্য আরব এ দলটির সমর্থন পেলেও নেতানিয়াহুবিরোধীরা সরকার গড়তে পারবে কিনা, তা নিয়ে সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে। এ অংশটির মধ্যে বিভিন্ন ইস্যুতে দ্বিধাবিভক্তি প্রকট, যে কারণে এরা সরকার গঠনে সফল নাও হতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন।
যদি শেষ পর্যন্ত কোনো জোটই সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রমাণ না দিতে পারে, সেক্ষেত্রে দেশটিকে নতুন নির্বাচনের পথে হাঁটতে হবে। তেমনটা হলে ইসরায়েল ২০১৯ সালের এপ্রিলের পর পঞ্চমবারের মতো সাধারণ নির্বাচন দেখবে।
ইসরায়েলের নির্বাচন সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতির আদলে হওয়ায় দেশটিতে কোনো একক দলের পক্ষে নিরঙ্কুশ জয় নিয়ে সরকার গঠন প্রায় অসম্ভব।
বিবিসি জানিয়েছে, নেতানিয়াহুকে ফের সরকার গড়তে হলে আরব দল রা’আমের পাশাপাশি তুলনামূলক ছোট ডানপন্থি জাতীয়তাবাদী দল ইয়ামিনারও সমর্থন লাগবে।
রা’আমের মতো ইয়ামিনার নেতা নাফতালি বেনেতও এখন পর্যন্ত তাদের সমর্থন কোন পক্ষে যাবে, তা জানাননি।
মঙ্গলবার রাতে ভোট দেওয়ার পর তিনি বলেছিলেন, “আমি তাই করবো, যা ইসরায়েল রাষ্ট্রের জন্য ভালো হবে।”
ইয়ামিনার পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে, সে সিদ্ধান্ত নিতে ভোটের চূড়ান্ত ফল পর্যন্ত অপেক্ষা করা লাগতে পারে, নেতানিয়াহুকেও এমনটা বলেছেন বলে জানিয়েছেন বেনেত।
মঙ্গলবার টুইটারে নেতানিয়াহু তার সমর্থকদের ধন্যবাদ দিয়েছেন।
“আমার নেতৃত্বে থাকা ডান ও লিকুদ পার্টিকে বড় জয় এনে দিয়েছেন আপনারা। লিকুদ এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় দল। এটা স্পষ্ট যে বেশিরভাগ ইসরায়েলি ডানপন্থি এবং তারা একটি শক্তিশালী ও স্থিতিশীল ডানপন্থি সরকার চায়,” বলেছেন তিনি।
বিরোধী দলের মূল নেতা ইয়াইর লাপিদ বলেছেন, তিনি তার দলের অসাধারণ অর্জনে গর্বিত। লাপিদের মধ্যপন্থি ইয়েশ আতিদ পার্টি এবারের নির্বাচনে ১৭টি আসন জিততে যাচ্ছে বলে গণনায় ধারণা পাওয়া গেছে।
“পরিবর্তনের লক্ষে আমি আজ সন্ধ্যা থেকেই এই ব্লকের অন্যন্য নেতাদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা শুরু করে দিয়েছি। এটা আরও কয়েকদিন অব্যাহত থাকবে। ইসরায়েলে একটি সুস্থমস্তিষ্কের সরকার গঠনে সম্ভব সবকিছু করবো,” বলেছেন লাপিদ।