গত শনিবার থেকে এই হাসপাতালের ডায়ালাইসিস
বন্ধ রয়েছে বলে হাসপাতালের পরিচালক মুন্সি মো. রেজা সেকেন্দার জানান।
বুধবার দুপুরে হাসপাতালের নেফ্রোলজি
বিভাগের সামনে গিয়ে দেখা যায়, কিডনি ডায়ালাইসিস করতে আসা কয়েকজন রোগী বসে রয়েছেন।
আবু নাসের হাসপাতালে ডায়ালাইসিস বন্ধের
কারণ হিসেবে হাসপাতালের পরিচালককে দুষছেন ওই বিভাগের চিকিৎসক ও কর্মকর্তারা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে হাসপাতালের
নেফ্রোলজি বিভাগের কয়েকজন চিকিৎসক ও কর্মকর্তা বলেন, আগে কোনো যন্ত্র নষ্ট হলে তাৎক্ষণিক
স্থানীয়ভাবে মেকানিক ডেকে তা মেরামত করা হতো। ফলে সর্বোচ্চ একদিনের মধ্যেই আবার কাজ
শুরু করা যেত। কিন্তু বর্তমান পরিচালক ওই দায়িত্ব না নিয়ে মেরামতের ব্যবস্থা করতে স্বাস্থ্য
অধিদপ্তরে চিঠি লিখেছেন। এ কারণে সময় বেশি লাগছে।
নেফ্রোলজি বিভাগের চিকিৎসক ইনামুল
কবির বলেন, ডায়ালাইসিসের সঙ্গে মানুষের জীবন-মরণের সম্পর্ক। সঠিক সময়ে ডায়ালাইসিস করাতে
না পারলে রোগী মারা যেতে পারে। এ কারণে যদি বোঝা যায় কোনো যন্ত্র সমস্যা সৃষ্টি করছে,
তাহলে আগে থেকেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
ইনামুল বলেন, “বেশ কয়েকদিন ধরে ওয়াটার
ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টটি সমস্যা করছিল। ব্যাপারটি আগে থেকেই পরিচালককে জানানো হয়েছিল।
কিন্তু সঠিক সময়ে পদক্ষেপ না নেওয়ায় বন্ধ হয়ে গেছে ডায়ালাইসিস।”
কবে নাগাদ শুরু করা যাবে তা নিশ্চিত
করে বলতে পারেননি তিনি।
হাসপাতালের পরিচালক মুন্সি মো. রেজা
সেকেন্দার বলেন, ডায়ালাইসিসের সঙ্গে অনেকগুলো যন্ত্র ওতপ্রতোভাবে জড়িত। কোনো একটি যন্ত্র
নষ্ট হয়ে গেলে পুরো প্রক্রিয়াটিই বন্ধ হয়ে যায়।
তিনি জানান, কিডনি ডায়ালাইসিস করার
সময় ওষুধের সঙ্গে প্রয়োজন হয় বিশুদ্ধ পানি। কিন্তু হঠাৎ হাসপাতালের পানি বিশুদ্ধকরণ
প্ল্যান্টটি নষ্ট হয়ে গেছে। এ কারণে কিডনি ডায়ালাইসিস বন্ধ করতে হয়েছে। ঠিক করতে মন্ত্রণালয়ে
চিঠি পাঠানো হয়েছে।
হাসপাতালে আসা কিডনি রোগীরা বলছেন.
খুলনায় বেসরকারি তিনটি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস করা হয়। এসব হাসপাতালে প্রতিবার ডায়ালাইসিস
করতে খরচ হয় আড়াই হাজার থেকে তিন হাজার টাকা। অন্যদিকে সরকারিভাবে আবু নাসের হাসপাতালে
ডায়ালাইসিস করতে খরচ হয় মাত্র ৪১৫ টাকা। এ কারণে গরীব রোগীদের সর্বশেষ আশ্রয়স্থল সেটি।
রোগীরা জানান, আবু নাসের হাসপাতালে
প্রতিদিন ৭৫ থেকে ৮০ জন রোগীর কিডনি ডায়ালাইসিস করা হয়। খুলনা জেলাসহ আশপাশের বিভিন্ন
জেলা থেকে রোগীরা ডায়ালাইসিস করতে এখানে আসেন।