ক্যাটাগরি

পিপিপিতে নয়, নিজস্ব অর্থায়নে হবে রাবনাবাদ চ্যানেল ড্রেজিং

বুধবার অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভা শেষে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, “নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীন পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের ‘পায়রা বন্দরের রাবনাবাদ চ্যানেলের ক্যাপিটাল ও মেইনটেন্যান্স ড্রেজিং’ কার্যক্রম পিপিপির পদ্ধতির পরিবর্তে সংস্থার নিজস্ব অর্থায়নে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে (ডিএমপি) বাস্তবায়নের প্রস্তাবে নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।”

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে অর্থ নিয়ে গঠিত ‘বাংলাদেশ অবকাঠামো উন্নয়ন তহবিল’ এর মাধ্যমে পায়রা বন্দরকে যে ঋণ দেওয়া হচ্ছে, সেখান থেকে বেসরকারি খাতে ঋণ নেওয়া যাবে কি না- তা জানতে চেয়েছিলেন সাংবাদিকরা।

অর্থমন্ত্রী উত্তরে বলেন, “আজকে আমরা নীতিগতভাবে অনুমোদন দিয়েছি যে সরকারি অর্থায়নে করা যাবে। বিদেশি অর্থায়নে জয়েন্ট ভেঞ্চারে করব বলেছিলাম৷ কিন্তু বিদেশিরা থাকলে আমাদের খরচ বেড়ে যাচ্ছে অনেক। সেজন্য আমরা সরকারি অর্থে আমরা নিজেরাই চেষ্টা করব।”

“আগে কথা ছিল বিদেশ থেকে টাকা দিলে করা হবে। সেখানে আমাদের প্রজেক্টের খরচ বেড়ে যায়। সেজন্য সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে যেহেতু আমাদের কাছে অর্থ আছে, সেজন্য আমরা নিজেদের টাকায় করব। আমাদের ৪৪ বিলিয়ন রিজার্ভ থেকে একটা অর্থ এতে এখানে ব্যয় করব। আপনারা অপেক্ষা করুন, আগামী মিটিং যখন আসবে, তখন আপনাদের বিস্তারিত বলা হবে।”

তাহলে কোনো নীতিমালা কী রিজার্ভ থেকে অর্থ নেওয়া হচ্ছে? – এমন প্রশ্নে অর্থমন্ত্রী বলেন, “একটা নীতিমালাতো হবেই। পলিসির ওপর নির্ভর করেই আমরা এটা করব। যেহেতু নতুন একটি এলাকা আমরা উন্মুক্ত করলাম। এটা নতুন এলাকা, সেহেতু এটার ওপর কাজ করা বাকি আছে। সরকারি খাতে পাবে, এটা ঠিক আছে, এখানে কোন প্রশ্ন নেই।”

এখনও নীতিমালা হয়নি কেন জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, “নীতিমালা হলে আপনারা জানতে পারতেন। আমরা কি অর্থ দিয়ে দিয়েছি? যদি অর্থ দেইও তাহলে সরকারের ডান হাত থেকে বাম হাতে যাচ্ছে। সরকারতো একটাই সরকার। এখন সরকারি প্রকল্পে যে অর্থ আমো ব্যয় করি, এখন বিদেশ থেকে টাকা না এনে নিজের টাকায় করতে পারি, এটা কি মঙ্গলজনক না ভালো না বলেন? এখানে প্রশ্নের কিছু নেই।”

চলতি বাজেটে অপ্রদর্শিত আয় সকল খাতে বিনিয়োগ করার সুযোগ রয়েছে, আগামী বাজেটেও এ সুযোগ দেওয়া হবে কি না- জানতে চান একজন সাংবাদিক।

অর্থমন্ত্রী বলেন, “গত বছর বাজেটে যে সমস্ত জায়গাগুলো ছিল, সে সমস্ত জায়গাগুলো থাকবে কিনা সেটা এই মুহূর্তে বলা যাবে না…। আগামী বাজেট যেদিন সংসদে উপস্থাপন করা হবে, সেদিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।”

‘এশিয়ার টাইগার আমরা হবই’

বর্তমান সরকার আগামী ৫ বছর ক্ষমতায় থাকলে বাংলাদেশ অর্থনীতিতে ‘এশিয়ান টাইগার’ হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন অর্থমন্ত্রী।

অর্থনৈতিক ও সামাজিক সূচকে গত ৫০ বছরে অর্জন কেমন ছিল- এমন প্রশ্ন অর্থমন্ত্রীর সামনে রাখা হলে তার ওই আশার বাণী আসে।

তিনি বলেন, “অর্থনৈতিক ও সামাজিক সূচকের প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে আমাদের অর্জন অনেক বেশি। আমরা যখন ক্ষমতায় আসি, তখন আমার সব সময় জানার আগ্রহ ছিল পৃথিবীর সব দেশের অবস্থান সম্পর্কে আমরা জানি, কিন্তু বাংলাদেশের অবস্থান কত সেটা জানতে পারি একটু পরে। কারণ তখন বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ৮০ নম্বরে।”

“এখন যারা বিভিন্ন দেশ নিয়ে পর্যালোচনা করেন, এবং তাদের মতামত ব্যক্ত করেন, ৫০টি দেশকে তারা বিবেচনায় নেন। যেহেতু আমরা ৫০টি দেশের মধ্যে ছিলাম না, সেজন্য আমরা কখনো জনসম্মুখে আসতে পারি নাই। সেখানে আমরা এখন ৪১ নম্বরে আছি।

“আর আপনারা জানেন এর মাঝে আমরা গ্র্যাজুয়েশন করেছি। এর ফলে এখন কেউ আমাদের হত দরিদ্র দেশ আখ্যায়িত করে না। আগে যারা আমাদের নিয়ে নানাবিধ নেগেটিভ মন্তব্য করত, এখন আর কেউ করে না।”

মহামারীর আগ পর্যন্ত গত ১০ বছর বাংলাদেশ ‘অসাধারণ গতিশীলতায়’ এগিয়েছে মন্তব্য করে অর্থমন্ত্রী বলেন, “১৯৬০ থেকে ৯০ সাল, এই ৩০ বছর পর্যন্ত চারটি এশিয়ান টাইগার ধরা হয়। তারা ৬, ৭, ৮ এই অনুপাতে জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। আর আমরা কিন্তু একই ধারাবাহিকতায় ৬,৭, ৮ এ চলে গেছি।

“এতে মনে করেন, আমরা যদি আর ৫ বছর থাকি, তাহলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস, আমরা পঞ্চম এশিয়ান টাইগার হিসেবে আসতে পারব। যাই হোক, করোনায় সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, আমাদেরও ক্ষতি হয়েছে। তবে আশা করছি সারা বিশ্ব আমাদের নিয়ে যে মন্তব্য করে, এশিয়ার টাইগার আমরা হবই।”