ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং বুধবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার কার্যালয়ে সাক্ষাত করতে গেলে তাদের আলোচনায় এ বিষয়টি আসে।
পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের বলেন, “বৈঠকে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা করেছেন, বিশেষ করে বাণিজ্য ও কানেকটিভিটি।”
পাশাপাশি দুই দেশের বাণিজ্য সম্প্রসারণে বাংলাদেশের নৌপথের সুবিধা কাজে লাগানোর বিষয়েও তারা একমত হয়েছে বলে প্রেস সচিব জানান।
শুল্কমুক্ত বাজারসুবিধা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে ২০২০ সালের ৬ ডিসেম্বর ভুটানের সঙ্গে অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি (পিটিএ) করে বাংলদেশ। এটাই কোনো দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রথম পিটিএ চুক্তি।
প্রেস সচিব জানান, সহযোগিতার ভিত্তিতে ভুটানে জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে দ্বিপক্ষীয় বা ত্রিপক্ষীয় সমঝোতার কথা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৈঠকে বলেন।
ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং তার দেশের শিক্ষার্থীদের জন্য বাংলাদেশে এককালীন ফুলটার্ম ভিসা এবং মাল্টিপল এন্ট্রি সুবিধা দেওয়ার কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সঙ্গে একমত পোষণ করে সংশ্লিষ্টদের এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন বলে ইহসানুল করিম জানান।
তিনি বলেন, “ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটসহ তথ্য-প্রযুক্তি খাতে বাংলাদেশ ভুটানকে সহযোগিতা করবে বলে প্রধানমন্ত্রী বৈঠকে জানিয়েছেন। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে বাংলাদেশ ও ভুটান একসঙ্গে কাজ করবেও তিনি আশা প্রকাশ করেছেন।“
বৈঠকের আগে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী প্রায় ৫০ মিনিট একান্তে আলাপ করেন।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস, পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন এবং ভুটানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত একেএম শহীদুল করিম বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন বাংলাদেশে ভুটানের রাষ্ট্রদূত রিঞ্চেন কুয়েন্সি এবং ভুটানের চিফ প্রটোকল অফিসার দাসো উগিয়েন গংফেল।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর উদযাপনে সঙ্গী হতে মঙ্গলবার সকালে ঢাকায় পৌঁছান ভুটানের প্রধানমন্ত্রী। ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী তাকে ফুল দিয়ে অভ্যর্থনা জানান।
বিমানবন্দর থেকে ভুটানের প্রধানমন্ত্রী সরাসরি সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে গিয়ে সেখানে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে তিনি ধানমণ্ডির ৩২ নম্বরে গিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন বিকালে ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। সন্ধ্যায় হোটেল সোনারগাঁওয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া নৈশভোজে যোগ দেন লোটে শেরিং। সেখানে তিনি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও উপভোগ করেন।
বুধবার বিকালে বঙ্গভবনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করে লোটে শেরিং জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর আয়োজনে যোগ দেবেন।
তিন দিনের এ সফর শেষে বৃহস্পতিবার সকালে ভুটানের উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করবেন প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং।