বৃহস্পতিবার পূর্ণ জোয়ারের সময় পাঁচটি টাগ বোট জাহাজটিকে টেনে গভীর জলের দিকে নেওয়ার চেষ্টা করছিল বলে শিপ-ট্র্যাকিং তথ্যের বরাত দিয়েছে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
সুয়েজ খাল কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকালে পানামায় রেজিস্ট্রিকৃত জাহাজটি প্রবল বাতাস ও ধূলি ঝড়ের সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ঘুরে গিয়ে খালটির দক্ষিণাংশের সংকীর্ণ একক লেনে আড়াআড়িভাবে আটকে যায়, এতে জলপথটিতে জাহাজ চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
দুই লাখ ২০ হাজার টন ধারণক্ষমতার এভার গিভেন তখন উত্তর দিকে ভূমধ্যসাগরের দিকে যাচ্ছিল। এখন এটি উত্তর-দক্ষিণ উভয়মুখি জাহাজ চলাচল বন্ধ করে দিয়ে এশিয়া ও ইউরোপকে সংযোগকারী বিশ্বের অন্যতম ব্যস্ততম জাহাজ চলাচল পথকে অকেজো করে রেখেছে।
নেদারল্যান্ডসের বোসকালিস কোম্পানি এই জাহাজটিকে মুক্ত করার চেষ্টা করছে। এ কাজ করতে কতো সময় লাগবে তা বলার সময় এখনও হয়নি বলে বোসকালিসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পিটার বেরদোওস্কি জানিয়েছেন।
ডাচ টেলিভিশন অনুষ্ঠান ‘নিউসুয়ার’ এ তিনি বলেছেন, “এটি পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করছে, কয়েক সপ্তাহও লেগে যেতে পারে।”
জাহাজের সামনের অংশ ও পেছনের অংশ খালের দুই পাড়ের ওপরে উঠে আছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
“সৈকতে আটকা পড়া বিশাল একটি তিমির মতো অবস্থা। বালুর ওপর বিপুল ওজনের চাপ। জাহাজটি থেকে কন্টেইনার, তেল ও পানি সরানোর পাশাপাশি টাগ বোট দিয়ে টেনে ও বালু কেটে জাহাজটিকে উদ্ধার করা লাগতে পারে,” বলেছেন তিনি।
এভার গিভেন জাহাজের প্রযুক্তিগত ব্যবস্থাপক কোম্পানি বানহার্ড শেল্টি শিপম্যানেজমেন্ট (বিএসএম) জানিয়েছে, জাহাজটিকে মুক্ত করতে এর চারপাশের বালু ও কাদা সরাতে কয়েকটি ড্রেজার কাজ করছে এবং এভার গিভেনের কপিকলগুলোর সঙ্গে সংযুক্ত টাগবোটগুলো এটিকে টেনে সরানো চেষ্টা করছে।
মেরিন সার্ভিস ফার্ম জিএসি রাতে একটি নোট ইস্যু করে তাদের ক্লায়েন্টদের জানিয়েছে, টাগবোট দিয়ে জাহাজটিকে মুক্ত করার চেষ্টা অব্যাহত আছে কিন্তু বাতাসের পরিস্থিতি ও জাহাজটির আকার ‘অভিযানে বিঘ্ন ঘটাচ্ছে’।
শিপ-ট্র্যাকিং সফটওয়্যারগুলো দেখিয়েছে, এভার গিভেনের চারপাশে পাঁচটি টাগবোট আছে আর আরও তিনটি জাহাজটির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
এভার গিভেনের জিপিএস সঙ্কেত দেখাচ্ছে, এত সব প্রচেষ্টা সত্ত্বেও ২৪ ঘণ্টায় এটি আগের অবস্থান থেকে খুব একটা সরেনি।
এভার গিভেনের কারণে সুয়েজ খালের দুই প্রান্তে কয়েক ডজন জাহাজ থমকে আছে। এগুলোর মধ্যে বিশাল কন্টেইনারবাহী জাহাজ, তেল ও গ্যাসবাহী ট্যাংকার এবং শস্যবাহী জাহাজ আছে। এতে এখানে কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে নাজুক জাহাজ জট তৈরি হচ্ছে।