শুক্রবার জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানমঞ্চে বড় বোন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সঙ্গে নিয়ে নরেন্দ্র মোদীর হাত থেকে পুরস্কার নেন শেখ রেহানা।
অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে নরেন্দ্র মোদী বলেন, “এটা ভারতের জন্যও গর্বের, আমরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গান্ধী শান্তি পুরস্কার দিতে পেরেছি।”
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ২০২০ সালের গান্ধী শান্তি পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। গান্ধী শান্তি পুরস্কারের বিচারকমণ্ডলীর প্রধান ছিলেন মোদী।
তার সফরের আগে গান্ধী পুরস্কারের জন্য বঙ্গবন্ধুর নাম ঘোষণার বিষয়টিকে দুই দেশের বন্ধুত্বের একটি নিদর্শন হিসেবে দেখছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ভারত সরকারের দেওয়া গান্ধী শান্তি পুরস্কার শুক্রবার স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে তার শেখ রেহানার হাতে তুলে দেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বঙ্গবন্ধুর বড় মেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। ছবি: পিএমও
ভারতের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, মহাত্মা গান্ধী যে অহিংসার পথ দেখিয়ে গেছেন, একই ধরনের পথে বাংলাদেশের সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক রূপান্তরে অসামান্য অবদানের জন্য বঙ্গবন্ধুকে এই পুরস্কার জন্য মনোনীত করেছে ভারত সরকার।
১৯২০ সালের ১৭ মার্চ গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্ম নেন শেখ মুজিবুর রহমান। কালক্রমে তার হাত ধরেই বিশ্ব মানচিত্রে নতুন দেশ হিসেবে স্থান করে নেয় বাংলাদেশ।
১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হাতে আটক হওয়ার ঠিক আগে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন শেখ মুজিবুর রহমান। এরপর শুরু হয় প্রবাসী সরকারের নেতৃত্বে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ।
ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী এই যুদ্ধে সরাসরি জড়িয়ে পড়ে। মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় বাহিনীর সমন্বয়ে গঠিত মিত্রবাহিনীর কাছে ১৬ ডিসেম্বর আত্মসমর্পণ করে পাকিস্তান সেনাবাহিনী। ওই যুদ্ধে কয়েক হাজার ভারতীয় সেনা শহীদ হয়েছিলেন।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ভারত সরকারের দেওয়া গান্ধী শান্তি পুরস্কার শুক্রবার স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে তার শেখ রেহানার হাতে তুলে দেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বঙ্গবন্ধুর বড় মেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। ছবি: পিএমও
ভারতের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, “প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, মানবিধকার ও স্বাধীনতার দাবি আদায়ে বঙ্গবন্ধু একজন চ্যাম্পিয়ন। ভারতীয়দের কাছেও তিনি একজন বীর।
“বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথে, তার অনুপ্রেরণায় দুই দেশের সম্পর্কের শেকড় আজ অনেক গভীর পৌঁছে গেছে। তার নীতির পথ ধরেই গত কয়েক দশকে আমাদের দুই দেশের অংশীদারিত্ব যৌথ উন্নয়ন আর সমৃদ্ধির এক মজবুত ভিত্তিতে পৌঁছেছে।”
মহাত্মা গান্ধীর ১২৫তম জন্ম বার্ষিকীর বছর ১৯৯৫ সাল থেকে ভারত সরকার প্রতি বছর গান্ধী শান্তি পুরস্কার দিয়ে আসছে।
গান্ধীর অহিংস নীতি পালন এবং সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক পরিবর্তনে অবদানের জন্য এই পুরষ্কার দেওয়া হয়।
গান্ধী পুরস্কারের অর্থমূল্য ১ কোটি রুপি; সঙ্গে দেওয়া হয় মানপত্র ও ঐতিহ্যপূর্ণ হস্তশিল্প সামগ্রী।
দক্ষিণ আফ্রিকার নেতা নেলসন মান্ডেলা, আর্চবিশপ ডেসমন্ড টুটু, তানজানিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট জুলিয়াস নায়ার অতীতে গান্ধী শান্তি পুরস্কার পেয়েছেন।