বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যে দিন জান্তা ‘সশস্ত্র বাহিনী দিবস’ পালন করেছে সেই দিন, শনিবার মিয়ানমারজুড়ে নিরাপত্তা বাহিনী ৯০ জনেরও বেশি প্রতিবাদকারীকে হত্যা করেছে বলে স্থানীয় গণমাধ্যম ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।
“মিয়ানমারের সশস্ত্র বাহিনী দিবস কোনো সশস্ত্র বাহিনী দিবস না, এটা সেই দিনের মতো যেদিন তারা মানুষ হত্যা করে,” রয়টার্সকে বলেছেন রেস্টোরেইশন কাউন্সিল অব শান স্টেট বা শান স্টেট আর্মি-সাউথ (আরসিএসএস) এর চেয়ারম্যান জেনারেল ইয়দ সার্ক।
তিনি বলেন, “এটি গণতন্ত্র রক্ষার জন্যও নয়, এটা গণতন্ত্রের ক্ষতি করার জন্য। তারা যদি প্রতিবাদকারীদের দিকে গুলি ছোড়া ও মানুষকে শাসানো অব্যাহত রাখে, আমার মনে হয় সব জাতি গোষ্ঠীগুলো শুধু নিশ্চিল দাঁড়িয়ে থাকবে না।”
রয়টার্স জানিয়েছে, থাইল্যান্ডের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে তৎপর আরসিএসএস মিয়ানমারের বেশ কয়েকটি জাতির সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে একটি যারা সামরিক অভ্যুত্থানের নিন্দা করেছে এবং প্রতিবাদকারীদের সঙ্গে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। মিয়ানমারের বিশাল এলাকা প্রায় দুই ডজনের মতো জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর নিয়ন্ত্রণে আছে।
শনিবার সকালে একটি সামরিক প্যারেডে দেওয়া ভাষণে মিয়ানমারের জান্তা নেতা মিন অং হ্লাইং বলেছেন, সেনাবাহিনীর কাজ জনগণকে সুরক্ষা দেওয়া এবং গণতন্ত্রকে সমুন্নত রাখা। ১ ফেব্রুয়ারি সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখল করার পর নতুন নির্বাচনের যে প্রতিশ্রুতি তিনি দিয়েছিলেন এদিনও তার পুনরাবৃত্তি করেন।
গত নভেম্বরে অনুষ্ঠিত মিয়ানমারের সাধারণ নির্বাচনে অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসি (এনএলডি) বড় ধরনের জয় পেয়েছিল। কিন্তু এই জয়ের স্বীকৃতি না দিয়ে নির্বাচনের বড় ধরনের কারচুপি হয়েছে অভিযোগ করে সামরিক বাহিনী। পরে এই অভিযোগকে সামনে রেখেই ক্ষমতা দখল করে।
শনিবার নিহত বেসামরিকদের নিয়ে অভ্যুত্থানের পর থেকে মিয়ানমারে মোট মৃতের সংখ্যা ৪০০ ছাড়িয়ে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
জান্তাবিরোধী অনেক প্রতিবাদকারীই ফেডারেল সেনাবাহিনী গঠনের ডাক দিয়েছেন এবং ইয়দ সার্কও তা সমর্থন করেছেন।
তিনি বলেছেন, “জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর শত্রু এখন অভিন্ন তাই আমাদের হাতে হাত মেলানো দরকার আর তাদের ওপর আঘাত হানা দরকার যারা জনগণের ওপর আঘাত হানছে। আমাদের একত্র হওয়া দরকার।”
আরও পড়ুন: