তবে এই ঘটনায়
ধর্মভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামের ডাকা রোববারের সকাল-সন্ধ্যা হরতালে আনুষ্ঠানিক
সমর্থন জানায়নি দলটি।
শনিবার বিকালে স্থায়ী
কমিটির ভার্চুয়াল বৈঠকের পর এক সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম
আলমগীর এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
তিনি বলেন, “স্বাধীনতার
দিবসে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে মানুষ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে আগামী ২৯ মার্চ ঢাকাসহ
সকল মহানগরীতে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল এবং ৩০ মার্চ জেলা সদরে বিক্ষোভ মিছিল অথবা
সমাবেশের কর্মসূচি আমরা ঘোষণা করছি।”
শুক্রবার দুপুরে জুমার নামাজের
পর চট্টগ্রামের হাটহাজারিতে থানা ও বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হেফাজত কর্মীদের হামলার
পর সংঘর্ষে চারজন নিহত হন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে দুপুর
থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তাণ্ডব চালিয়ে রেলওয়ে স্টেশনে অগ্নিসংযোগ ও ভাংচুর করেছে কওমি
মাদ্রাসার ছাত্ররা।
আর রাজধানীতে মোদীবিরোধীরা
সংঘাতে জড়িয়েছে পুলিশ ও স্থানীয়দের আওয়ামী লীগ কর্মীদের সঙ্গে, তাতে আহত হয়েছেন অন্তত
৬০ জন।
এরপর সন্ধ্যায় এক সংবাদ
সম্মেলন থেকে শনিবার সারা দেশে বিক্ষোভ এবং রোববার সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ঘোষণা দেয়
হেফাজতে ইসলাম।
এই হরতালে সমর্থন আছে
কিনা জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “আমরা যেটা প্রতিবাদ করছি, বিক্ষোভ মিছিল
করছি সেটা হচ্ছে স্বাধীনতা দিবসের দিনে মানুষকে হত্যা করার প্রতিবাদে। খুব
স্পেসিফিক বলছি যে, প্রত্যেকটা সংগঠনের, প্রত্যেক নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার আছে
প্রতিবাদ করা বা তার মতপ্রকাশ করবার।
“সেই মতপ্রকাশ করার
ক্ষেত্রে যখন গুলি করা হয়েছে আমরা সেইটার প্রতিবাদ করছি, আমরা এর বিরুদ্ধে
কর্মসূচি ঘোষণা করছি।”
মির্জা ফখরুল বলেন, “গতকাল
শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে পুলিশে নির্বিচার লাঠিচার্জ, গুলিবর্ষণ এবং একই সঙ্গে আওয়ামী
সন্ত্রাসী বাহিনীর আক্রমণের প্রতিবাদে যে রক্ত ঝরেছে বায়তুল মোকাররম, চট্টগ্রাম ও
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তা নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের ৫০ বছরের ইতিহাসে জঘন্যতম একটি কলংকজনক
অধ্যায়।
“এই জঘন্য হত্যাকাণ্ডের
মধ্য দিয়ে সরকার তাদের ফ্যাসিবাদী চরিত্রের বর্হিপ্রকাশ ঘটাল। দীর্ঘদিন নিজেদের
অবৈধ ক্ষমতাকে ধরে রাখবার জন্য হত্যা, গুম, খুন, নির্যাতনের মাধ্যমে বিরোধী দল ও ভিন্নমতকে দমন করে চলছে। সকল রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে
কর্তৃত্ববাদী শাসন চিরস্থায়ী করতে অপচেষ্টা চালাচ্ছে, যা প্রকারান্তরে একদলীয়
শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চায়।”
এই ঘটনায় রোববার
জাতীয়তাবাদী যুব দল, জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল ও জাতীয়তাবাদী ছাত্র দল সারা দেশে
বিক্ষোভ করবে বলে তিনি জানান।
এই তিন সংগঠনের
নেতা-কর্মীরা শনিবারও বিক্ষোভ করতে গিয়ে বিভিন্ন স্থানে পুলিশি হামলা ও
গ্রেপ্তারের মুখে পড়েছে বলে অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল।
হবিগঞ্জে মনজুরুল
কিবরিয়া, আদনান ফারহাদ, গাজীপুরে শামীম মিসির,মাসুদ মোল্লা, বেলায়েত হোসেন,
মানিকগঞ্জের রাকিব হোসেন, ফরিদপুরে ইলিয়াস হোসেন, মুরাদ আহমেদ, হেমায়েত উল্লাহসহ
বিভিন্ন স্থানে নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তারে নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে তাদের মুক্তি
দাবি করেন।
হবিগঞ্জে পুলিশি হামলায়
গুলিবিদ্ধ জহিরুল হক শরীফসহ বিভিন্ন স্থানে আহত হওয়ার ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন
বিএনপি মহাসচিব।
এর আগে বিকাল ৩টায় দলের
ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল বৈঠক হয়।
বৈঠকে দলের মহাসচিব
ছাড়া স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা
আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ
চৌধুরী ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু উপস্থিত ছিলেন।