ক্যাটাগরি

রপ্তানির টিকা যথাসময়ে আসবে, আশা রাষ্ট্রপতির

শনিবার সন্ধ্যায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী
নরেন্দ্র মোদী সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এ প্রত্যাশার কথা তুলে ধরেন।

সন্ধ্যা ৭টায় মোদী বঙ্গভবনে পৌঁছালে
আবদুল হামিদ তাকে ফুল দিয়ে অভ্যর্থনা জানান। পরে ক্রেডেনশিয়াল হলে বসে বৈঠক করেন তারা।
সাক্ষাৎ শেষে পরিদর্শন বইতে স্বাক্ষর করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।

পরে রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল
আবেদীন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ও ভারতের
মধ্যে দ্বিপাক্ষিক যোগাযোগ বৃদ্ধিতে সন্তোষ প্রকাশ করে শুভেচ্ছা উপহার হিসেবে টিকা
প্রদান করায় রাষ্ট্রপতি ভারত সরকারকে ধন্যবাদ জানান। তিনি আশা করেন, বাণিজ্যিক ভিত্তিতে
যেসব টিকা আসার কথা তা যথাসময়ে আসবে।”

শুক্রবার দুপুরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী
মোদী উপহার হিসেবে ১২ লাখ ডোজ টিকা সঙ্গে নিয়ে আসেন। এ নিয়ে উপহার ও কেনা মিলেয়ে ভারতের
সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে মোট এক কোটি দুই লাখ ডোজ টিকা পেল বাংলাদেশ।

করোনাভাইরাসের প্রকোপ বাড়তে থাকায়
নিজস্ব চাহিদার কথা বিবেচনা করে ভারত সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার
টিকার রপ্তানি সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে বলে খবর এসেছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের
বরাত দিয়ে বিবিসি লিখেছে, সংক্রমণ যেহেতু বাড়ছে, সামনের দিনগুলোতে টিকার চাহিদাও বাড়বে।
ফলে ভারতের নিজেরই ওই টিকা লাগবে।

অক্সফোর্ডের টিকার তিন কোটি ডোজ কিনতে
গত ৫ নভেম্বর বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস এবং সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে চুক্তি করে
সরকার।

চুক্তি অনুযায়ী, প্রতি মাসে ৫০ লাখ
ডোজ টিকা আসার কথা রয়েছে। গত ২১ জানুয়ারি ২০ লাখ ডোজ টিকা আসে উপহার হিসেবে।

সরকারের অর্থে কেনা টিকার প্রথম চালানে
২৫ জানুয়ারি আসে ৫০ লাখ ডোজ, সর্বশেষ ২৩ ফেব্রুয়ারি আসে ২০ লাখ ডোজ টিকা।

ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে
প্রেস সচিব বলেন, প্রতিবেশী দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে ভারত সবসময় বিশ্বস্ত বন্ধু মনে করে।
বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রগতিতে ভারত সব সময় পাশে থাকবে।

জয়নাল বলেন, করোনাভাইরাস মহামারীর
মধ্যে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের
জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ায় নরেন্দ্র মোদীকে ধন্যবাদ জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন,
এই সফর বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে ‘যুগান্তকারী মাইলফলক’
হিসেবে থাকবে।

বঙ্গবন্ধুকে গান্ধী শান্তি পুরস্কার
দেওয়ায় ভারতের সরকার ও জনগণকে ধন্যবাদ জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, বিশ্ব মানবতা ও নিপীড়িত
জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় বঙ্গবন্ধুর আজীবন সংগ্রামের প্রতি শ্রদ্ধা এই
পুরস্কার।

মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারতের সহযোগিতা
ও সমর্থনের জন্য ভারতের সরকার ও জনগণকে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানান আবদুল হামিদ।

তিনি বলেন, “বর্তমান সরকার ভারতসহ
প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে অগ্রাধিকার দেয়। ভারত আমাদের নিকটতম
প্রতিবেশী এবং পারস্পরিক মর্যাদা, আস্থা ও বিশ্বাসের ভিত্তিতে একে অপরের বিশ্বস্ত বন্ধু।”

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন,
কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, ভারতের নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল, পররাষ্ট্র সচিব
হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা সেখানে ছিলেন।

বাংলাদেশের ৫০তম স্বাধীনতা দিবসে
শুক্রবার ঢাকায় পৌঁছান ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বিমানবন্দরের প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা তাকে স্বাগত জানান। ভিভিআইপি টার্মিনালে মোদীকে লাল গালিচা সংবর্ধনা দেওয়া
হয়।

২০২০ সালের মার্চে মুজিববর্ষের আয়োজনে
মোদীর উপস্থিত হওয়ার কথা থাকলেও করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে তা পিছিয়ে গিয়েছিল। মহামারী
শুরুর পর গত এক বছরের মধ্যে সেই বাংলাদেশেই তিনি প্রথম সফরে এলেন।

শুক্রবার বিকালে জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি
হিসাবে বক্তব্য দেন নরেন্দ্র মোদী।

সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন
কেন্দ্রে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে যৌথভাবে ‘বঙ্গবন্ধু-বাপু ডিজিটাল এক্সিবিশন’
উদ্বোধন করেন। সেখানে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা আয়োজিত রাষ্ট্রীয় ভোজেও যোগ দেন।

সফরের দ্বিতীয় দিন শনিবার সকালে সাতক্ষীরার
শ্যামনগরে যশোরেশ্বরী মন্দির পরিদর্শনে যান নরেন্দ্র মোদী। সেখান থেকে গোপালগঞ্জের
টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

পরে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলায়
মতুয়া সম্প্রদায়ের তীর্থস্থান ওড়াকান্দি মন্দির পরিদর্শন করে ঢাকায় ফেরেন মোদী।