জেলার দাকোপ, বটিয়াঘাটা, ডুমুরিয়া, রূপসা, পাইকগাছা ও কয়রা উপজেলার বিস্তীর্ণ ক্ষেতজুড়ে এখন যত দূর চোখ যায়, শুধু তরমুজের খেত চোখে পড়ে।
সম্প্রতি এসব ক্ষেতে গিয়ে দেখা গেছে, বেশির ভাগ জমিতে বীজ রোপণ করা হয়েছে। কোথাও কোথাও বাড়তে শুরু করেছে চারা। চাষিরা সার, পানি ও কীটনাশক ছিটানোয় ব্যস্ত সময় পার করছেন।

জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক হাফিজুর রহমান বলেন, “গত বছর জেলায় দুই হাজার হেক্টর জমিতে এক লাখ ২০ হাজার মেট্রিকটন তরমুজ হয়। চলতি বছর প্রায় চার হাজার হেক্টর জমিতে তরমুজের চাষ হচ্ছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে উৎপাদন ভাল হবে।”
বিভাগের মধ্যে খুলনা জেলায় সবচেয়ে বেশি তরমুজের চাষ হয় বলে তিনি জানান।

কৃষি কর্মকর্তা বলেন, জেলায় অনেক একফসলি ক্ষেতে এ বছর প্রথমবারের মত ড্রাগন, পাকিজা, বিগ ফ্যামিলি, হানি কুইন, বাদশা, ব্ল্যাক মাস্টার, ব্ল্যাকবেবি, কানিয়া ইত্যাদি জাতের তরমুজের চাষ হচ্ছে। বেশি হচ্ছে ড্রাগন ও পাকিজার চাষ।
তরমুজ চাষে ধানের চেয়ে কয়েক গুণ বেশি লাভ হয় বলে জানান দাকোপ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মেহেদী হাসান খান।
তিনি বলেন, আমন ধান চাষে সময় লাগে পাঁচ মাস। প্রতিবিঘার ধান বেচে সাধারণত আট-নয় হাজার টাকা লাভ হয়। সেখানে তরমুজ চাষে সময় লাগে সর্বোচ্চ আড়াই মাস। বিঘাপ্রতি তরমুজ চাষে ৭১ হাজার টাকা পর্যন্ত লাভের নজির রয়েছে।

দাকোপ ইউনিয়নের ছিটিবুনিয়া এলাকার দীপক রায় এ বছর পাঁচ বিঘা জমিতে তরমুজের চাষ করছেন।
তিনি বলেন, “এ এলাকার তরমুজ খুব মিষ্টি। বাজারে চাহিদাও ব্যাপক। গত বছর করোনাভাইরাসের কারণে দাম পাননি চাষিরা। এবার সেই ক্ষতি পুষিয়ে ওঠার আশা করছেন তারা। ভাল চারা গজিছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ফলন ভাল হবে।”
বটিয়াঘাটা উপজেলায় গত বছরের তুলনা এ বছর তিন গুণ বেশি জমিতে তরমুজের চাষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম।

গত বছর বেশি লাভ হওয়ায় এ বছর অনেক বেশি জমিতে তরমুজ চাষ করেছেন বলে জানান উপজেলার বারোআড়িয়া গ্রামের কৃষক মিরাজ শেখ, সাংকেমারি গ্রামের কৃষক প্রিয়ব্রত রায়, রায়পুর গ্রামের কৃষক মান্নান শেখ, সুখদাড়া গ্রামের কৃষক নিউটন বিশ্বাস ও সঞ্জয় মণ্ডল।
ডুমুরিয়া উপজেলার ছোটবন গ্রামের মৃত্যুঞ্জয় নামে এক চাষি বলেন, বেশ কয়েক বছর ধরে তরমুজ চাষ শুরু করছেন তিনি। ধারাবাহিকভাবে ফলন ভাল পাছেন।
“এবার দুই বিঘা জমিতে বীজ বুনেছি। অনেক চারা গজিয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ফলন ভাল হবে।”