শনিবার মিয়ানমারের স্বশস্ত্র বাহিনী দিবসে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে জাতীর উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে তিনি এই প্রতিশ্রুতি দেন বলে জানায় বিবিসি। তবে কবে নাগাদ নির্বাচন আয়োজন করবেন সে বিষয়ে এবারও তিনি কোনো ইঙ্গিত দেননি।
সরাসরি সম্প্রচারিত ওই ভাষণে সেনাপ্রধান হ্লাইং বলেন, ‘‘গণতন্ত্রের সুরক্ষায় মিয়ানমার সেনাবাহিনী পুরো জাতির সঙ্গে হাতে হাত রেখে কাজ করতে চায়।
‘‘যে দাবিতে নৃশংস কর্মকাণ্ড ঘটানো হচ্ছে, যার ফলে দেশের স্থিতিশীলতা এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা বিনষ্ট হচ্ছে সেটা সঠিক দাবি নয়।”
অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের কারণ ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত নেতা অং সান সু চি এবং তার দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির ‘বেআইনী কার্যকলাপের’ কারণে সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখল করেছে।
যার বিরুদ্ধে মিয়ানমারে টানা বিক্ষোভ চলছে, প্রতিদিনই সড়কে রক্ত ঝরছে। এখন পর্যন্ত পুলিশের গুলিতে ৩২০ জনের বেশি বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন বলে জানায় বিবিসি। শনিবার সকালেও চার বিক্ষোভকারীকে হত্যা করা হয়।
এদিকে, শুক্রবার মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে বিক্ষোভকারীদের হুমকি দিয়ে বলা হয়, বিক্ষোভ বন্ধ না করলে তারা ‘মাথায় ও পিঠে গুলিবিদ্ধ’ হওয়ার ঝুঁকিতে থাকবেন।
বলা হয়, ‘‘আগের ভয়ঙ্কর মৃত্যুগুলোর দুঃখগাথা থেকে জনগণের শিক্ষা নেওয়া উচিত। তাদের বোঝা উচিত তারা মাথা ও পিঠে গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছেন।”
তবে কী বিক্ষোভ দমন করতে বিক্ষোভকারীদের সরাসরি গুলি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে?
শনিবারের ভাষণে সেনাপ্রধান হ্লাইং এ বিষয়ে নির্দিষ্ট করে কিছু বলেননি।
এর আগে জান্তাবাহিনী প্রমাণ করার চেষ্টা করেছিল, পুলিশ নয় বরং বিক্ষোভের মধ্য থেকেই গুলি করা হচ্ছে এবং তাতে বিক্ষোভকারীরা হতাহত হচ্ছেন।
১৯৪৫ সালে জাপানের দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর প্রতিরোধ গড়ার দিনটি স্মরণে প্রতিবছর ২৭ মার্চ মিয়ানমারে সশস্ত্র বাহিনী দিবস পালন করা হয়।
সাধারণ বিদেশি অনেক কূটনীতিক মিয়ানমারের সশস্ত্র বাহিনী দিবসের কুচকাওয়াজে অংশ নেন। এবার তার ব্যত্যয় ঘটেছে। এবার শুধু রাশিয়ার উপ প্রতিরক্ষামন্ত্রী আলেকজান্ডার ফরমিন উপস্থিত ছিলেন।
গত ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারে সেনাঅভ্যুত্থানের প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন দেশটির সেনাবাহিনীর উপর নানা ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। কিন্তু রাশিয়া সেনাবাহিনীকে সহযোগিতা করার প্রস্তাব দিয়েছে।
শনিবারের ভাষণে হ্লাইং সে কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘‘রাশিয়া আমাদের প্রকৃত বন্ধু।”