শনিবার বাণিজ্যিক রাজধানী ইয়াংগনে ৪০, দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয়ে২৭ জনসহ মিয়ানমারে অন্তত ১১৪ বিক্ষোভকারীর মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম মিয়ানমার নাও।
সব মিলিয়ে দেশটিতে ১ ফেব্রুয়ারির অভ্যুত্থানের পর থেকে শুরু হওয়া সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন এখন পর্যন্ত প্রায় সাড়ে চারশ মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের সঙ্গে কথা বলা ৩ প্রত্যক্ষদর্শী ইয়াংগনের কাছে বাগো শহরে শনিবার নিহত ২০ বছর বয়সী শিক্ষার্থী থায়ে মং মংয়ের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠানে রোববার নিরাপত্তা বাহিনীর গুলির ঘটনায় হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেছে কিনা তাৎক্ষণিকভাবে তা নিশ্চিত করতে পারেননি ।
“যখন আমরা তার (নিহত) জন্য বিপ্লবের গান গাইছিলাম, তখনই নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা এসে আমাদের দিকে গুলি ছোড়ে। গুলির মুখে সেখানে থাকা সবাই পালিয়ে যায়, আমরাও পালাই” বলেছেন থায়ে মং মংয়ের শেষকৃত্যে যোগ দেওয়া আয়ে নামের এক নারী।
রোববার মিয়ানমারে পৃথক দুই গুলির ঘটনায় আরও দুই বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীদের পাশাপাশি জানিয়েছে স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো। রাতে নেপিডোর কাছে একটি এলাকায় বিক্ষোভকারীদের ওপর নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে একজনের মৃত্যু হয়, জানিয়েছে মিয়ানমার নাও।
রক্তাক্ত দিনে নিহতদের জন্য শোক করার দিন রোববার ইয়াংগন কিংবা মান্দালয়ে বড় আকারের কোনো সমাবেশের খবর পাওয়া যায়নি।
প্রত্যক্ষদর্শী এবং স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, শনিবার নিহতদের মধ্যে ১০ থেকে ১৬ বছর বয়সী অন্তত ৬টি শিশু-কিশোরও আছে।
সশস্ত্র বাহিনী দিবসে মিয়ানমারজুড়ে বিপুল প্রাণহানির ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে পশ্চিমা দেশগুলো।
শনিবার রাতে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী কারেন সশস্ত্র গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণে থাকা একটি গ্রামেও বিমান হামলা চালায়; এতে অন্তত ৩ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে কারেন পিস সাপোর্ট নেটওয়ার্ক।
রোববার উত্তরের হপাকান্ত এলাকায় কাচিন বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গেও তুমুল লড়াই হয়েছে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর। তাৎক্ষণিকভাবে র লড়াইয়ে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভকারীদের ওপর নিরাপত্তা বাহিনীর দমনাভিযান এবং বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে যুদ্ধ প্রসঙ্গে মন্তব্য চেয়ে মিয়ানমারের সামরিক জান্তার এক মুখপাত্রকে ফোন দেওয়া হলেও তিনি তা ধরেননি বলে জানিয়েছে রয়টার্স।