ক্যাটাগরি

‘আওয়ামী লীগের নেতা হতে চাওয়ায়’ রাজবংশী পরিবারে হামলার অভিযোগ

গত বৃহস্পতিবার রাতের সাঁথিয়া উপজেলার বড়গ্রাম হিন্দুপাড়ায় এই হামলা হয় বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়।

বিমল রাজবংশী বাদী হয়ে রোববার বিকালে সাঁথিয়া থানায় এই মামলা দায়ের করেন।

মামলায় সাঁথিয়া উপজেলার করমজা ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মোহাম্মদ আলী মুন্সীসহ ২৭ জনকে আসামি করা হয়েছে।

পুলিশ এখনও মোহাম্মদ আলী মুন্সীকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি বলে জানিয়েছে।

অভিযোগে বলা হয়, করমজা ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের আসন্ন সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দেন বড়গ্রাম হিন্দুপাড়ার জেলে সম্প্রদায়ের নেতা বিমল রাজবংশী। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে একই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলী মুন্সী ‘হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনকে’ হুমকি-ধামকি দিয়ে আসছিলেন।

বিমল রাজবংশী বিষয়টি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে জানালে বৃহস্পতিবার রাতে চেয়ারম্যান হিন্দু পাড়া পরিদর্শনে আসেন।

এই সময় ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলী মুন্সীর নেতৃত্বে শতাধিক সন্ত্রাসী চেয়ারম্যানের সামনেই হিন্দুপাড়ায় হামলা করে ভাঙচুর ও মারপিট করে বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়।

হামলায় বিমল রাজবংশীসহ তার পরিবারের সদস্যরা আহত হন বলেও অভিযোগ করা হয়।

এই হামলার কথা থানায় জানালে হামলাকারীরা হিন্দুপাড়ার লোকজনকে দেশছাড়া করা হবে বলেও হুমকি দেয় বলে মামলায় বলা হয়।

বিমল রাজবংশী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হতে চাওয়ায় মুন্সী মেম্বার আমাকে বলেন- হিন্দু লোককে নেতা বানানো হবে না। তুই প্রার্থিতা প্রত্যাহার কর।

“এরপর হঠাৎ একদিন আমাদের পাড়ায় কে বা কারা আগুন লাগিয়ে দেয়। বিষয়টি ইউপি চেয়ারম্যান হোসেন বাগচীকে জানালে তিনি ২৫ মার্চ রাতে আমাদের পাড়ায় পরিদর্শনে আসেন। এই সময় মুন্সী মেম্বার ও তার ভাইয়ের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা লাঠি, ফালা, হাসুয়া ও ছুরি নিয়ে হামলা চালায়। তারা আমাকে মারধর শুরু করে।”

এতে বাধা দিলে তাদের আত্মীয় জিতেন হালদার, রনজু হালদার, আকাশ হালদার, মন্টু হালদারসহ উপস্থিত সবাইকে মারপিট করে এবং অশ্লীল ভাষায় গালাগাল করে বলে বিমলের অভিযোগ।

এই সময় চেয়ারম্যান হোসেন আলী বাগচী হামলাকারীদের থামাতে গেলে তাকেও লাঞ্ছিত করা হয় বলে বিমল জানান।

করমজা ইউপি চেয়ারম্যান হোসেন বাগচী বলেন, “হিন্দু পরিবারের উপর হামলার সময় মুন্সী মেম্বারকে আমি বাধা দিয়েছি । কিন্তু তারা আমার কথার কর্ণপাত করেনি। হিন্দুদের আতঙ্কিত হবার কিছু নেই, আমরা তাদের পাশে আছি।”

সাঁথিয়া থানার ওসি আসিফ মোহাম্মদ সিদ্দিকুল ইসলাম বলেন, আসামি মুন্সী মেম্বারসহ পলাতক অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। হিন্দু সম্প্রদায়ের নিরপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

এদিকে হিন্দু পাড়ায় হামলার ঘটনায় গভীর ক্ষোভ ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সাঁথিয়া উপজেলা পূজা উৎযাপন পরিষদের সভাপতি সুশীল কুমার দাস।

তিনি বলেন, বড়গ্রাম হিন্দু পাড়ায় অর্ধশতাব্দীরও বেশি সময় ধরে হিন্দু জেলেদের বাস। তাদের রাজনীতির অধিকার রয়েছে।

“হিন্দুরা কেন নেতা হবে এমন মনোভাব পোষণ ও হামলা মারপিটের ঘটনায় আমরা স্তম্ভিত।  আমরা ঘটনার বিচার দাবি করছি।”