ক্যাথলিক খ্রিস্টানদের পবিত্র ইস্টার সপ্তাহের প্রথম দিন রোববার সুলাওয়েসি দ্বীপে হামলার এ ঘটনাটি ঘটেছে বলে পুলিশের বরাতে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
বিস্ফোরণের সময় প্রার্থনায় যোগ দিতে আসা বেশিরভাগ মানুষই গির্জার ভেতরে ছিলেন। এ ঘটনায় শুধু ওই দুই হামলাকারীই নিহত হয়েছেন।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গির্জা থেকে বের হয়ে আসা লোকজনই হামলাকারীদের মূল লক্ষ্য ছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে।
আত্মঘাতী দুই উগ্রবাদী ছাড়া হামলায় আর কেউ অংশ নেয়নি বলে স্থানীয় পুলিশ প্রাথমিকভাবে জানিয়েছিল।
ইন্দোনেশিয়ার জাতীয় পুলিশের মুখপাত্র আরগো ইউওনো জানিয়েছেন, এখন কর্তৃপক্ষ হামলাকারীরা কোন উগ্রবাদী নেটওয়ার্ক থেকে এসেছে এবং এই হামলা সাম্প্রতিক সময়ে সন্দেহভাজন জঙ্গিদের গ্রেপ্তারের সঙ্গে সম্পর্কিত কিনা তা খতিয়ে দেখছে।
জানুয়ারিতে মাকাসারের একটি জঙ্গি আস্তানায় ইন্দোনেশিয়ার সন্ত্রাসবাদবিরোধী একটি ইউনিটের অভিযানে দুই ব্যক্তি নিহত হয়। এরা ২০১৯ সালে ফিলিপিন্সের একটি গির্জায় বোমা হামলা চালিয়ে ২০ জনকে হত্যায় জড়িত হিসেবে পুলিশের সন্দেহের তালিকায় ছিলেন।
আক্রান্ত গির্জার কর্মকর্তা ফাদার উইলহেমাস তুলাক ইন্দোনেশীয় গণমাধ্যমকে জানান, সন্দেহভাজন এক বোমা হামলাকারী একটি মোটরবাইকে চেপে গির্জার মাঠে প্রবেশ করার চেষ্টা চালালে এক নিরাপত্তারক্ষী তাকে বাধা দেন।
আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর বলে জানিয়েছেন তিনি।
নিরাপত্তা ক্যামেরার ফুটেজে বিস্ফোরণের পর আগুনের শিখা, ধোঁয়া এবং রাস্তার মাঝে ধ্বংসস্তূপ পড়ে থাকতে দেখা গেছে।
এ হামলার পেছনে কারা জড়িত থাকতে পারে সে সম্পর্কে কোনো ধারণা দেয়নি পুলিশ। তাৎক্ষণিকভাবে কোনো গোষ্ঠীও এ হামলার দায় স্বীকার করেনি।
ইন্দোনেশিয়ার সন্ত্রাসবাদবিরোধী সংস্থার প্রধান রাফলি আমার এ ঘটনাকে ‘সন্ত্রাসী হামলা’ বলে অ্যাখ্যা দিয়েছেন।
মাকাসারের মেয়র ডেনি পোমান্তো বলেছেন, বোমার বিস্ফোরণ গির্জার পার্শ্ববর্তী প্রবেশপথে না হয়ে মূল প্রবেশপথে হলে হতাহতের সংখ্যা অনেক বেশি হতো।
ইন্দোনেশিয়ার জঙ্গি হামলাগুলোর মধ্যে ২০০২ সালে বালি দ্বীপে ঘটনাটিতেই সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি হয়েছিল। সেবার যে ২০২ জন নিহত হয়েছিল, তাদের বেশিরভাগই ছিলেন বিদেশি পর্যটক।
পরবর্তী কয়েক বছর দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী জঙ্গিবাদ মোকাবেলায় সফলতার স্বাক্ষর রাখলেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার এ দেশটিতে জঙ্গি সহিংসতার পুনরুত্থান দেখা যাচ্ছে।