বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সিদ্ধিরগঞ্জের মৌচাক এলাকায় সংঘর্ষ চলাকালে একজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে পুলিশ সুপার মো জায়েদুল আলম জানিয়েছেন।
আহত শাকিল (৩৫) মোল্লা মার্কেট এলাকার রিয়াদ ফার্নিচারের ম্যানেজার। তাকে ঢাকার একটি হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
রিয়াদ ফার্নিচারের মালিক নুরুল হক জানান, শাকিলের গ্রামের বাড়ি শরীয়তপুরে। সংঘর্ষের সময় পাশের গলিতে এক দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় তার পায়ে গুলি লাগে।
“সে আমার দোকানের ম্যানেজার। আমি একটা মিলে কাঠ চিড়াইতে গেছিলাম। সে আমার খবর নিতে যাওয়ার পথে ওই ঘটনা।”
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর দিনে গত শুক্রবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশ সফরের বিরোধিতায় ঢাকা, চট্টগ্রাম ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘাতে প্রাণহানির প্রতিবাদে রোববার সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা এই হরতাল করছে হেফাজতে ইসলাম।
কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক এ সংগঠনের নেতাকর্মীরা সকালে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে এবং রাস্তায় গাছের গুঁড়ি ফেলে ও টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখায়।
তারা সাইনবোর্ড থেকে শিমরাইল পর্যন্ত সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে আগুন জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করে রাখে। হেফাজতকর্মীদের লাঠিসোঁটা নিয়ে শিমরাইল, সানারপাড়, সাদ্দাম মার্কেট, মৌচাক এবং সাইনবোর্ড এলাকায় অবস্থান নিয়ে থাকতে দেখা যায়।
চিটাগাং রোড থেকে সাইনবোর্ড পর্যন্ত সড়কের দু’পাশে টায়ার জ্বালিয়ে বৈদ্যুতিক খুঁটি ফেলে সড়ক অবরোধ করে হরতালকারীরা। ফলে ওই সড়ক দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা কিছু বাস সাইনবোর্ড এলাকায় আটকা পড়ে। কাঁচপুর এলাকার থেকে অনেকে হেঁটে ঢাকার দিকে রওনা হতে দেখা যায়।
বেলা সাড়ে ১২টার দিকে পুলিশের সহায়তায় কিছু যানবাহন চিটাগাং রোডের দিকে যেতে চাইলে হরতাল সমর্থকরা বাধা দেয়। এ সময় বেশকিছু যানবাহন ভাঙচুরও্ করে তারা।
সায়েদাবাদ আন্তঃজেলা বাস মালিক সমিতির সভাপতি মো. আবুল কালাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সায়েদাবাদ থেকে গাড়িগুলো বের হলেও পার হতে পারছে না। যে বাসগুলো বের হয়েছে, সাইনবোর্ডের দিকে মাদ্রাসার ছাত্ররা সেগুলো আটকে দিয়েছে।”
বেলা ১১টার দিকে পুলিশ সাইনবোর্ড এলাকায় হরতালকারীদের সরিয়ে দিতে চাইলে সংঘর্ষে জড়ায় হেফাজতকর্মীরা। এ সময় পুলিশ হরতালকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ার শেল ছোড়ে।
দফায় দফায় সংঘর্ষে জেলার পুলিশ সুপারসহ অন্তত ৩০ জন আহত হন। ইত্তেফাকের ফটোসাংবাদিক আব্দুল গণিকে হেফাজতের কর্মীরা মারধর করে।
আব্দুল গণি বলেন, “সংঘর্ষের সময় ছবি তুলতে গেলে হেফাজতের নেতাকর্মীরা আমাদের তিনজনকে ধরে নিয়ে যায়। বাকিরা বের হয়ে আসতে পারলেও আমাকে মারধর করে।”
সংঘর্ষের সময় বিক্ষোভকারীরা দুটি ট্রাক,একটি বাস ও একটি মাইক্রোবাসে আগুন ধরিয়ে দেয় বলে পুলিশ সুপার জানান।
তিনি বলেন, “হরতালের সমর্থনে হেফাজতের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ করেছে। তাদের মহাসড়ক থেকে সরিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হচ্ছে।”
পুলিশের সঙ্গে র্যাব ও বিজিবি সদস্যদেরও এই এলাকায় টহল দিতে দেখা গেছে।