সোমবার দুপুরে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের
নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময়ে এ বিষয়ে কথা বলেন তিনি।
মন্ত্রী বলেন, “একটি সংগঠনের ব্যানারে ভারতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র
মোদীর আগমন উপলক্ষ্যে দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা হয়েছিল। সেটি এমন সময়ে করা হয়েছে
যখন আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজীব শতবর্ষ উদযাপন করছি।
“এমনকি ২৬শে মার্চ জনগণের সম্পত্তির উপর হামলা হয়েছে, জনগণের সম্পত্তি
জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। ভূমি অফিস, থানা, সংস্কৃতি-ঐতিহ্যের উপরও হামলা হয়েছে। এ সমস্ত
নৈরাজ্যকর কর্মকাণ্ডকে সমর্থন দিয়েছে বিএনপি-জামায়াত।”
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে
যোগ দিতে শুক্রবার ঢাকায় পৌঁছান ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তার এই সফরের
বিরোধিতা করে আসছিল হেফজতে ইসলামসহ কয়েকটি সংগঠন ও রাজনৈতিক দল।
সেদিন দুপুরে বায়তুল মোকাররম এলাকায় পুলিশ ও সরকারি দলের কর্মীদের
সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় একদল লোক। চট্টগ্রামের হাটহাজারিতে হেফাজতে ইসলামের কর্মীরা থানা
ও বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা করলে সংঘর্ষে চারজন নিহত হন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে শুক্র থেকে রবি- তিন দিন ব্যাপক তাণ্ডব চালায়
কওমি মাদ্রাসার ছাত্ররা। তারা রেলওয়ে স্টেশনসহ সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন স্থাপনায় অগ্নিসংযোগ
ও ভাংচুর করে। আইনশঙ্খলা বাহিনী ও স্থানীয়দের সঙ্গে সংঘাতে তিন দিনে অন্তত সাতজনের
মৃত্যু হয়।
রোববার হেফাজতের ডাকে সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতালের মধ্যেও দেশের
বিভিন্ন স্থানে সংঘাত-সহিংসতা হয়। সেই হরতালের পর নারায়ণগঞ্জে নয়টি বাসে আগুন দেওয়ার
পাশাপাশি রাস্তার ওপর দেয়াল তুলে দেওয়া হয়েছে জানিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, “এগুলোর পক্ষ
নিয়েছে বিএনপি এবং তাদের ঘরানার কিছু তথাকথিত বুদ্ধিজীবী।
“এতে এটিই প্রমাণিত হয়, ২০১৩, ২০১৪, ২০১৫ সালে যারা নৈরাজ্য সৃষ্টি
করেছিল, বিএনপি-জামায়াত এবং হেফাজতের ব্যানারে করা হয়েছিল। একই গোষ্ঠী আজ নৈরাজ্য
সৃষ্টি করেছে। এমন সময় এটি করা হচ্ছে, এতেই প্রমাণ হয়ে তারা আসলে আমাদের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বে
আঘাত হানতে চায় এবং হেনেছে।”
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলের সমালোচনা করে তথ্যমন্ত্রী বলেন,
“এর সাথে সুর মিলিয়ে মির্জা ফখরুল যখন বলেন, তারা সরকার পতনের আন্দোলনের ডাক দেবেন,
তার মানে এ সকল নৈরাজ্যগুলো তাদের পরামর্শ ও পৃষ্ঠপোষকতায় হয়েছে, এটিই প্রমাণিত হয়।”
সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হচ্ছে মন্তব্য
করে তিনি বলেন, “মোদীর আগমনের বিষয়টি একটি খোড়া যুক্তি হিসাবে দাঁড় করা হয়েছে। মির্জা
ফখরুলের বক্তব্যের মাধ্যমে সেটিই প্রমাণিত হয়।”
জনগণের জানমাল রক্ষা করতে’ সরকার ‘কঠোর ব্যবস্থা’ নেবে বলেও হুঁশিয়ার
করেন হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, “মির্জা ফখরুল সাহেবরা যে স্বপ্ন দেখছেন, সে স্বপ্ন
কখনও বাস্তবায়ন হবে না। ২০১৩ সালের বিএনপি ২০২১ সালের বিএনপি এক নয়; আর ২০১৩ সালের
আওয়ামী লীগ, ২০২১ সালের আওয়ামী লীগ এক নয়।”
নারায়ণগঞ্জ ও বায়তুল মোকাররম এলাকায় সাংবাদিকদের ওপর হামলার বিষয়ে
তথ্যমন্ত্রী বলেন, “পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় কোনো সাংবাদিকের ওপর হামলা দুঃখজনক,
অনভিপ্রেত, অগ্রহণযোগ্য এবং নিন্দনীয়।
“যারা সারাদেশে যারা নৈরাজ্য সৃষ্টি করেছে, তারাই এ হামলা করেছে।
বায়তুল মোকাররমে যদি কোনো ঘটনা ঘটে থাকে, আমরা অবশ্যই দলের পক্ষ থেকে খতিয়ে দেখব,
কেউ সাংবাদিকদের উপর হামলায় জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”