ক্যাটাগরি

জমজমাট লড়াইয়ের পর বৃষ্টিতে বন্ধ খেলা

বৃষ্টির হানা

ব্যাট-বলের তুমুল লড়াইয়ের মধ্যে বাগড়া দিল বৃষ্টি। খেলা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হলেন আম্পায়াররা। ১২.২ ওভারে নিউ জিল্যান্ডের রান তখন ৪ উইকেটে ১০২।

আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী, খুব বেশি লম্বা হওয়ার কথা নয় এই বিরতি।

নিউ জিল্যান্ডের একশ

ইয়াংকে হারানোর ওভারেই মেহেদিকে গ্যালারিতে পাঠিয়ে দলকে একশ পার করালেন গ্লেন ফিলিপস। ১২ ওভার শেষে নিউ জিল্যান্ড ৪ উইকেটে ১০১।

মেহেদির শিকার ইয়াং

মেহেদি হাসানকে ছক্কায় উড়িয়ে ইনিংসকে গতি দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন উইল ইয়াংকে। ওই ওভারেই তাকে ফিরিয়ে সেই চেষ্টা ব্যর্থ করে দিলেন মেহেদি।

ইয়াংকে বেরিয়ে আসতে দেখেই স্টাম্পের বাইরে একটু টেনে লেংথ বল করেন মেহেদি। ইয়াং পারেননি ব্যাটে-বলে করতে। স্টাম্পিংয়ের সুযোগ কাজে লাগাতে বেগ পেতে হয়নি লিটন দাসকে।

১৭ বলে ১৪ করে আউট ইয়াং। ১১.৪ ওভারে নিউ জিল্যান্ড ৪ উইকেটে ৯৪।

মাঝপথে নিউ জিল্যান্ড ৮১

জোড়া উইকেটের ধাক্কা সামলে নিউ জিল্যান্ডকে এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন উইল ইয়াং ও গ্লেন ফিলিপস। শুরুতে ছুটতে থাকা কিউইদের রানের কিছুটা গতিতে লাগাম পরাতে পেরেছে বাংলাদেশ।

১০ ওভার শেষে নিউ জিল্যান্ডের রান ৩ উইকেটে ৮১। ১৩ বলে ১৯ রানে খেলছেন ফিলিপস, ১০ বলে ৬ ইয়াং।

শরিফুলের প্রথম

তাসকিনের ক্যাচের রেশ না ফুরোতেই বাংলাদেশের আরেকটি বড় সাফল্য। দুর্দান্ত ফর্মে থাকা ডেভন কনওয়েকে ফিরিয়ে শরিফুল ইসলাম পেলেন প্রথম আন্তর্জাতিক উইকেটের স্বাদ।

প্রথম ওভারে বাড়তি বাউন্সে কনওয়েকে বেশ ভুগিয়ে নিজের দ্বিতীয় ওভারে শরিফুল পেলেন উইকেট। এখানেও অবদান খানিকটা বাড়তি বাউন্সের। কনওয়ের উড়িয়ে মারা শট একটু বাড়তি লাফিয়ে লাগে কনওয়ের ব্যাটের ওপরের দিকে। বল উঠে যায় আকাশে, মিড উইকেট বাউন্ডারিতে সহজ ক্যাচটি নেন মোহাম্মদ মিঠুন।

আগের ম্যাচে ৯২ রান করা কনওয়ে এবার শেষ ৯ বলে ১৫ রান করে। ৬.১ ওভারে নিউ জিল্যান্ড ৩ উইকেটে ৫৫।

তাসকিনের অসাধারণ ক্যাচ

যার বলে মুড়ি-মুড়কির মতো ক্যাচ পড়ে, তিনিই যেন দেখালেন ক্যাচ কীভাবে নিতে হয়। অসাধারণ ক্যাচে ফেরালেন বিপজ্জনক মার্টিন গাপটিলকে।

মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিনের বলটি ছিল মারার মতো, লেগ স্টাম্পে ফুল লেংথ। গাপটিল ব্যাট চালিয়ে দেন, বল লাগে ব্যাটের কানায়। শর্ট ফাইন লেগে তাসকিন বাঁ দিকে লাফিয়ে অবিশ্বাস্য ক্ষীপ্রতায় এক হাতে মুঠোবন্দি করেন বল। তিনি নিজেও বিশ্বাস করতে পারছিলেন না ক্যাচ হয়েছে। গাপটিল আউট হয়েও স্রেফ হাসছিলেন ক্যাচটি দেখে।

১৮ বলে ২১ করে আউট তাসকিন। নিউ জিল্যান্ড ৬ ওভারে ২ উইকেটে ৫৫।

অবশেষে সাফল্য

জীবন পাওয়ার পর তা কাজে লাগাতে পারলেন না অ্যালেন। তাকে ফিরিয়েই কিছুটা স্বস্তি পেলেন তাসকিন আহমেদ।

জীবন পাওয়া শটের মতোই অনেক উঁচুতে তুলেছিলেন অ্যালেন। স্কয়ার লেগে দারুণ ক্যাচ নেন মোহাম্মদ নাঈম শেখ। ১০ বলে ১৭ করে ফিরলেন অ্যালেন।

নিজের প্রথম ওভারে অ্যালেন ও গাপটিলের ব্যাটে দুটি ছক্কা হজম করে শেষ বলে সাফল্য পেলেন তাসকিন।

নিউ জিল্যান্ড ৪ ওভারে ১ উইকেটে ৩৬।

আরেকটি ক্যাচ হাতছাড়া

সফরের প্রতিটি ম্যাচের ধারাবাহিকতা ধরে রেখে আবারও ক্যাচ ছাড়ল বাংলাদেশ। দুর্ভাগা বোলার তাসকিন আহমেদ, যার বলেই সবচেয়ে বেশি সুযোগ হয়েছে হাতছাড়া। জীবন পেলেন ফিন অ্যালেন।

সুযোগটি অবশ্য ছিল অনেক কঠিন। তাসকিনের প্রথম বলেই ৯৫ মিটার লম্বা একটি ছক্কা মেরে পরের বলেই ডাউন দা উইকেট এসে উড়িয়ে মারেন অ্যালেন। বল উঠে যায় অনেক অনেক উঁচুতে, রাতের আকাশে মুহূর্তের জন্য হারিয়েও যায় যেন। মিড অন থেকে মাহমুদউল্লাহ বলের নিচে যান ঠিকই, কিন্তু পারেননি হাতে জমাতে।

১৫ রানে রক্ষা পেলেন অ্যালেন।

রিভার্স সুইপে প্রথম রান

প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ‘গোল্ডেন ডাক।’ দ্বিতীয় ম্যাচে প্রথম দুই বলে রান নেই। নার্ভাস ফিন অ্যালেন? ২১ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান উত্তর দিলেন পরের বলেই। রিভার্স সুইপ করে চার!

বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদের বলটি রিভার্স সুইপ করার মতো ততটা ফুল লেংথ ছিল না। আগে থেকেই ঠিক করে রাখা শটে তবু টাইমিং ঠিকঠাক করেন অ্যালেন, বল পাঠান গ্যাপে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথম রান রিভার্স সুইপে!

আড়াই বছর পর মিল্ন

বাংলাদেশের মতো নিউ জিল্যান্ডের একাদশেও আগের ম্যাচ থেকে পরিবর্তন কেবল একটি এবং সেটি পেস আক্রমণেই। আগের ম্যাচে দুর্দান্ত বোলিং করা ফাস্ট বোলার লকি ফার্গুসন পেয়েছেন বিশ্রাম, তার জায়গায় খেলছেন আরেক গতি তারকা অ্যাডাম মিল্ন।

চোট-আঘাতের সঙ্গে অনেক লড়াইয়ে জিতে এই সিরিজ দিয়ে দলে ফিরেছেন মিল্ন। এবার পেলেন ম্যাচ খেলার সুযোগ। সবশেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন তিনি ২০১৮ সালের ২ নভেম্বর, পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে।

নিউ জিল্যান্ড একাদশ:  মার্টিন গাপটিল, ফিন অ্যালেন, ডেভন কনওয়ে, উইল ইয়াং, গ্লেন ফিলিপস, মার্ক চাপম্যান, ড্যারিল মিচেল, টিম সাউদি (অধিনায়ক), ইশ সোধি, হামিশ বেনেট, অ্যাডাম মিল্ন।

একাদশে তাসকিন

প্রথম টি-টোয়েন্টি থেকে বাংলাদেশের একাদশে পরিবর্তন আছে একটি। বাঁহাতি পেসার মুস্তাফিজুর রহমানকে বিশ্রাম দিয়ে নেওয়া হয়েছে তাসকিন আহমেদকে। আগের ম্যাচে ৪ ম্যাচে ৪৮ রান দিয়ে উইকেটশূন্য ছিলেন মুস্তাফিজ।

তিন বছরের বেশি সময় পর টি-টোয়েন্টি খেলবেন তাসকিন। সবশেষটি খেলেছেন ২০১৮ সালের ১০ মার্চ শ্রীলঙ্কায় নিদাহাস ট্রফিতে। 

কাঁধ ও আঙুলের চোটের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে না খেলা মুশফিকুর রহিম নেই এই ম্যাচেও। সৌম্য সরকার পেয়েছেন আরেকটি সুযোগ।

বাংলাদেশ একাদশ: লিটন দাস, মোহাম্মদ নাঈম শেখ, সৌম্য সরকার, মোহাম্মদ মিঠুন, মাহমুদউল্লাহ (অধিনায়ক), আফিফ হোসেন, মেহেদি হাসান, মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন, তাসকিন আহমেদ, নাসুম আহমেদ, শরিফুল ইসলাম।

বোলিংয়ে বাংলাদেশ

প্রথম টি-টোয়েন্টিতে টস হেরে বোলিং পেয়েছিল বাংলাদেশ। এবার মাহমুদউল্লাহ টস বোলিং নিলেন টস জিতে।

টসের সময় অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ বললেন, এই সিদ্ধান্তের মূল কারণ আবহাওয়ার পূর্বাভাস। টসের সময়ও আকাশ ছিল বেশ মেঘলা। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিও ছিল বাতাসে। এজন্যই পরে ব্যাটিংয়ের পথ বেছে নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।

নিউ জিল্যান্ড অধিনায়ক টিম সাউদিও জানান, তার ভাবনাও ছিল একইরকম।

জয়ের আশায় আরেকটি ম্যাচ

অন্তত একটি জয়ের আশায় এবার নিউ জিল্যান্ড সফরে গেছে বাংলাদেশ দল। আশা পূরণ হয়নি এখনও। তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের পর টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচেও পেরে ওঠেনি দল। নিউ জিল্যান্ডে জয় খরা গিয়ে ঠেকেছে টানা ৩০ আন্তর্জাতিক ম্যাচে। এবার আরেকটি ম্যাচে বাংলাদেশ দল মাঠে নামছে বহু কাঙ্ক্ষিত সেই জয়ের আশায়।