ক্যাটাগরি

দরিদ্র দেশগুলোর জন্য বানানো ভ্যাকসিনের বড় অংশ ভারতেই থাকছে

বিশ্বের দরিদ্র দেশগুলো যখন টিকার জন্য দিন গুনলেও চলতি মাসেই নয়া দিল্লি ভ্যাকসিনের বড় চালান রপ্তানির ক্ষেত্রে দেরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

কোভ্যাক্স কর্মসূচির আওতায় যে টিকা সরবরাহ করার কথা, তার বড় অংশ উৎপাদক দেশই রেখে দিচ্ছে- এ তথ্য জানাজানি হওয়ার পর তা ভারত ও কোভ্যাক্সের ওপর চাপ বাড়াতে পারে বলেও অনেকে মনে করছেন।

ইউনিসেফের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, ভারত এর মধ্যেই কোভ্যাক্সের কাছ থেকে এক কোটি ডোজ টিকা পেয়েছে; এই সংখ্যা যে কোনো দেশের তুলনায় অনেক অনেক বেশি বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

ভারতের পর কোভ্যাক্সের কাছ থেকে সবচেয়ে বেশি টিকা পেয়েছে নাইজেরিয়া, ৪০ লাখ ডোজ। অথচ কোভিড-১৯ এর টিকা পেতে এ কর্মসূচির দিকে তাকিয়ে থাকা অনেক দরিদ্র দেশই এখন পর্যন্ত কোভ্যাক্স থেকে হয় সামান্য পরিমাণ পেয়েছে, নাহলে কোনো ডোজই পায়নি।

প্রধানত দরিদ্র দেশের মানুষদের টিকা দেওয়ার লক্ষ্যে গঠিত উদ্যোগ কোভ্যাক্স ভারতের সেরাম ইনস্টিাটউট থেকে অ্যাস্ট্রাজেনেকার কয়েক কোটি টিকা কেনার ক্রয়াদেশ দিয়েছিল।

তাদের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী এপ্রিলের মধ্যে বিভিন্ন দেশে ৫ কোটি টিকা সরবরাহের কথা থাকলেও ভারত টিকা রপ্তানিতে বিধিনিষেধ দেওয়ায় ভ্যাকসিনের চালান পৌছাতে আরও দেরি হবে বলেই মনে করা হচ্ছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও), বিভিন্ন দেশের জোট গ্যাভি, নানান দাতা সংস্থা ও কোম্পানির নেতৃত্বে গঠিত কোভ্যাক্স চলতি বছরের মধ্যে ভ্যাকসিনের ২০০ কোটি ডোজ সরবরাহের লক্ষ্য ঠিক করেছিল।

তবে কর্মসূচিটি শুরু থেকেই বেশ ধীরলয়ে চলছে। ধনী দেশগুলো টিকার প্রথম দিককার ডোজগুলো গোপনে মজুদ করেছে বলে কর্মকর্তারা অভিযোগও করছেন।

যে সূত্রটি রয়টার্সকে ভারতে কোভ্যাক্সের টিকার বড় অংশ থাকছে বলে জানিয়েছে, বিষয়ের সঙ্গে সরাসরি সংশ্লিষ্টতা থাকলেও তিনি প্রকাশ্যে এ বিষয়ে কথা বলার দায়িত্বপ্রাপ্ত নন।

এ কর্মকর্তা বলেছেন, কোভ্যাক্স যখন ভ্যাকসিনের জরুরি ব্যবহারে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমতির অপেক্ষায় ছিল, তখনই ভারত তাদের ১ কোটি ডোজ রেখে দিয়েছিল।

ডব্লিউএইচও’র অনুমোদন মেলে মধ্য ফেব্রুয়ারিতে, আর ভারত ভ্যাকসিনটিকে নিজেদের দেশে ব্যবহারের অনুমতি দেয় জানুয়ারিতে; ওই মাসের ১৬ তারিখ থেকেই দেশটিতে কোভিড-১৯ টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়।

এ প্রসঙ্গে ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, গ্যাভি ও ইউনিসেফের মন্তব্য চাওয়া হলেও তাৎক্ষণিকভাবে তারা সাড়া দেননি বলে জানিয়েছে রয়টার্স।

বিশ্বের সবচেয়ে বড় ভ্যাকসিন উৎপাদক দেশ ভারতে এখন পর্যন্ত এক কোটি ২০ লাখ মানুষের দেহে প্রাণঘাতী কোভিড-১৯ শনাক্ত হয়েছে; বিশ্বের মধ্যে এরচেয়ে বেশি শনাক্ত হয়েছে কেবল ব্রাজিল ও যুক্তরাষ্ট্রে।

দক্ষিণ এশিয়ার এ দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৬ কোটি ৪ লাখের বেশি মানুষকে টিকা দেওয়া হয়েছে; ভারত বিভিন্ন দেশে ৪ কোটি ৪০ লাখ ডোজ রপ্তানিও করেছে। দেশের ভেতর টিকাদান কর্মসূচির গতি বাড়াতে ভারতের সরকারের ওপর জনগণের চাপও প্রবল।