বাংলাদেশের ব্যর্থতার আরেকটি ম্যাচ
ধারাবাহিকতা ধরে রেখে যথারীতি আরেকটি ম্যাচ হারল বাংলাদেশ। দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ২৮ রানের জয়ে নিউ জিল্যান্ড নিশ্চিত করল সিরিজ জয়।
সৌম্য সরকারের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে কিছুটা রোমাঞ্চ, বাংলাদেশের প্রাপ্তি ওটুকুই। সত্যিকার অর্থে জয়ের সম্ভাবনা সেভাবে কখনও জাগাতে পারেনি দল। সৌম্যর বিদায়ের পর রানের গতি ধরে রাখতে পারেননি কোনো ব্যাটসম্যান।
খেলা যখন ৯৬ বলের, নাঈমের ৩৫ বলে ৩৮ রানের ইনিংসও দলের জন্য খুব একটা সহায়ক হয়নি।
এই সিরিজ জয় দিয়ে চলতি গ্রীষ্মে নিজেদের চারটি টি-টোয়ন্টি সিরিজই জিতল কিউইরা। আগের তিনটি জয় ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ, পাকিস্তান ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
নিউ জিল্যান্ড: ১৭.৫ ওভারে ১৭৩/৫ (গাপটিল ২১, অ্যালেন ১৭, কনওয়ে ১৫, ইয়াং ১৪, ফিলিপস ৫৮*, চাপম্যান ৭, মিচেল ৩৪*; নাসুম ৪-০-২৫-০, সাইফ ৩-০-৩৫-১, তাসকিন ৩.৫-০-৪৯-১, শরিফুল ৩-০-১৬-১, মেহেদি ৪-০-৪৫-২)।
বাংলাদেশ: (লক্ষ্য ১৬ ওভারে ১৭১) ১৭ ওভারে ১৪২/৭ (নাঈম ৩৮, লিটন ৬, সৌম্য ৫১, মাহমুদউল্লাহ ২১, আফিফ ২, মিঠুন ১, মেহেদি ১২*, সাইফ ৩, তাসকিন ০*; সাউদি ৪-০-২১-২, বেনেট ৪-০-৩১-২, মিল্ন ৩-০-৩৪-২, সোধি ৩-০-৩৪-০, ফিলিপস ৩-০-২০-১)।
সাউদির আরেকটি
নিজের শেষ ওভারে বোলিংয়ে এসে টিম সাউদি পেলেন দ্বিতীয় উইকেটের দেখা। স্কুপ করার চেষ্টায় ঠিকমতো টাইমিং করতে পারেননি মোহাম্মদ মিঠুন, উইকেটের পেছনে ক্যাচ নেন ডেভন কনওয়ে।
২ বলে ১ রান করে আউট মিঠুন। বাংলাদেশ ১৪.১ ওভারে ৬ উইকেটে ১২৬।
মিল্নের জোড়া শিকার
মাহমুদউল্লাহকে ফেরানোর পর ওই ওভারে আফিফ হোসেনকেও বোল্ড করে দিলেন অ্যাডাম মিল্ন। লেংথ বল আড়াআড়ি ব্যাটে খেলে লাইন মিস করেন আফিফ, বল ছোবল দেয় স্টাম্পে।
৪ বলে ২ রান করে আউট আফিফ। বাংলাদেশ ১৩.৫ ওভারে ৫ উইকেটে ১২৩।
পারলেন না মাহমুদউল্লাহ
দলকে জেতাতে যেমন দরকার ছিল, তেমন ঝড়ো কোনো ইনিংস খেলতে পারলেন না মাহমুদউল্লাহ। অ্যাডাম মিল্নের কাটারে স্কুপ করতে গিয়ে বাংলাদেশ অধিনায়ক বোল্ড ১২ বলে ২১ রান করে।
১৩.৩ ওভারে বাংলাদেশ ৪ উইকেটে ১২৩।
নাঈমের বিদায়
পরিস্থিতির দাবির সঙ্গে মোটেও তাল মেলাতে পারছিলেন না মোহাম্মদ নাঈম শেখ। তার ইনিংস শেষ হলো ৩৫ বলে ৩৮ রান করে। ফিলিপসকে বেরিয়ে এসে উড়িয়ে মারলেও টাইমিং করতে পারেননি বাঁহাতি ব্যাটসম্যান, লং অফ সীমানা থেকে অনেকটা ভেতরেই সহজ ক্যাচ নেন মার্টিন গাপটিল।
১২.১ ওভারে বাংলাদেশ ৩ উইকেটে ১১০।
থামল সৌম্যর ঝড়
ফিফটি স্পর্শ করার পর আর বেশিক্ষণ টিকতে পারলেন না সৌম্য সরকার। নতুন স্পেলে ফেরা টিম সাউদির প্রথম বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ধরা পড়লেন লং অন সীমানায়।
২৭ বলে ৫১ রান করে ফিরলেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। ১০.১ ওভারে বাংলাদেশ ২ উইকেটে ৯৪, জয়ের জন্য ৩৫ বলে প্রয়োজন ৭৬ রান।
সৌম্যর ঝড়ো ফিফটি
অনিয়মিত অফ স্পিনার ফিলিপসের শর্ট বলে পুল করে বাউন্ডারি মেরে সৌম্য ফিফটি স্পর্শ করলেন ২৫ বলে।
৫২ টি-টোয়েন্টিতে এটি তার মাত্র তৃতীয় ফিফটি।
ইনিংসটির এক পর্যায়ে অবশ্য দ্রুততম ফিফটির রেকর্ডের সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন সৌম্য। বাংলাদেশের হয়ে দ্রুততম ফিফটি ২০০৭ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে মোহাম্মদ আশরাফুলের। সৌম্যর রান ছিল ১৫ বলে ৪০। পরে তাকে কিছুটা আটকে রাখতে পারেন কিউই বোলাররা।
নাঈমের রক্ষা
ইশ সোদির বলে স্লগ করতে গিয়ে টাইমিং ঠিকমতো করতে পারেননি নাঈম। বল উঠে যায় আকাসে। মিড উইকেট সীমানা থেকে ছুটে এসে সামনের দিকে ফুল লেংথ ডাইভে ক্যাচ নেওয়ার চেষ্টা করেন ফিলিপস। কিন্তু বল হাতে স্পর্শ করলেও জমাতে পারেননি মুঠোয়।
ফিলিপসের অসাধারণ প্রচেষ্টার পরও ২৫ রানে বেঁচে গেলেন নাঈম।
পাওয়ার প্লে শেষে তাণ্ডব
সৌম্য সরকারের ঝড়ো ব্যাটিংয়ের সৌজন্যে রানের গতি নাটকীয়ভাবে বাড়িয়েছে বাংলাদেশ। ৫ ওভার শেষে রান ছিল ১ উইকেটে ৩৭। পরের দুই ওভারেই আসে ৩৯ রান! সৌম্য খেলছেন ১৫ বলে ৪০ রান নিয়ে।
বাংলাদেশের পঞ্চাশ
পাওয়ার প্লে শেষে ঝড় তুললেন সৌম্য সরকার। লেগ স্পিনার ইশ সোধিকে রিভার্স সুইপে বাউন্ডারি মারার পর টানা দুই বলে ওড়ালেন বিশাল দুটি ছক্কায়।
৬ ওভার শেষে বাংলাদেশ ১ উইকেটে ৫৬। সৌম্য ১২ বলে অপরাজিত ২৯। নাঈম ১৯ বলে ১৯।
পাওয়ার প্লেতে জোর নেই
১৬ ওভারে ১৭০ রান তাড়া করতে যতটা প্রয়োজন ছিল, ততটা উড়ন্ত সূচনা করতে পারেনি বাংলাদেশ। পাওয়ার প্লের ৫ ওভার শেষে রান ১ উইকেটে ৩৭।
নাঈম তিনটি দারুণ চার মারলেও ১৭ বলে করেছেন কেবল ১৮ রান। সৌম্য খেলছেন ৮ বলে ১২ রান করে।
লিটনের বিদায়
লক্ষ্য নতুন করে জেনে খেলা শুরু হওয়ার পরপরই লিটন দাসকে হারাল বাংলাদেশ। ৫ বলে ৬ রান করে কিদায় নিলেন লিটন।
হামিশ বেনেটের লেংথ বেল সজোরে পুল করেছিলেন লিটন। কিন্তু বল রাখতে পারেননি নিচে, পারেননি সীমানা ছাড়া করতে। স্কয়ার লেগ থেকে সামনে এগিয়ে দারুণ ক্যাচ নেন গ্লেন ফিলিপস।
২ ওভারে বাংলাদেশ ১ উইকেটে ১৩।
লক্ষ্য নিয়ে ধোঁয়াশায় বন্ধ খেলা
বাংলাদেশ ইনিংস শুরুর আগে বাংলাদেশ দলের মিডিয়া ম্যানেজার জানালেন, ১৬ ওভারে বাংলাদেশের লক্ষ্য ১৪৮। খেলা যখন শুরু হলো, তখন টিভি ধারাভাষ্যকাররা বলছিলেন, ১৬ ওভারে ১৪৮ রানের লক্ষ্য তারা শুনতে পাচ্ছেন, কিন্তু নিশ্চিত নন।
বাংলাদেশের ইনিংস ১.৩ ওভার হওয়ার পর আবার বন্ধ খেলা, ম্যাচ রেফারির কক্ষে দেখা গেল তৎপরতা। বেশ কিছুক্ষণ বন্ধ থাকার পর আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হলো, ১৬ ওভারে বাংলাদেশের লক্ষ্য ১৭০। পরে আবার সেটি করা হয় ১৭১।
খরুচে তাসকিন, উজ্জ্বল শরিফুল
তিন বছর পর টি-টোয়েন্টি খেলতে নেমে খুব সুখকর অভিজ্ঞতা হলো না তাসকিন আহমেদের। দলকে প্রথম উইকেট এনে দিয়েছেন, একটি দুর্দান্ত ক্যাচ নিয়েছেন, গতিময় দারুণ কিছু ডেলিভারি করেছেন। কিন্তু ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে না পারায় রানও গুনেছেন প্রচুর।
৩.৫ ওভারে তাসকিন রান দিয়েছেন ৪৯। টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে এটিই তার সবচেয়ে খরুচে বোলিং। এর আগে সর্বোচ্চ ছিল ৩ ওভারে ৪১, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ২০১৭ সালে।
বাংলাদেশের সেরা বোলার এ দিন নিঃসন্দেহে ছিলেন শরিফুল ইসলাম। আহের ম্যাচে অভিষেকে ৪ ওভারে ৫০ রান দেওয়ার দুঃস্বপ্ন পেছনে ফেলে তরুণ বাঁহাতি পেসার এবার ৩ ওভারে ১৬ রান দিয়ে নেন ১ উইকেট।
বৃষ্টিতেই শেষ কিউইদের ইনিংস
বৃষ্টিতে ভেসে গেল নিউ জিল্যান্ড ইনিংসের শেষ ২.১ ওভার। আর ব্যাটিংয়ে নামার সুযোগ নেই তাদের। ডাকওয়ার্থ-লুইস-স্টার্ন পদ্ধতিতে বাংলাদেশের লক্ষ্য ১৬ ওভারে ১৭১।
বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ হওয়ার সময় নিউ জিল্যান্ডের রান ছিল ১৭.৫ ওভারে ৫ উইকেটে ১৭৩। ৩১ বলে ৫৮ রানে অপরাজিত ছিলেন গ্লেন ফিলিপস, ১৬ বলে ৩৪ মিচেল।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
নিউ জিল্যান্ড: ১৭.৫ ওভারে ১৭৩/৫ (গাপটিল ২১, অ্যালেন ১৭, কনওয়ে ১৫, ইয়াং ১৪, ফিলিপস ৫৮*, চাপম্যান ৭, মিচেল ৩৪*; নাসুম ৪-০-২৫-০, সাইফ ৩-০-৩৫-১, তাসকিন ৩.৫-০-৪৯-১, শরিফুল ৩-০-১৬-১, মেহেদি ৪-০-৪৫-২)।
আবার বৃষ্টি
নিউ জিল্যান্ডের রানের জোয়ারের মধ্যেই আবার বৃষ্টির হানা। আরেক দফায় মাঠ ছাড়তে বাধ্য হলেন ক্রিকেটাররা।
১৭.৫ ওভারে নিউ জিল্যান্ডের রান হয়ে গেছে ৫ উইকেটে ১৭৩।
৩১ বলে ৫৮ রান নিয়ে খেলছেন গ্লেন ফিলিপস, ১৬ বলে ৩৪ ড্যারিল মিচেল। জুটির রান ২৭ বলে ৬২!
জুটির ফিফটি
শেষ দিকে রানের গতি বাড়িয়ে দলকে এগিয়ে নিচ্ছেন গ্লেন ফিলিপস ও ড্যারিল মিচেল। ষষ্ঠ উইকেটে দুজনের জুটির ফিফটি এসেছে ২৩ বলেই। ফিলিপসের রান তাতে ২৬, মিচেলের ২২।
ফিলিপসের ফিফটি
মেহেদির ফুল টসকে কাজে লাগিয়ে একটি ছক্কা, পরের বলে দুই রান নিয়ে গ্লেন ফিলিপস পৌঁছে গেলেন ফিফটিতে।
২৭ বলে ছুঁলেন ফিফটি, টি-টোয়েন্টিতে তার দ্বিতীয় ফিফটি। সেঞ্চুরিও আছে একটি।
মেহেদির দ্বিতীয়
বৃষ্টি শেষে খেলা শুরু হওয়ার পর বেশ দ্রুতই বাংলাদেশকে উইকেট এনে দিলেন মেহেদি হাসান। নিজের বলে ক্যাচ নিয়ে এই অফ স্পিনার ফেরালেন মার্ক চাপম্যানকে।
মেহেদির ঝুলিয়ে দেওয়া বলে একটু বেরিয়ে এসে মিড অফ বা কাভার দিয়ে খেলতে চেয়েছিলেন বাঁহাতি চাপম্যান। কিন্তু বল ছিল অনেক ধীরগতির, টাইমিং তাই হয়নি ঠিকমতো। সহজ ক্যাচ যায় বোলারের কাছেই।
৮ বলে ৭ করে আউট চাপম্যান। ১৩.৪ ওভারে নিউ জিল্যান্ড ৫ উইকেটে ১১১।
খেলা শুরু
বৃষ্টির কারণে ২৫ মিনিট বন্ধ থাকার পর আবার শুরু লড়াই।
বৃষ্টির হানা
ব্যাট-বলের তুমুল লড়াইয়ের মধ্যে বাগড়া দিল বৃষ্টি। খেলা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হলেন আম্পায়াররা। ১২.২ ওভারে নিউ জিল্যান্ডের রান তখন ৪ উইকেটে ১০২।
আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী, খুব বেশি লম্বা হওয়ার কথা নয় এই বিরতি।
নিউ জিল্যান্ডের একশ
ইয়াংকে হারানোর ওভারেই মেহেদিকে গ্যালারিতে পাঠিয়ে দলকে একশ পার করালেন গ্লেন ফিলিপস। ১২ ওভার শেষে নিউ জিল্যান্ড ৪ উইকেটে ১০১।
মেহেদির শিকার ইয়াং
মেহেদি হাসানকে ছক্কায় উড়িয়ে ইনিংসকে গতি দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন উইল ইয়াংকে। ওই ওভারেই তাকে ফিরিয়ে সেই চেষ্টা ব্যর্থ করে দিলেন মেহেদি।
ইয়াংকে বেরিয়ে আসতে দেখেই স্টাম্পের বাইরে একটু টেনে লেংথ বল করেন মেহেদি। ইয়াং পারেননি ব্যাটে-বলে করতে। স্টাম্পিংয়ের সুযোগ কাজে লাগাতে বেগ পেতে হয়নি লিটন দাসকে।
১৭ বলে ১৪ করে আউট ইয়াং। ১১.৪ ওভারে নিউ জিল্যান্ড ৪ উইকেটে ৯৪।
মাঝপথে নিউ জিল্যান্ড ৮১
জোড়া উইকেটের ধাক্কা সামলে নিউ জিল্যান্ডকে এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন উইল ইয়াং ও গ্লেন ফিলিপস। শুরুতে ছুটতে থাকা কিউইদের রানের কিছুটা গতিতে লাগাম পরাতে পেরেছে বাংলাদেশ।
১০ ওভার শেষে নিউ জিল্যান্ডের রান ৩ উইকেটে ৮১। ১৩ বলে ১৯ রানে খেলছেন ফিলিপস, ১০ বলে ৬ ইয়াং।
শরিফুলের প্রথম
তাসকিনের ক্যাচের রেশ না ফুরোতেই বাংলাদেশের আরেকটি বড় সাফল্য। দুর্দান্ত ফর্মে থাকা ডেভন কনওয়েকে ফিরিয়ে শরিফুল ইসলাম পেলেন প্রথম আন্তর্জাতিক উইকেটের স্বাদ।
প্রথম ওভারে বাড়তি বাউন্সে কনওয়েকে বেশ ভুগিয়ে নিজের দ্বিতীয় ওভারে শরিফুল পেলেন উইকেট। এখানেও অবদান খানিকটা বাড়তি বাউন্সের। কনওয়ের উড়িয়ে মারা শট একটু বাড়তি লাফিয়ে লাগে কনওয়ের ব্যাটের ওপরের দিকে। বল উঠে যায় আকাশে, মিড উইকেট বাউন্ডারিতে সহজ ক্যাচটি নেন মোহাম্মদ মিঠুন।
আগের ম্যাচে ৯২ রান করা কনওয়ে এবার শেষ ৯ বলে ১৫ রান করে। ৬.১ ওভারে নিউ জিল্যান্ড ৩ উইকেটে ৫৫।
তাসকিনের অসাধারণ ক্যাচ
যার বলে মুড়ি-মুড়কির মতো ক্যাচ পড়ে, তিনিই যেন দেখালেন ক্যাচ কীভাবে নিতে হয়। অসাধারণ ক্যাচে ফেরালেন বিপজ্জনক মার্টিন গাপটিলকে।
মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিনের বলটি ছিল মারার মতো, লেগ স্টাম্পে ফুল লেংথ। গাপটিল ব্যাট চালিয়ে দেন, বল লাগে ব্যাটের কানায়। শর্ট ফাইন লেগে তাসকিন বাঁ দিকে লাফিয়ে অবিশ্বাস্য ক্ষীপ্রতায় এক হাতে মুঠোবন্দি করেন বল। তিনি নিজেও বিশ্বাস করতে পারছিলেন না ক্যাচ হয়েছে। গাপটিল আউট হয়েও স্রেফ হাসছিলেন ক্যাচটি দেখে।
১৮ বলে ২১ করে আউট তাসকিন। নিউ জিল্যান্ড ৬ ওভারে ২ উইকেটে ৫৫।
অবশেষে সাফল্য
জীবন পাওয়ার পর তা কাজে লাগাতে পারলেন না অ্যালেন। তাকে ফিরিয়েই কিছুটা স্বস্তি পেলেন তাসকিন আহমেদ।
জীবন পাওয়া শটের মতোই অনেক উঁচুতে তুলেছিলেন অ্যালেন। স্কয়ার লেগে দারুণ ক্যাচ নেন মোহাম্মদ নাঈম শেখ। ১০ বলে ১৭ করে ফিরলেন অ্যালেন।
নিজের প্রথম ওভারে অ্যালেন ও গাপটিলের ব্যাটে দুটি ছক্কা হজম করে শেষ বলে সাফল্য পেলেন তাসকিন।
নিউ জিল্যান্ড ৪ ওভারে ১ উইকেটে ৩৬।
আরেকটি ক্যাচ হাতছাড়া
সফরের প্রতিটি ম্যাচের ধারাবাহিকতা ধরে রেখে আবারও ক্যাচ ছাড়ল বাংলাদেশ। দুর্ভাগা বোলার তাসকিন আহমেদ, যার বলেই সবচেয়ে বেশি সুযোগ হয়েছে হাতছাড়া। জীবন পেলেন ফিন অ্যালেন।
সুযোগটি অবশ্য ছিল অনেক কঠিন। তাসকিনের প্রথম বলেই ৯৫ মিটার লম্বা একটি ছক্কা মেরে পরের বলেই ডাউন দা উইকেট এসে উড়িয়ে মারেন অ্যালেন। বল উঠে যায় অনেক অনেক উঁচুতে, রাতের আকাশে মুহূর্তের জন্য হারিয়েও যায় যেন। মিড অন থেকে মাহমুদউল্লাহ বলের নিচে যান ঠিকই, কিন্তু পারেননি হাতে জমাতে।
১৫ রানে রক্ষা পেলেন অ্যালেন।
রিভার্স সুইপে প্রথম রান
প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ‘গোল্ডেন ডাক।’ দ্বিতীয় ম্যাচে প্রথম দুই বলে রান নেই। নার্ভাস ফিন অ্যালেন? ২১ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান উত্তর দিলেন পরের বলেই। রিভার্স সুইপ করে চার!
বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদের বলটি রিভার্স সুইপ করার মতো ততটা ফুল লেংথ ছিল না। আগে থেকেই ঠিক করে রাখা শটে তবু টাইমিং ঠিকঠাক করেন অ্যালেন, বল পাঠান গ্যাপে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথম রান রিভার্স সুইপে!
আড়াই বছর পর মিল্ন
বাংলাদেশের মতো নিউ জিল্যান্ডের একাদশেও আগের ম্যাচ থেকে পরিবর্তন কেবল একটি এবং সেটি পেস আক্রমণেই। আগের ম্যাচে দুর্দান্ত বোলিং করা ফাস্ট বোলার লকি ফার্গুসন পেয়েছেন বিশ্রাম, তার জায়গায় খেলছেন আরেক গতি তারকা অ্যাডাম মিল্ন।
চোট-আঘাতের সঙ্গে অনেক লড়াইয়ে জিতে এই সিরিজ দিয়ে দলে ফিরেছেন মিল্ন। এবার পেলেন ম্যাচ খেলার সুযোগ। সবশেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন তিনি ২০১৮ সালের ২ নভেম্বর, পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে।
নিউ জিল্যান্ড একাদশ: মার্টিন গাপটিল, ফিন অ্যালেন, ডেভন কনওয়ে, উইল ইয়াং, গ্লেন ফিলিপস, মার্ক চাপম্যান, ড্যারিল মিচেল, টিম সাউদি (অধিনায়ক), ইশ সোধি, হামিশ বেনেট, অ্যাডাম মিল্ন।
একাদশে তাসকিন
প্রথম টি-টোয়েন্টি থেকে বাংলাদেশের একাদশে পরিবর্তন আছে একটি। বাঁহাতি পেসার মুস্তাফিজুর রহমানকে বিশ্রাম দিয়ে নেওয়া হয়েছে তাসকিন আহমেদকে। আগের ম্যাচে ৪ ম্যাচে ৪৮ রান দিয়ে উইকেটশূন্য ছিলেন মুস্তাফিজ।
তিন বছরের বেশি সময় পর টি-টোয়েন্টি খেলবেন তাসকিন। সবশেষটি খেলেছেন ২০১৮ সালের ১০ মার্চ শ্রীলঙ্কায় নিদাহাস ট্রফিতে।
কাঁধ ও আঙুলের চোটের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে না খেলা মুশফিকুর রহিম নেই এই ম্যাচেও। সৌম্য সরকার পেয়েছেন আরেকটি সুযোগ।
বাংলাদেশ একাদশ: লিটন দাস, মোহাম্মদ নাঈম শেখ, সৌম্য সরকার, মোহাম্মদ মিঠুন, মাহমুদউল্লাহ (অধিনায়ক), আফিফ হোসেন, মেহেদি হাসান, মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন, তাসকিন আহমেদ, নাসুম আহমেদ, শরিফুল ইসলাম।
বোলিংয়ে বাংলাদেশ
প্রথম টি-টোয়েন্টিতে টস হেরে বোলিং পেয়েছিল বাংলাদেশ। এবার মাহমুদউল্লাহ টস বোলিং নিলেন টস জিতে।
টসের সময় অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ বললেন, এই সিদ্ধান্তের মূল কারণ আবহাওয়ার পূর্বাভাস। টসের সময়ও আকাশ ছিল বেশ মেঘলা। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিও ছিল বাতাসে। এজন্যই পরে ব্যাটিংয়ের পথ বেছে নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।
নিউ জিল্যান্ড অধিনায়ক টিম সাউদিও জানান, তার ভাবনাও ছিল একইরকম।
জয়ের আশায় আরেকটি ম্যাচ
অন্তত একটি জয়ের আশায় এবার নিউ জিল্যান্ড সফরে গেছে বাংলাদেশ দল। আশা পূরণ হয়নি এখনও। তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের পর টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচেও পেরে ওঠেনি দল। নিউ জিল্যান্ডে জয় খরা গিয়ে ঠেকেছে টানা ৩০ আন্তর্জাতিক ম্যাচে। এবার আরেকটি ম্যাচে বাংলাদেশ দল মাঠে নামছে বহু কাঙ্ক্ষিত সেই জয়ের আশায়।