অধিনায়কের অপরাজিত ৯৯ রানের ইনিংসের সৌজন্যে অ্যান্টিগায় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম দিন শেষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান ৭ উইকেটে ২৮৭।
৯৮ রান নিয়ে দিনের শেষ ওভার শুরু করেন ব্র্যাথওয়েট। দুই বল খেলে ওই ওভার থেকে নিতে পারেন এক রান। স্ট্রাইক পাননি আর।
স্কোরকার্ড বলবে, প্রথম দিনে দুই দলই সমানে সমান। তবে লঙ্কানদের একটু হতাশই থাকার কথা, টস জিতে আগে বোলিং নিয়ে আরেকটু ভালোর আশা নিশ্চয়ই তাদের ছিল! উইকেট যদিও ব্যাটসম্যানদের পক্ষেই ছিল বেশি।
তিন সেশনে তিন দফায় ক্যারিবিয়ানদের বিপাকে ফেলতে পেরেছিল লঙ্কানরা। শুরুতে রান ছিল ২ উইকেটে ১৫। দ্বিতীয় সেশনে এক পর্যায়ে ৪ উইকেটে ১২০। শেষ সেশনে ৭ উইকেটে ২২২। প্রতিবারই কোনো জুটি উদ্ধার করেছে ক্যারিবিয়ানদের।
লঙ্কানরা খেসারত দেয় ক্যাচ ছাড়ারও। কাইল মেয়ার্স ১২ রানে জীবন পেয়ে করেন ৪৯। আলজারি জোসেফ ২৮ রানে জীবন পেয়ে ২৯ রানেই আউট। তবে ৩৭ রানে ব্র্যাথওয়েটের ক্যাচ ছাড়ার চড়া মূল্য তাদেরকে দিতে হচ্ছে।
স্যার ভিভ রিচার্ডস স্টেডিয়ামে সোমবার টস জিতে বোলিং দিয়ে লঙ্কান অধিনায়ক দিমুথ করুনারত্নে বলেন, সকালের আর্দ্রতা কাজে লাগাতে চান। সুরাঙ্গা লাকমলের দুর্দান্ত বোলিংয়ে শুরুটা কাঙ্ক্ষিতই হয় তাদের।
অসাধারণ এক স্পেলে লাকমল ফেরান জন ক্যাম্পবেল ও আগের টেস্টের সেঞ্চুরিয়ান এনক্রুমা বনারকে। অভিজ্ঞ পেসারের প্রথম ৬ ওভারই ছিল মেডেন, শূন্য রান দিয়ে ২ উইকেট!
অপরাজিত ৯৯ রানের পথে ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েটের পুল শট। ছবি : শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট।
বাঁহাতি পেসার বিশ্ব ফার্নান্দোর লেগ স্টাম্পের বলে চার মেরে ব্র্যাথওয়েট প্রথম রানের দেখা পান ১৮ বল খেলে। অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি, সিরিজে ১৮৫তম বলে প্রথম বাউন্ডারির দেখা পেলেন এই ওপেনার! আগের টেস্টে দুই ইনিংসে ১৬৭ বল খেলে চার ছিল না তার।
চারে নেমে কাইল মেয়ার্স পাল্টা আক্রমণে চাপ সরিয়ে নেওয়ার পথ বেছে নেন। লাকমলের এক ওভারে পেয়ে যান তিনটি বাউন্ডারি, দুটিই ব্যাটের কানায় লেগে উইকেটের পেছন দিয়ে।
এই জুটির ৭১ রানে লাঞ্চের আগে আর উইকেট হারায়নি ওয়েস্ট ইন্ডিজের। বিরতির পর প্রথম ওভারেই মেয়ার্স ৪৯ রানে আউট হন বিশ্ব ফার্নান্দোর বলে বাজে শটে।
জার্মেইন ব্ল্যাকউড উইকেটে যাওয়ার পরপরই লাকমলকে চার-ছক্কায় নাড়িয়ে দেন। লাকমল প্রতিশোধ নেন ১৮ রানে তাকে ফিরিয়ে।
এরপর জেসন হোল্ডার ও ব্র্যাথওয়েটের জুটিতে আসে ৫১ রান। ৩৪ বলে হোল্ডারের ৩০ রানের ইনিংস থামে ধনাঞ্জয়া ডি সিলভার বলে। জশুয়া দা সিলভা ৩৫ বল খেলে করতে পারেন ১ রান। আলজারি জোসেফের ক্যাচ ছাড়ার পর তাকে ২৯ রানে থামান বাঁহাতি স্পিনার লাসিথ এম্বুলদেনিয়া।
২২২ রানে ওয়েস্ট ইন্ডিজের নেই তখন ৭ উইকেট, এগিয়ে শ্রীলঙ্কাই। কিন্তু ব্র্যাথওয়েট ও রাকিম কর্নওয়ালের জুটিতে বদলে যায় চিত্র। ৬৫ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে দিন শেষ করেন দুজন। আগের টেস্টে দারুণ ফিফটির পর কর্নওয়াল এবার অপরাজিত ৫৪ বলে ৪৩ রানে।
লঙ্কানদের সামনে দেয়াল হয়ে ব্র্যাথওয়েট অপরাজিত ২৩৯ বলে ৯৯ রানে। ইনিংসের পথে স্পর্শ করেন চার হাজার টেস্ট রান। ১২৯ ইনিংসে মাইলফলক ছুঁয়ে তিনি ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে মন্থরতম (কার্ল হুপারের সঙ্গে যৌথভাবে)। দ্বিতীয় দিন শুরু করবেন তিনি নবম টেস্ট সেঞ্চুরির আশায়।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ম ইনিংস : ৮৬ ওভারে ২৮৭/৭ (ব্র্যাথওয়েট ৯৯, ক্যাম্পবেল ৫, বনার ০, মেয়ার্স ৪৯, ব্ল্যাকউড ১৮, হোল্ডার ৩০, জশুয়া ১, জোসেফ ২৯, কর্নওয়াল ৪৩*; লাকমল ২০-৮-৭১-৩, বিশ্ব ২২-৪-৫৯-১, চামিরা ২১-৪-৭৯-১, এম্বুলদেনিয়া ১৬-৩-৫৬-১, ধনাঞ্জয়া ৭-৩-১৬-১)।