বিবিসি জানায়, নতুন নিয়মে হংকংয়ের পার্লামেন্টে সরাসরি নির্বাচিত আসন সংখ্যা কমিয়ে অর্ধেক করা হয়েছে। তার উপর যারা এমপি নির্বাচন করতে চাইবেন আগে তাদের বেইজিংপন্থি একটি কমিটির সামনে (ভেটিং কমিটি) যাচাই-বাছাই পরীক্ষা দিতে হবে। ওই কমিটি দেখবে, সম্ভাব্য প্রার্থীর চীনের প্রতি আনুগত্য আছে কিনা।
নতুন এই নিয়মের মাধ্যমে বেইজিং শুধু ‘দেশভক্ত’ ব্যক্তিদের হংকংয়ের পার্লামেন্টে থাকা নিশ্চিত করতে চাইছে।
সমালোচকরা এ নিয়ে সতর্ক করে বলেছেন, এর ফলে হংকংয়ে গণতন্ত্র বলতে আর কিছু থাকবে না। একইসঙ্গে কোনো বিরোধীদল আর পার্লামেন্ট নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না।
সমালোচকদের আশঙ্কা নাকচ করে দিয়ে হংকংয়ের প্রধান নির্বাহী ক্যারি লাম বলেন, সব জায়গায় গণতন্ত্র ‘একই রকম হতে হবে’ এমন কোনো কথা নেই। ভেটিং কমিটি প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে ব্যক্তির রাজনৈতিক মতাদর্শ দেখবেন না। বরং ব্যক্তি কতটা ‘দেশপ্রেমিক’ সেটা দেখবেন। যারা ‘দেশপ্রেমিক’ নন তাদের নির্বাচন করতে দেওয়া হবে না।
নতুন এই নিয়মে আগামী ডিসেম্বরে হংকং আইন পরিষদের প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
মার্চের শুরুর দিকে চীনের ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেসের (এনপিসি) সভা চলাকালে হংকংয়ের নির্বাচনী ব্যবস্থায় পরিবর্তনের পরিকল্পনা প্রথম অনুমোদন দেয় চীনের পার্লামেন্ট।
মঙ্গলবার চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, হংকংয়ের নির্বাচনী ব্যবস্থায় পরিবর্তনের বিষয়টি পাসে এনপিসি
স্ট্যান্ডিং কমিটি সর্বসম্মতভাবে ভোট দিয়েছে। এনপিসি স্ট্যান্ডিং কমিটি চীনের
শীর্ষ সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী সংস্থা।
চীনের নিয়ন্ত্রণমুক্ত হয়ে পূর্ণ স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে ২০১৯ সালে হংকংয়ে টানা কয়েকমাস ধরে গণতন্ত্রপন্থিদের আন্দোলন চলেছে। করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে গত বছর ওই আন্দোলনে ভাটা পড়ে। তার মধ্যেই গত বছর জুনে হংকংয়ের উপর নিয়ন্ত্রণ আরো শক্ত করতে জাতীয় নিরাপত্তা আইন নামে একটি নতুন আইন জারি করে চীন। এবার নির্বাচনী ব্যবস্থায় পরিবর্তন এনে সেই নিয়ন্ত্রণ আরো শক্ত করতে চাইছে বেইজিং।