স্পেসএক্সের মানব স্পেসফ্লাইট প্রধান বেনজি রিড এবং বিলিয়নেয়ার উদ্যোক্তা জারেড আইজ্যাকম্যান ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে সরাসরি প্রচারিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই দুই সর্বশেষ অসামরিক নভোচারীর পরিচয় জানান বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে রয়টার্স।
ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ‘শিফট4 পেমেন্টসে’র প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী আইজ্যাকম্যান স্পেসএক্স ক্রু ড্রাগন ক্যাপসুলে চড়ে নিজেকে এবং আরও তিনজনকে মহাকাশে নিচ্ছেন। এজন্য স্পেসএক্সের মালিক ও বিলিয়নেয়ার ইলন মাস্ককে খরচের অর্থও তিনি দিয়েছেন। অর্থের অঙ্কটি গোপন রাখা হলেও এটি যে যথেষ্টই বড় একটি সংখ্যা তা অনুমান করা যায়।
সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি বা এর পরে কোনো সময়ের জন্য নির্ধারণ করে রাখা ফ্লাইটটির উৎক্ষেপণ থেকে ফের নেমে আসা পর্যন্ত সময়ের ব্যাপ্তি তিন থেকে চার দিন হবে বলে এখন পর্যন্ত অনুমান রয়েছে।
“এই মিশনটি সম্পূর্ণ হওয়ার পরে লোকজন এটি দেখবেন এবং বলবেন যে, এই প্রথমবারের মতো সাধারণ মানুষ মহাশূন্যে যেতে পারছে।” ৩৮ বছর বয়সী আইজ্যাকম্যান বলেন সংবাদ সম্মেলনে।
ইনস্পিরেশন ৪ (ফোর) নামে মিশনটি প্রাথমিকভাবে দাতব্য উদ্যোগ হিসেবে শুরু হয়।
শীর্ষস্থানীয় পেডিয়াট্রিক ক্যান্সার গবেষণা কেন্দ্র ‘সেন্ট জুড চিলড্রেন’স রিসার্চ হসপিটালে’র জন্য তহবিল সংগ্রহ এবং এ সম্পর্কে সচেতনতা ও সমর্থন তৈরির জন্য উদ্যোগ নেন জারেড আইজ্যাকম্যান। আইজ্যাকম্যান ব্যক্তিগতভাবে এই প্রতিষ্ঠানের জন্য ১০০ মিলিয়ন ডলার তহবিল তোলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
“মিশন কমান্ডার” এর দায়িত্ব নিয়েই আইজ্যাকম্যান ফেব্রুয়ারিতে সেন্ট জুড হাসপাতালের সহকারী হেইলি আর্সেনৌকে প্রথম ক্রুমেট হিসাবে মনোনীত করেন। হাড়ের ক্যান্সার থেকে বেঁচে যাওয়া আর্সেনৌ টেনেসি’র এই হাসপাতালেই এক সময় চিকিৎসা নিয়েছেন।
সিয়াটল-অ্যারোস্পোস ইন্ডাস্ট্রির কর্মী এবং মার্কিন বিমান বাহিনীর সাবেক সদস্য ক্রিস সেমব্রস্কি একটি লটারির মাধ্যমে নির্বাচিত হন। ৭২ হাজার অংশগ্রহনকারীর ওই লটারি থেকে উঠে এসেছে ১১৩ মিলিয়ন ডলার।
অ্যারিজোনার ফিনিক্সের সাউথ মাউন্টেন কমিউনিটি কলেজের ভূ-বিজ্ঞানের অধ্যাপক সায়ান প্রক্টর একসময় নাসার নভোচারী হওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। শিফট4 পেমেন্টস পরিচালিত ভিন্ন একটি অনলাইন প্রতিযোগিতার মাধ্যমে তিনি আলাদাভাবে নির্বাচিত হন।
নাসার নভোচারীদের মতোই একই পাঠ্যক্রমের ভিত্তিতে স্পেসএক্স-এর এই মিশনে প্রস্তুতির জন্য নির্বাচিত এই চারজন ব্যাপক প্রশিক্ষণ নেবেন।
ইনস্পিরেশন ৪ মিশনটি কেবল সর্ব অসামরিক ক্রু’র জন্য নয়, মহাকাশ যাত্রায় একটি নতুন যুগের চিহ্ন হিসাবে চিহ্নিত হতে পারে বলে উঠে এসেছে রয়টার্সের প্রতিবেদনে।
দীর্ঘদিনের রেওয়াজ অনুসারে মার্কিন মহাকাশ অভিযানে সধারণত সমরিক বাহিনীর সদস্যরাই থাকেন। এর বাইরে প্রয়োজন অনুসারে যুক্ত হন বিজ্ঞানী, প্রকৌশলী বা চিকিৎসকরা। একই রেওয়াজ পালন করে রাশিয়া, চীনসহ অন্যান্য দেশও।
নাসার প্রথম ৩৩০জন নভোচারীর মধ্যে দুই শতাধিকই ছিলেন সামরিক বাহিনীর সদস্য। কোনো নভোযানে সব অসামরিক যাত্রী বহন করার ঘটনা ঘটেনি এখন পর্যন্ত। সেই রেওয়াজই এবার ভাঙতে যাচ্ছে স্পেসএক্স।