ক্যাটাগরি

বিএনপি-হেফাজত-জামায়াতের মিলিত নাশকতা ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়: হানিফ

বুধবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন স্থান দেখে প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।

স্বাধীনতার সূবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে ঘিরে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ বিভিন্ন জেলায় ব্যাপক তাণ্ডব চালায় হেফাজতে ইসলাম সমর্থকরা। শুক্রবার, শনিবার ও রোববার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে চট্টগ্রাম ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বহু প্রাণহানি হয়।  

হামলাকারীরা তিন দিন ধরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যাপক তাণ্ডব চালায়।

তারা প্রেসক্লাবে ভাংচুর ও সাংবাদিকদের উপর হামলা চালায়; রেল স্টেশনে অগ্নিসংযোগ করে; শ্রী শ্রী আনন্দময়ী কালিবাড়ি মন্দির, দি আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গন, জেলা শিল্পকলা একাডেমি, পৌরসভা কার্যালয়, সদর উপজেলা ভূমি অফিস, আলাউদ্দিন খাঁ পৌর মিলনায়তন, ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ভাষা চত্বর, জেলা আওয়ামী লীগ সম্পাদকের কার্যালয় ও বাড়ি, জেলা পরিষদ কার্যালয়, আশুগঞ্জ টোল প্লাজা, খাটিহাতা বিশ্বরোড হাইওয়ে থানাসহ অসংখ্য স্থানে তাণ্ডব চালায়। 

আওয়ামী লীগ নেতা হানিফ বলেন, মার্চ মাসের শুরু থেকেই মির্জা ফখরুলসহ বিএনপির দায়িত্বশীল নেতারা বক্তব্যের মাধ্যমে হেফাজতকে উস্কে দিচ্ছেন।

“স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী একজন রাষ্ট্রীয় অতিথি ছিলেন। আসার আগেই ‘ওনাকে আসতে দেওয়া ঠিক হবে না, বাধা দেবে’ বলে যেসব ধর্ম ব্যবসায়ী দল বক্তব্য দিয়ে আসছিল তাদের উস্কে দিচ্ছে বিএনপি।”

তিনি বলেন, গতকালও মির্জা ফখরুল সাহেব বলেছেন- ‘২০২১ সালের মধ্যে সরকারের পতন হয়ে যাবে’। তারা যে সরকারের পতন হয়ে যাবে আশা প্রকাশ করছেন কোন আশায়-কিসের উপর ভিত্তি করে? বিএনপি নিজেদের এমন কোনো সাংগঠনিক তৎপরতা নেই যার উপর ভিত্তি করে সরকারকে অস্থিতিশীল করতে পারে। তাহলে তারা ভাবছে কেন সরকারের পতন হবে?

“নিজেদের সক্ষমতা নেই; তারা এখন ধর্ম ব্যবসায়ী হেফাজত ও জামাতিদের মাথায় ভর করছে। তারা ভর করছে বলেই এধরনের কথা বলছে।”

হানিফ বলেন, “গান পাউডার হেফাজতিদের কাছে থাকার কথা না, সাধারণ মানুষের কাছে থাকার কথা না। এই গান পাউডার একাত্তর সালে রাজাকার-আলবদর ও জামাতের বিভিন্ন নাশকতামূলক কার্যক্রমে ব্যবহার করতে দেখেছি। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নাশকতায় গান পাউডারের ব্যবহার দেখে এটা পরিষ্কার হয়ে গেছে হেফাজতের কাঁধে ভর করেছে জামায়াত-বিএনপি। পরিকল্পিতভাবে বিএনপি, হেফাজত ও জামায়াত এই নাশকতা করেছে।”

সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে হানিফ আরও বলেন, গত ১২ বছরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার যে উন্নয়ন করেছে, যা এখন দৃশ্যমাণ হয়েছে, দেশ উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের স্বীকৃতি পেয়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে যে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে, বিশেষ করে ১৭ মার্চ থেকে ২৬ মার্চ পর্যন্ত যে কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে তাতে ৬৫টি দেশের রাষ্ট্র প্রধান মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ভূয়সী প্রশংসা করেছেন।

বাংলাদেশ এক সময় মিসকিন রাষ্ট্র ছিল, ব্যর্থ রাষ্ট্র ছিল; সেই রাষ্ট্র আজ সকলের কাছে অনুকরণীয়, বলেন হানিফ।

“সাংবাদিকেরা সমাজের দর্পন। আপনারা দেখেছেন প্রতিটি দেশের সরকার প্রধান কী বার্তা দিয়েছে, কী প্রশংসা করে। এসব স্বাধীনতাবিরোধী পরাশক্তি ও তাদের প্রেতাত্মাদের পছন্দ হয়নি। এই বিষয়গুলো নিয়ে তারা সমাজে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চাচ্ছে।

“ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও হাটহাজারীতে যে তাণ্ডব হয়েছে এটা হেফাজতে ইসলামই শুধু না, এর পেছনে বিএনপি ও জামায়াত সম্পৃক্ত ছিল- তা প্রমাণিত। ছাত্রদলের ক্যাডাররা বোমা ফাটিয়েছে। তাদের এর মধ্যে সংশ্লিষ্টতা কেন?”

হনিফ বলেন, “আমরা পরিদর্শন শেষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিস্তারিত জানাব। বিএনপি, জামায়াত বা হেফাজত যেই হোক তাদের শাস্তি নিশ্চিত করে জানাতে হবে স্বাধীন রাষ্ট্রে এধরনের নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড করা যাবে না।”

এই সময় সেখানে আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, অর্থবিষয়ক সম্পাদক সাংসদ ওয়াসিকা আয়েশা খান, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক সেলিম মাহমুদ, স্থানীয় সাংসদ র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।