বিবিসি জানিয়েছে, বোলসোনারো অসঙ্গতভাবে সামরিক বাহিনীকে নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছেন, তাদের কাছে এমনটি মনে হওয়ার পর এর প্রতিবাদে ওই প্রতিরক্ষা প্রধানরা দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ান বলে প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলোতে বলা হয়েছে।
এর আগে ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী পদত্যাগ করায় সোমবার নিজের মন্ত্রিসভা নতুন করে সাজাতে বাধ্য হয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট বোলসোনারো।
কোভিড-১৯ মহামারী সামাল দেওয়া নিয়ে ব্যর্থতার কারণে ক্ষমতায় আসার মাত্র দুই বছরের মাথায় বোলসোনারের জনপ্রিয়তায় ধস নেমেছে।
ব্রাজিলের চরম ডানপন্থি এ প্রেসিডেন্ট ধারাবাহিকভাবে কোয়ারেন্টিন পদক্ষেপগুলোর বিরুদ্ধতা করে গেছেন, এতে করোনভাইরাসের ক্ষতির চেয়েও অর্থনৈতিক ক্ষতি বেশি হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে যুক্তি দেখিয়েছেন তিনি।
দেশবাসীকে পরিস্থিতি নিয়ে ‘ঘ্যানঘানানি বন্ধ’ করতেও বলেছিলেন তিনি। করোনাভাইরাস মহামারীতে ব্রাজিলে প্রায় তিন লাখ ১৪ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে, শনাক্ত রোগীর সংখ্যা এক কোটি ২৫ লাখ ছড়িয়ে গেছে।
বলা হচ্ছে, ব্রাজিলের ইতিহাসে এই প্রথমবারের মতো প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দ্বিমতের কারণে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনীর প্রধানরা একযোগে পদত্যাগ করলেন।
সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এডিসো লেয়াও পুঁজো, নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল ইয়ুকিস বারবোসা ও বিমান বাহিনী প্রধান লেফটেন্যান্ট বিগ্রেডিয়ার আন্তোনিও কার্লোস বেরমুজিস মঙ্গলবার পদত্যাগ করেন। এর একদিন আগে প্রেসিডেন্টের অনুগত পররাষ্ট্রমন্ত্রী এরন্যাস্তো এরাউজো আইনপ্রণেতাদের প্রবল সমালোচনার মুখে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।
এরাউজো চীন, ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখার ক্ষেত্রে দুর্বলতার পরিচয় দিয়েছেন আর এ কারণেই ব্রাজিল পর্যাপ্ত পরিমাণে কোভিড-১৯ টিকা পায়নি বলে অভিযোগ দেশটির আইনপ্রণেতাদের।
এরাউজোর পদত্যাগের পরপরপই প্রতিরক্ষামন্ত্রী ফের্নানন্দো আজেভেদো ই সিউভা তাকে অনুসরণ করেন। দুই গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীর পদত্যাগের পর মন্ত্রিসভায় রদবদল করতে বাধ্য হন বোলসোনারো।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী ই সিউভা সশস্ত্র বাহিনীর আনুগত্য নিয়ে বোলসোনারোর সঙ্গে বিরোধে জড়িয়েছিলেন। ই সিউভার বক্তব্য ছিল, ব্যক্তিগতভাবে প্রেসিডেন্টের প্রতি সমর্থন দেওয়া সশস্ত্র বাহিনীর কাজ না, তাদের দায়িত্ব সংবিধান সমুন্নত রাখা।
বিবিসির লাতিন আমেরিকা সংবাদাতা উয়িল গ্রান্ট জানিয়েছেন, জানুয়ারি ২০১৯ সালে দায়িত্বে আসার পর থেকে বোলসোনারো এখন সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক সংকটের মোকাবেলা করছেন। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোর এই পরিস্থিতি করোনাভাইরাস মহামারী মোকাবেলার অব্যবস্থাপনার সঙ্গে যুক্ত হয়ে ডানপন্থি এই নেতার ওপর প্রবল চাপ তৈরি করেছে।