করোনাভাইরাস মহামারী মধ্যে অনুষ্ঠিত অন্য অধিবেশনগুলোর মত এবারও স্বাস্থ্যবিধি মেনে সংসদ চলবে। এক্ষেত্রে কোভিড-১৯ নেগেটিভ সনদ থাকা সংসদ সদস্যরাই অধিবেশনে যোগ দিতে পারবেন। অন্য অধিবেশনগুলোর মত এবারও সংসদ সদ্যসরা তালিকা অনুযায়ী বৈঠকে যোগ দেবেন।
বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠেয় প্রথম বৈঠক শোক প্রস্তাব গ্রহণের মধ্য দিয়েই শেষ হবে। চলমান সংসদের কোনো আইনপ্রণেতা মারা গেলে সংসদে আনা শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনা শেষে সংসদের বৈঠক মুলতবির রেওয়াজ রয়েছে।
চলতি সংসদের সদস্য সিলেট-৩ আসনের মাহমুদুস সামাদ চৌধুরী গত ১১ মার্চ মারা যান।
করোনাভাইরাস সংক্রমণকালে অনুষ্ঠেয় এ অধিবেশনে স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে সংসদ। সংসদ সচিবালয়ের অধিবেশন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারী ছাড়া অন্যদের সংসদে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।
সংসদ ভবনে দর্শনার্থী এবং গণমাধ্যমকর্মীদের প্রবেশও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবে কোভিড-১৯ নেগেটিভ সনদ থাকলে সংসদের বৈঠকের পর সাংবাদিকরা সংসদ ভবনে ঢুকতে পারবেন।
যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারী অধিবেশন চলাকালে সংসদে দায়িত্ব পালন করবেন তাদের থাকতে হবে কোভিড-১৯ নেগেটিভ সনদ।
এজন্য সংসদ সদস্য ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সংসদের মেডিকেল সেন্টারের মাধ্যমে করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সাংবিধানিক বাধ্যবাধ্যকতায় এ অধিবেশন হচ্ছে। করোনা পরিস্থিতি বিবেচনা করে সার্বিক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য সুরক্ষার সার্বিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সংসদ সদস্যরা করোনা পরীক্ষা করে বৈঠকে যোগ দেবেন। আমরা স্বাস্থ্য ঝুঁকির বিষয়টি বিবেচনা করে জ্যেষ্ঠ সংসদ সদস্যদের নিরুৎসাহিত করেছি।
“বৈঠকে উপস্থিতির বিষয় কেবল কোরাম পূর্ণ হওয়ার ওপর জোর দেওয়া হবে। করোনাকালের অন্য অধিবেশনের মত এবার সংসদ সদস্যরা তালিকার ভিত্তিতে যোগ দেবেন।”
মহামারীর মধ্যে বসতে যাওয়া সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার কারণে বসতে যাওয়া এ অধিবেশন সংক্ষিপ্ত হতে পারে।
সংসদ সচিবালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, অধিবেশন তিন থেকে পাঁচদিন চলতে পারে।
গত ১৫ মার্চ রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এ অধিবেশন আহ্বান করেন। এর আগে গত ২ ফেব্রুয়ারি শেষ হয় সংসদের একাদশ অধিবেশন।
সংবিধানের নিয়ম অনুযায়ী সংসদের দুইটি অধিবেশনের মধ্যে ৬০ দিনের বেশি বিরতি থাকার সুযোগ নেই। যে কারণে এ অধিবেশন ডাকতে হয়েছে।
অধিবেশনে সংসদে উঠতে পারে ৯টি বিল
বৃহস্পতিবার শুরু হওয়া সংসদ অধিবেশনে ৯টি বিল উত্থাপনের অপেক্ষায় রয়েছে। এছাড়া একটি বিল কমিটিতে পরীক্ষাধীন। সংসদের এ অধিবেশনে এই বিলগুলো ওঠার কথা রয়েছে। অবশ্য অধিবেশন সংক্ষিপ্ত হলে এর মধ্যে কয়েকটি বাদও রাখা হতে পারে।
যে বিলগুলোর উত্থাপনের কথা রয়েছে সে সেগুলো হলো- বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী কল্যাণ ট্রাস্ট বিল-২০২১, বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইনান্স করপোরেশর (সংশোধন) বিল-২০২১, ব্যাংকার বহি সাক্ষ্য বিল-২০২১, বাংলাদেশ ট্যুর অপারেটর ও ট্যুর গাইড (নিবন্ধন ও পরিচালন) বিল-২০২১, মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ বিল-২০২১, শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র বিল-২০২১, মেডিকেল ডিগ্রি (রিপিল) বিল-২০২১, মেডিকেল ডিগ্রি (গভর্নিং বডিস) (রিপিল) বিল-২০২১, হজ ও ওমরাহ ব্যবস্থাপনা বিল-২০২১।
এছাড়া কমিটিতে পরীক্ষাধীন আছে আয়োডিনযুক্ত লবন বিল-২০২১।