২৩ মার্চ সকালে জাহাজটি আড়াআড়িভাবে আটকা পড়ায় প্রায় এক সপ্তাহ ধরে বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ওই জলপথে জাহাজ চলাচল বন্ধ হয়ে ছিল। সোমবার সকালে উদ্ধারকারী টাগবোটগুলো এভার গিভেনকে পাড়ের চড়া থেকে নামিয়ে ফের ভাসাতে সক্ষম হলে অচলাবস্থার অবসান হয়। এরপর ওই দিন রাত থেকে ফের সুয়েজ খালে জাহাজ চলাচল শুরু হয়।
সুয়েজ খাল কর্তৃপক্ষের (এসসিএ) চেয়ারম্যান ওসামা রাবি বলেছেন, তীব্র বাতাসসহ আবহাওয়া পরিস্থিতি ও মানুষের ত্রুটি জাহাজটি আটকা পড়ার ক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছে বলে তার ধারণা।
এই বিষয়গুলো পরিষ্কার করতেই বুধবার থেকে থেকে তদন্ত শুরু করা হয়েছে বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন রাবির উপদেষ্টা ক্যাপ্টেন সৈয়দ শেশা।
তিনি জানান, তদন্তে জাহাজটি সাগরে চলাচলের মতো অবস্থায় আছে কিনা তা পরীক্ষা করা হবে এবং খালে এটি আটকা পড়ার ক্ষেত্রে ক্যাপ্টেনের সিদ্ধান্ত কোনো ভূমিকা রেখেছিল কিনা তা যাচাই করা হবে।
এভার গিভেনের ক্যাপ্টেন তদন্তে পূর্ণ সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বলে শেশা জানিয়েছেন।
৪০০ মিটার দৈর্ঘ্য, ৫৯ মিটার প্রশস্ত ও দুই লাখ ২০ হাজার টন কন্টেইনার বহনের ক্ষমতাসম্পন্ন এভার গিভেন সুয়েজ খালের দক্ষিণাংশের সংকীর্ণ একক লেনে আড়াআড়িভাবে আটকে গিয়ে ইউরোপ ও এশিয়ার মধ্যে সংক্ষিপ্ততম জলপথটিতে জাহাজ চলাচল পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়।
ছয় দিনের এই অচলাবস্থার কারণে বিশ্বের সাপ্লাই চেইনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। এই ঘটনাটির কারণে হঠাৎ করে বীমার দাবির প্রবাহ শুরু হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বীমা কোম্পানি লয়েড’স অব লন্ডন তাদের বড় ধরনের ‘লোকসান’ হবে বলে আশঙ্কা করছে।
এভার গিভেনের মালিক জাপানি কোম্পানি জানিয়েছে, জাহাজটির আটকে পড়া নিয়ে কোনো দাবি বা মামলার ঝামেলায় পড়েনি তারা।
সুয়েজ খালের একটি সূত্র ও জাহাজটির একজন এজেন্ট রয়টার্সকে জানিয়েছেন, মঙ্গলবার তদন্তকারীরা সুয়েজ খালকে দুটি অংশে ভাগ করা হ্রদ গ্রেট বিটারে অবস্থানকারী জাহাজটিতে গিয়ে উঠেছেন।
এভার গিভেন আটকা পড়ার পর ছয় দিনে সুয়েজ খালের দুই পাশে ৪০০টিরও বেশি জাহাজ জমে গিয়েছিল। এই জট ছুটাতে দ্রুত জাহাজ পারপারে এখন রাতদিন কাজ করছে এসসিএ।
চলতি সপ্তাহের শেষ দিকে এ জাহাজজট শেষ হয়ে সুয়েজ খালে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসবে বলে আশা করছে তারা।