বুধবার বিবিসি জানায়, সুডওয়ার্থ নিজের পরিবার নিয়ে বেইজিং ত্যাগ করেছেন। শিনজিয়াং অঞ্চলে উইঘুর জনগোষ্ঠীর উপর চীন সরকারের দমন নীতি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে সুডওয়ার্থ পুরস্কার জিতেছেন। তার ওই কাজ চীন সরকারের মোটেও পছন্দ হয়নি। তাই তিনি সরকারের বিরাগভাজনে পরিণত হন।
বিবিসি কর্তৃপক্ষ বলেছেন, তারা সুডওয়ার্থের প্রতিবেদন নিয়ে গর্বিত এবং তিনিই চীনে বিবিসির প্রতিনিধি থাকবেন।
শিনজিয়াংয়ে উইঘুরদের নিয়ে বিবিসির প্রতিবেদন অস্বীকার করেছে চীন। এ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে রাজনৈতিক উত্তেজনাও দেখা দিয়েছে।
গত নয় বছর ধরে চীনে বসবাস করছেন সুডওয়ার্থ। কিন্তু তার জন্য চীনে থাকা কঠিন হয়ে পড়ায় পরিবার নিয়ে তিনি তাইওয়ান চলে গেছেন।
বিবিসি জানায়, সুডওয়ার্থ ও তার পরিবারকে সাদা পোশাকের পুলিশ বিমানবন্দর এবং চেক-ইন করা পর্যন্ত অনুসরণ করেছে। সুডওয়ার্থের স্ত্রী ইউভোনে মারি আয়ারল্যান্ডের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা আরটিই-র চীন প্রতিনিধি।
সুডওয়ার্থ জানান, তিনি এবং তার দল কোনো ছবি তুলতে গেলেই তাদের বাধা দেওয়া এবং ভয় দেখানো হয়েছে। এছাড়া তার দলের উপর গোয়েন্দা নজরদারি এবং আইনী ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে।
তবে সুডওয়ার্থ তাইওয়ান চলে গেলেও তার দল এখনো বেইজিংয়েই আছে এবং তিনি তাইওয়ান থেকে কাজ চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন।
চীন ছেড়ে তাইওয়ান চলে যাওয়ার বিষয়ে সুডওয়ার্থ কর্তৃপক্ষকে কিছু জানাননি বলে দাবি করেন চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালযের মুখপাত্র হুয়া চুনিং।
বেইজিংয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তিনি বলেন, ‘‘কয়েকদিন আগে সুডওয়ার্থের প্রেস কার্ড নবায়ন করতে গিয়ে আমরা জানতে পারি তিনি আমাদের বিদায় না বলেই চলে গেছেন। দেশ ছাড়ার পরও তিনি যথাযথ কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে কোনো তথ্য দেননি বা কেন দেশ ছেড়েছেন সে বিষয়ে কিছু জানাননি।”
বিবিসির পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘‘জনের প্রতিবেদনের মাধ্যমে এমন কিছু তথ্য উঠে এসেছে যেটা চীনা কর্তৃপক্ষ বিশ্বের কাছ থেকে লুকিয়ে রাখতে চেয়েছিল।”
পরে আরো বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে চীনকে নিয়ে একই ধরনের প্রতিবেদন প্রকাশ পায়। যার প্রেক্ষিতে গত বছর চীন নিউ ইয়র্ক টাইমস, দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট এবং ওয়াল স্ট্রিট জার্নালসহ আরো কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের বহিষ্কার করে।
পাঁচ দিনের কূটনৈতিক অচলাবস্থার পর গত সেপ্টেম্বরে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে সর্বশেষে যে দুইজন রিপোর্টার চীনে কাজ করতেন তারাও দেশে ফিরে যান।