ক্যাটাগরি

তাইওয়ানে ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহত অর্ধশত

স্থানীয় সময় শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে পূর্ব তাইওয়ানে এই দুর্ঘটনা ঘটে। গত চার দশকের মধ্যে তাইওয়ানে এটাই সবচেয়ে প্রাণঘাতী ট্রেন দুর্ঘটনা।

রাজধানী তাইপে থেকে তাইটংগামী এক্সপ্রেস ট্রেনটিতে প্রায় পাঁচশ যাত্রী ছিলেন, যাদের একটি বড় অংশ ছিলেন পর্যটক। তাছাড়া অনেকেই সপ্তাহান্তে বাড়ি ফিরছিলেন। ফলে ট্রেন ছিল যাত্রীতে পূর্ণ।

স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো বলছে, আসন খালি না থাকায় ট্রেনের ভেতরে অনেকে দাঁড়িয়েও ছিলেন। ট্রেন দুর্ঘটনায় পড়লে প্রচণ্ড ঝাঁকিতে তাদের অনেকে ছিটকে পড়েন। ওই ট্রেনের চালকও আছেন নিহতদের মধ্যে।

শুক্রবার সন্ধ্যা নাগাদ দুর্ঘটনাকবলিত ট্রেন থেকে জীবিতদের উদ্ধার কাজ শেষ হয়। ফায়ার ডিপার্টমেন্টের কর্মীরা ট্রেনের ভেতর থেকে আরো বেশকিছু মৃতদেহের খণ্ডাংশ উদ্ধার করেছে। যার ফলে নিহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা তাদের।  নিহতদের মধ্যে একজন ফরাসী নাগরিক আছেন।

প্রাণে বেঁচে যাওয়া এক নারী স্থানীয় একটি টেলিভিশনকে বলেন, ‘‘লোকজন ছিটকে একে অপরের উপর পড়ে। ওটা ছিল ভয়ঙ্কর। কারো কারো পুরো পরিবার সেখানে ছিল।”

ধারণা করা হচ্ছে, হুয়ালিয়েন শহরের কাছে ওই সুড়ঙ্গে প্রবেশের সময় একটি ট্রাকের সঙ্গে সংঘর্ষের পর ট্রেনটি লাইনচ্যুত হয়।

একটি নির্মাণ প্রকল্পের সামগ্রী পরিবহনের ওই ট্রাক ঠিকমত পার্ক করা না হওয়ায় রাস্তা থেকে পিছলে রেললাইনে উঠে পড়েছিল।

ঘটনাস্থল থেকে আসা ছবিতে দেখা গেছে, লাইনচ্যুত বগিগুলো টানেলের ভেতরে দুমড়ে মুচড়ে আছে। তার মধ্যেই আটকে থাকা যাত্রীদের উদ্ধার করা হচ্ছে।

দুর্ঘটনাস্থলের আরেকটি ছবিতে মাথা ও ঘাড়ে আঘাত পাওয়া আহত এক যাত্রীকে দুর্ঘটনাস্থল থেকে স্ট্রেচারে করে বের করে আনার দৃশ্য দেখা যায়। অনেক যাত্রী তাদের সুটকেস ও ব্যাগ নিয়ে লাইনচ্যুত, কাত হয়ে পড়া একটি বগির পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন, অন্যরা রেললাইনে পড়ে থাকা জঞ্জালের মধ্য দিয়েই হাঁটছিলেন।

রয়টার্স জানিয়েছে, অনেক যাত্রী তাদের সুটকেস, ব্যাগ ফেলে ট্রেনের ছাদ দিয়ে সুড়ঙ্গের বাইরে বেরিয়ে আসেন, এরপর উদ্ধারকারীরা তাদের নেমে আসতে সহায়তা করেন।

তাইওয়ানে ঐতিহ্যবাহী টম্ব সুইপিং ডে’র দীর্ঘ ছুটির শুরুতে এ ট্রেন দুর্ঘটনাটি ঘটল।

২০১৮ সালে তাইওয়ানের উত্তর পূর্বাঞ্চলে রেল লাইনচ্যুত হয়ে ১৮ জন নিহত ও ১৭৫ জন আহত হয়েছিল।

১৯৮১ সালে স্বশাসিত এ দ্বীপে আরেকটি ট্রেন দুর্ঘটনায় ৩০ জন নিহত হয়েছিল।