শুক্রবার বেলা ১০টায় দেশের বিভিন্ন স্থানে ৫৫টি কেন্দ্রে এমবিবিএস কোর্সের ভর্তিপরীক্ষা শুরু হয়, যা বেলা ১১টা পর্যন্ত চলে। সারা দেশে ১ লাখ ২২ হাজার ৭৬১ জন শিক্ষার্থী এ পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার আবেদন করেছিলেন।
তার মধ্যে ঢাকা মহানগরের ১৫টি কেন্দ্রে পরীক্ষার্থ ছিলেন ৪৭ হাজার। পরীক্ষার্থীদের মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করার পাশাপাশি কেন্দ্রে ঢোকার সময় সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার অথবা স্যানিটাইজ করার ব্যবস্থা ছিল।
কিন্তু কেন্দ্রের বাইরে প্রচণ্ড ভিড়ে সামাজিক দূরত্বের কোনো বালাই ছিল না। কোথাও কোথাও পুলিশ চেষ্টা করেও দূরত্ব বজায় রাখতে পারেনি।
পরীক্ষা চলাকালে অভিভাবকরা যখন কেন্দ্রের বাইরে ভিড় করে ছিলেন আর পরীক্ষা শেষে শিক্ষার্থীরা যখন বেরিয়ে আসছিলেন, তখন কোনোভাবেই আর ভিড় সামলানো যায়নি।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:

মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা চলাকালে রাজশাহীর একটি কেন্দ্রের বাইরে অভিভাবকদের ভিড়
রাজশাহী
স্বাস্ব্যবিধি মানার কথা বলা হলেও কেন্দ্রের বাইরে গাদাগাদি আর দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন রাজশাহীর শিক্ষার্থীরা। কেন্দ্রের বাইরে কোনো রকম স্বাস্থ্যবিধি মানা হয়নি। তাছাড়াও কোনো কেন্দ্রের ফটকে শরীরের তাপমাত্রা মাপার যন্ত্র বা থার্মাল স্ক্যানার দেখা যায়নি।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ কেন্দ্রে প্রায় এক কিলোমিটার দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে শিক্ষার্থীদের।
তবে কেন্দ্রের ভেতরে স্বাস্থ্যবিধি মানা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কলেজটির অধ্যক্ষ নওশের আলী।
তিনি বলেন, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ, টিটি কলেজ, নিউ গভর্নমেন্ট ডিগ্রি কলেজ, মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, রাজশাহী কলেজ, মহিলা কলেজ ও সিটি কলেজ—সাতটি কেন্দ্রে ১০ হাজার ২৮৩ জন পরীক্ষার্থী ভর্তিপরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন।
“কেন্দ্রের ভেতরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সবাই পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন। আমরা কেন্দ্রের ভেতরে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করেছি। কেন্দ্রের বাইরে কী হয়েছে তা বলতে পারব না। সেটি মানুষের সচেতনতার বিষয়। অনেক মানুষ গাদাগাদি করে গেটে দাঁড়িয়ে থাকা ঠিক হয়নি।”

মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় কেন্দ্রের বাইরে শারীরিক দূরত্ব রক্ষার কোনো বালাই ছিল না
ময়মনসিংহ
ময়মনসিংহে চারটি কেন্দ্রে মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষা হয়েছে। কোনো কেন্দ্রে কোনো প্রকার স্বাস্থ্যবিধি মানতে দেখা যায়নি। কেন্দ্রগুলোর সামনে ভিড় করে দাঁড়িয়ে ছিলেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
কলেজটির অধ্যক্ষ চিত্ররঞ্জন দেবনাথ বলেন, এবার পরীক্ষায় ময়মনসিংহে চারটি কেন্দ্রে ১১ হাজার ৫৭১ জন শিক্ষার্থী অংশ নেন।
“সকল স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করেই তাদের পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থী কেন্দ্রে ঢোকার আগে তাপমাত্রা মাপা, হ্যান্ডস্যানিটাইজার ব্যবহার ও মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করার পাশাপাশি দূরুত্ব বজায় রেখে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে।”
তবে বাইরে স্বাস্থ্যবিধি মানা হয়েছে কি না তা তাদের জানার বিষয় না বলে তিনি জানান।
কোতোয়ালি থানার ওসি ফিরোজ তালুকদার বলেন, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ, পলিটেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট, আনন্দ মোহন কলেজ ও মুমিনুন্নিসা সরকারি মহিলা কলেজ ভর্তিপরীক্ষা হয়েছে।

ময়মনসিংহে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে বের হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা
“সকাল থেকেই পুলিশ সব জায়গায় শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে ছিল। কিন্তু হাজার হাজার শিক্ষার্থীর সঙ্গে হাজার হাজার অভিভাবক আসায় সবকিছু ছিল নিয়ন্ত্রণের বাইরে। সবাইকে অনুরোধ করেও দূরুত্ব নিশ্চিত করা যায়নি। সকাল ১০টা থেকে পরীক্ষা শুরু হয়ে ১১টায় শেষ হওয়ার কথা থাকলেও সকাল আটটা থেকেই শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা কেন্দ্রের সামনে ভিড় জমান।”
পলিটেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটে পরীক্ষা দেওয়া একজন শিক্ষার্থী বলেন, “সেখানে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা ছিল না। অনেকটা গাদাগাদি করে পরীক্ষার হলে ঢুকতে হয়েছে।”
মুমিনুন্নিসা সরকারি মহিলা কলেজে পরীক্ষা দেওয়া একজন শিক্ষার্থী বলেন, আতঙ্কের মধ্যে পরীক্ষা শেষ করে এসেছি। এমন সময় পরীক্ষা না হলেও ভাল হত। আল্লাই জানে কী হয়। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী শত চেষ্টা করে কাউকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি।”