ক্যাটাগরি

দৃষ্টি প্রতিবন্ধী বলে তাকে নেননি উবার চালকরা!

লিসা আরভিংকে অনেকবারই ফিরিয়ে দিয়েছেন উবার চালকরা। দৃষ্টি প্রতিবন্ধী বলে তিনি গাইড কুকুর নিয়ে চলেন, সেই কুকুর সহ তাকে গাড়িতে তুলতে আপত্তি করেছেন অনেক চালক। এক চালক তো স্রেফ মাঝপথে তাকে ‘গন্তব্য চলে এসেছে’ বলে নামিয়েও দিয়েছেন!

এক সালিশি আদালতে করা অভিযোগে মিজ আরভিং বলেছেন, তার শারীরিক সীমাবদ্ধতার কারণে উবার চালকরা তার সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করেছেন। রাইড বাতিল করার কারণে অনেকসময়ই তিনি রাতে বড়ি ফেরার সময় রাস্তায় একাকী নিরাপত্তাহীন বোধ করেছেন।   

তার দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করেছে আদালত, উবারকে আদেশ করেছে মিজ আরভিংকে ১১ লাখ ডলার জরিমানা দেওয়ার।

চালকদের বিভিন্ন দাবির বেলায় উবার দীর্ঘদিন ধরেই একটি আইনী ফাঁক ব্যবহার করে এসেছে, সেটি হচ্ছে – চালকরা উবারের কর্মী নয়, তারা স্রেফ কনট্রাকটর বা ঠিকাদার। ফলে কর্মীদের আচরণের জন্য যেমন নিয়োগদাতা প্রতিষ্ঠানের দায়বদ্ধতা থাকে, উবারের বেলায় তেমনভাবে দায়ী করা যাবে না।

আদালত উবারের ওই দাবিকে সরাসরি নাকচ করে দিয়েছে।

সান ফ্রান্সিসকো’র বাসিন্দা মিজ আরভিং আরও জানান, উবার ড্রাইভাররা তাকে না নেওয়ায় কর্মস্থলে যেতেও তার দেরি হয়েছে। যেটি তার চাকরি থেকে বরখাস্ত হওয়াতেও ভূমিকা রেখেছে বলে তার  দাবি।

মিজ আরভিংয়ের এক মুখপাত্র বলেন: “এই রাইড শেয়ার বিপ্লবের ফলে যে সকল মার্কিনীর মুক্তির স্বাদ পাওয়ার কথা ছিল তাদের মধ্যে সবার আগে থাকার কথা ছিল দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের।”

“মোদ্দা কথা হচ্ছে, আমেরিকান প্রতিবন্ধী আইন বলছে, একজন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ব্যক্তি যদি গাইড কুকুর নিয়ে চলেন তবে তিনি যে যে জায়গায় যেতে পারেন সেখানে তার কুকুরকেও যেতে দিতে হবে।”

রয়ের পরপরই অবশ্য এক উবার মুখপাত্র বলেছেন, প্রতিষ্ঠানটি দৃষ্টি প্রতিবন্ধী যাত্রীদের যে সহায়তা দিয়েছে তাতে তারা গর্বিত।

“উবার আশা করে, অ্যাপ ব্যবহারকারী চালকরা সহায়ক প্রাণি সহই প্রতিবন্ধী যাত্রীদের সেবা দেবেন। এ বিষয়ে আমরা চালকদের নিয়মিত প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকি।”

তিনি আরও যোগ করেছেন, “আমাদের নিবেদিতপ্রাণ একটি দল প্রতিটি অভিযোগ খতিয়ে দেখে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করে।”

উবারের ওই দাবির সত্যতা অবশ্য মিজ আরভিংয়ের কাছে পাওয়া যায়নি। উবারে অভিযোগ করার পরও বন্ধ হয়নি চালকদের বৈষম্যমূলক আচরণ।

দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের দিক থেকে উবারের আইনি লড়াইয়ের মুখোমুখি হওয়ার ঘটনা এই প্রথম নয়।

২০১৪ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের সংগঠন ‘ন্যাশনাল ফেডারেশন অফ দ্য ব্লাইন্ড’ সাহায্যকারী কুকুর বিষয়ে উবারের বিরুদ্ধে মামলা করেছিল। ওই মামলা ২০১৭ সালে নিষ্পত্তি হয় যখন উবার মেনে নেয় যে, তারা যথাযথভাবে আইন মেনে চলবে এবং এ বিষয়ে প্রত্যেক চালককে প্রশিক্ষণ দেবে।

রায় পাওয়ার পর মি আরভিং বলেন, “এটা দুঃখজনক যে, ঘটনাটি এতোদূর গড়াতে হলো।”