ক্যাটাগরি

সামরিক জান্তার নিন্দায় তালি মিয়ানমারের বিক্ষোভকারীদের 

সোমবার সকালে বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ করার পর বিকালে একসঙ্গে তালি বাজিয়ে প্রতিবাদকারীরা সামরিক জান্তার বিরোধিতা করেছেন।

জান্তাবিরোধী আন্দোলনকারীদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে স্থানীয় সময় বিকাল ৫টায় বৃহত্তম শহর ইয়াঙ্গনের বিভিন্ন অংশে তালি বাজানো শুরু হয় বলে স্থানীয় বাসিন্দারা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন।  

প্রতিবাদের এক নেতা এই থিনজার মং ফেইসবুকে লিখেছেন, “এই তালি আমাদের পক্ষ থেকে সংখ্যালঘু জাতিগুলোর সশস্ত্র সংগঠন এবং ইয়াঙ্গনসহ মিয়ানারের জেন জেড তরুণদের প্রতি সম্মান জানানোর জন্য যারা এই বিপ্লবে লড়াই করছেন।”

পাঁচ মিনিট ধরে তালি বাজানোর আহ্বান জানিয়েছিলেন তারা।

আন্দোলনকারী একটি গোষ্ঠী জানিয়েছে, ১ ফেব্রুয়ারির পর থেকে অভ্যুত্থান বিরোধী প্রতিবাদ চলাকালে নিরাপত্তা বাহিনীগুলো অন্তত ৫৬৪ জনকে হত্যা করেছে, এদের মধ্যে ৪৭ জন শিশু রয়েছে।

এসব হত্যাকাণ্ড সত্ত্বেও প্রতিবাদকারীরা প্রতিদিন রাস্তায় নেমে আসছেন। প্রায়ই ছোট ছোট শহরে ছোট ছোট মিছিল নিয়ে বের হয়ে অং সান সু চির নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার ও সামরিক শাসন ফিরে আসার বিরোধিতা করছেন তারা।

কিছু বিক্ষোভকারী যাকে ‘বসন্ত বিপ্লব’ বলে অভিহিত করছেন সেই আন্দোলনের অংশ হিসেবে রাস্তায় রাস্তায় মিছিল, আইন অমান্য করে ধর্মঘট এবং বিদ্রোহ সংঘটিত করতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উদ্দীপনামূলক প্রচারণা চালাচ্ছেন প্রতিবাদকারীরা।

রাস্তার প্রতিবাদগুলো নিষ্ঠুরভাবে দমনের চেষ্টার পাশাপাশি সামরিক জান্তা ওয়্যারলেস ব্রডব্যান্ড ও মোবাইল ডেটা সার্ভিস বন্ধ করে দিয়ে এই আন্দোলন বন্ধ করার চেষ্টা করছে।  

সোমবার মধ্যাঞ্চলীয় সাগাইং অঞ্চলে নিরাপত্তা বাহিনী একটি প্রতিবাদ ভেঙে দেওয়ার সময় এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন বলে বার্তা সংস্থা মিয়ানমার নাও জানিয়েছে।

সোমবার সকালে আন্দোলনকারীরা মিয়ানমারের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করা ছবিতে দেখা গেছে, তারা সু চির ছবি ও আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপের আহ্বান জানানো প্ল্যাকার্ড বহন করছে।

ক্ষমতাসীন জান্তা এ পর্যন্ত দুই হাজার ৬৬৭ জন লোককে আটক করেছে বলে সোমবার আন্দোলনকারী গোষ্ঠী অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্স (এএপিপি) জানিয়েছে।  

জান্তা রোববার মিয়ানমারের প্রায় ৬০ জন সেলিব্রেটি, প্রভাবশালী সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারী, মডেল ও সংগীত শিল্পির বিরুদ্ধে উস্কানি দেওয়ার অভিযোগ এনেছে।   

২০১১ সালের আগ পর্যন্ত প্রায় অর্ধ শতাব্দী ধরে দৌর্দণ্ড প্রতাপে মিয়ানমার শাসন করছে দেশটির সামরিক বাহিনী। এখন অন্তত দুটি ফ্রন্টে সংখ্যালঘু জাতিগুলোর সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে তাদের ফের লড়াই শুরু হয়েছে। এতে দেশটি ক্রমবর্ধমান লড়াই ও বিশৃঙ্খলার কবলে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা বিশ্লেষকদের।