রোববার বিবিসির কাছে প্রিন্স হামজার পাঠানো দুইট ভিডিও প্রকাশের পর তাকে ‘গৃহবন্দি করে রাখার’ কারণ ব্যাখ্যায় এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী সাফাদি।
প্রধানমন্ত্রীর বরাত দিয়ে জর্ডানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা পেত্রার খবরে বলা হয়, প্রিন্স হামজা বিবিসির কাছে পাঠানো ভিডিওর মাধ্যমে তথ্য বিকৃত করতে এবং সহানুভূতি আদায় করতে চাইছেন।
রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে সাফাদি আরো বলেন, ‘‘প্রিন্স হামজা বিদেশিদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার চেষ্টা করছেন। বেশ কিছু সময় ধরে তার উপর নজর রাখা হয়েছিল।”

প্রিন্স হামজা নিজের আইনজীবীর মাধ্যমে রোববার বিবিসির কাছে পাঠানো দুইটি ভিডিওতে সরকারের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করার অভিযোগ অস্বীকার করেন। বরং সমালোচকদের দমনের অংশ হিসেবে তাকে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে বলে জানান। ওই ভিডিওতে তিনি দেশটির নেতাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অযোগ্যতা ও হয়রানির অভিযোগও তোলেন।
প্রিন্স হামজা জর্ডানের বাদশা আব্দুল্লাহর সৎ ভাই।
বিবিসি জানায়, কথিত একটি অভ্যুত্থান ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে শনিবার জর্ডানের উচ্চপদস্থ ১৬ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করার পর প্রিন্স হামজা বিবিসিকে ওই ভিডিওটি পাঠান। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে বাদশাহ আব্দুল্লাহর একজন সাবেক উপদেষ্টা এবং রাজপরিবারের আরেক সদস্য রয়েছেন।
প্রিন্স হামজা স্থানীয় বিভিন্ন গোষ্ঠীর নেতাদের সঙ্গে দেখা করার পর এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, এই নেতাদের মধ্যে হামজা কিছুটা সমর্থন আদায় করতে সক্ষম হয়েছিলেন।
যদিও প্রিন্স হামজাকে গৃহবন্দি করার কথা এর আগে অস্বীকার করেছিল জর্ডানের সামরিক বাহিনী।
হামজা জর্ডানের প্রয়াত বাদশা হুসেইন ও তার প্রিয় স্ত্রী রানি নূরের বড় ছেলে। যুক্তরাজ্যের হ্যারো স্কুল ও রয়্যাল মিলিটারি একাডেমি, স্যান্ডহার্স্টের গ্র্যাজুয়েট হামজা যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়েও পড়াশোনা করেছেন। তিনি জর্ডানের সশস্ত্র বাহিনীতেও দায়িত্বপালন করেছেন।
বাদশা হুসেইনের প্রিয় সন্তান হামজাকে ১৯৯৯ সালে জর্ডানের যুবরাজ ঘোষণা করা হয়েছিল। হুসেইনের মৃত্যুর পর হামজাকে কম বয়স ও অনভিজ্ঞ বিবেচনা করে উত্তরাধিকারী ঘোষণা করা হয়নি। তার বদলে আব্দুল্লাহ জর্ডানের বাদশা হন।
২০০৪ সালে বাদশা আব্দুল্লাহ হামজার যুবরাজ খেতাব কেড়ে নেন। এতে রানি নূর মর্মাহত হন, কারণ তিনি তার বড় ছেলেকে বাদশা হিসেবে দেখতে চেয়েছিলেন।
শনিবার রেকর্ড করা ভিডিওটিতে হামজা বলেন, “আজ সকালে জর্ডানের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান এসে আমাকে জানালেন আমার বাইরে যাওয়ার, লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করার বা তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার অনুমতি নেই। এর কারণ যে সব বৈঠকগুলোতে আমি উপস্থিত ছিলাম বা আমি যেসব জায়গায় গিয়েছি যেগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এসেছে সেখানে সরকারের বা বাদশার সমালোচনা করা হয়েছে।”
তিনি নিজে এ ধরনের কোনো সমালোচনা করেছেন, এমন অভিযোগ করা হয়নি বলে জানিয়েছেন তিনি।
Praying that truth and justice will prevail for all the innocent victims of this wicked slander. God bless and keep them safe.
— Noor Al Hussein (@QueenNoor) April 4, 2021