ক্যাটাগরি

‘লকডাউনে’ আদালত চলবে সীমিত পরিসরে

রোববার রাতে এ সংক্রান্ত
আলাদা তিনটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন।

এসব বিজ্ঞপ্তিতে বলা
হয়েছে, সোমবার থেকে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে ভার্চুয়াল উপস্থিতির মাধ্যমে শুধু আপিল
বিভাগের চেম্বার আদালত, হাই কোর্টের চারটি বেঞ্চ চালু থাকবে।

আর মুখ্য বিচারকি হাকিম
বা মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালত সীমিত পরিসরে চালু থাকবে, তবে সব অধস্তন আদালত বা ট্রাইব্যুনালের
কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।

আপিল বিভাগের রেজিস্ট্রার
মো. বদরুল আলম ভূঞার স্বাক্ষরে দেওয়া বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সোমবার থেকে আগামী ১১
এপ্রিল পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারকাজ সীমিত পরিসরে পরিচালিত হবে।
তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার করে শুধুমাত্র ভার্চুয়াল উপস্থিতির মাধ্যমে মঙ্গল ও বৃহস্পতিবার
সকাল ১১টা থেকে চেম্বার আদালত জরুরি বিষয়ে শুনানি করবে।

হাই কোর্টের বিজ্ঞপ্তিতেও
বলা হয়েছে- রিট, দেওয়ানী ও ফৌজদারী সংক্রান্ত একটি করে ডিভিশন বেঞ্চ এবং কোম্পানি অ্যাডমিরালটি
সংক্রান্ত আরও একটি বেঞ্চ অর্থাৎ মোট চারটি বেঞ্চে ভার্চুয়ালি শুনানি চলবে। সংশ্লিষ্ট
আদালত মামলার শুনানির তারিখ ও সময় নির্ধারণ করবে।    

এ বিজ্ঞপ্তিতে স্বাক্ষর
করেছেন সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. আলী আকবর।

আর হাই কোর্টের রেজিস্ট্রার
মো. গোলাম রব্বানীর স্বাক্ষরে দেওয়া বিজ্ঞপ্তিতে মুখ্য বিচারিক হাকিম বা মুখ্য মহানগর
বিচারিক হাকিম আদালতের কার্যক্রম সীমিত করার পাশাপাশি সব ধরনের অধস্তন আদালত বা ট্রাইব্যুনালের
কার্যক্রম পরিচালনা না করার সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়েছে।

তবে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতায়
প্রত্যেক মুখ্য বিচারিক হাকিম বা মুখ্য মহানগর বিচারিক হাকিম আদালতে একজন করে ম্যাজিস্ট্রেট
যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শারীরিক উপস্থিতিতে দায়িত্ব পালন করবেন।

এ বিজ্ঞপ্তিতে আরও
বলা হয়েছে, যেসব মামলার আসামিদের নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত জামিন দেওয়া হয়েছে বা যেসব
মামলায় উচ্চ আদালত থেকে অধস্তন আদালতে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আত্মসমর্পণের শর্তে জামিন
দেওয়া হয়েছে বা যেসব মামলায় নির্দিষ্ট সময়ের জন্য অন্তবর্তীকালীন আদেশ দেওয়া হয়েছে,
সেসব মামলার জামিন এবং সকল প্রকার অন্তবর্তী আদেশের কার্যকারিতা আগামী দুই সপ্তাহ পর্যন্ত
বাড়ানো হয়েছে।

অধস্তন আদালতের বিচারক
ও আদালতের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মস্থল ত্যাগ না করারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এ বিজ্ঞিপ্তিতে।

রোববার সকালে প্রধান
বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেছিলেন, করোনাভাইরাসের এ পরিস্থিতিতে সরকারের পক্ষ থেকে
কী ঘোষণা আসে, তা দেখে দেশের আদালত কিভাবে চলবে সে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ
নিয়ন্ত্রণে গত বছর ২৩ মার্চ প্রথমবার ‘সাধারণ ছুটি’ ঘোষণা দিয়েছিল সরকার। শুরুতে ২৬
মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত ‘ছুটি’ ঘোষণা হলেও পরে তার মেয়াদ বাড়ে কয়েক দফা।

সে সময় সরকারের সাধারণ
ছুটির সাথে সমন্বয় করে দেশের সব আদালতেও সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। কার্যত বন্ধ হয়ে
যায় দেশের বিচার ব্যবস্থা।

পরে সুপ্রিম কোর্টের
অনুরোধে মামলার বিচার, বিচারিক অনুসন্ধান, দরখাস্ত বা আপিল শুনানি, সাক্ষ্য বা যুক্তিতর্ক
গ্রহণ, আদেশ বা রায় দিতে পক্ষদের উপস্থিতি নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে আদালতকে তথ্য-প্রযুক্তি
ব্যবহারের ক্ষমতা দিয়ে গত বছর ৯ মে অধ্যাদেশ জারি করা হয়।

এরপর ১০ মে সুপ্রিম
কোর্ট ভিডিও কনফারেন্সসহ অন্যান্য ডিজিটাল মাধ্যমে আদালতের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য
‘প্র্যাকটিস’ নির্দেশনা জারি করে। সে নির্দেশনা মত তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে দেশের
সর্বোচ্চ আদালতসহ দেশের সব বিচারিক কার্যক্রম পরিচালিত হয়।

পরবর্তীতে করোনাভাইরাসের
সংক্রমণ কমতে থাকলে প্রথমে কিছু কিছু ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শারীরিক  উপস্থিতিতে নিম্ন আদালত চালু করা হয়। এক পর্যায়ে
শারীরিক উপস্থিতির মাধ্যমে হাই কোর্টেও চালু করা হয় কয়েকটি বেঞ্চ। পাশাপাশি ভার্চুয়াল
কোর্টও চালু থাকে।

রোববার পর্যন্ত দেশের
সর্বোচ্ আদালত অর্থাৎ আপিল বিভাগের দুটি বেঞ্চ এবং চেম্বার আদালত ভার্চুয়ালিই চলে।