গর্ভাবস্থায় সামান্য অসুখও বড় দুশ্চিন্তার
কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। এসময় নারীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অত্যন্ত দুর্বল থাকে।
শরীরের সমস্যা সারাতে ওষুধ গুরুত্বপূর্ণ
হলেও একজন গর্ভবতীর জন্য কিছু ওষুধ হতে পারে ক্ষতিকর।
এই ওষুধগুলো গর্ভের সন্তানের বেড়ে ওঠায়
বাধা সৃষ্টি করতে পারে। এমনকি সৃষ্টি করতে পারে বিকলাঙ্গতাও।
এজন্য গর্ভাবস্থায় যেকোনো ওষুধ খাওয়ার
আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
আর কোন ওষুধগুলো নিঃসন্দেহে বাদ দিতে
হবে সেগুলো জানানো হল স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন অবলম্বনে।
আইবুপ্রোফেন:
জ্বর সারাতে যে ওষুধগুলো সেবন করা হয় তাদের মধ্যে একাধিক ওষুধের ‘জেনেরিক’ নাম ‘আইবুপ্রোফেন’।
সুস্থ অবস্থায় এই ওষুধ নিরাপদ হলেও গর্ভবতী নারীর জন্য এই ওষুধ নিরাপদ নয়। প্রথমত,
গর্ভবস্থায় এই ওষুধ নিয়মিত সেবন করলে প্রজনন ক্ষমতা কমতে থাকে। এছাড়াও গর্ভের সন্তানের
হৃদযন্ত্র ও রক্তনালীর ক্ষতি করে এই ওষুধ।
অ্যাসপিরিন:
জ্বর-ঠাণ্ডা ও ব্যথার ওষুধ হিসেবে ‘অ্যাসপিরিন’ ধরনের ওষুধ বহুল ব্যবহৃত। তবে এটা গর্ভধারণের
প্রথম কয়েক সপ্তাহ গর্ভপাতের ঝুঁকি বাড়ায় বলে দাবি করেন বিশেষজ্ঞরা। এছাড়াও ‘প্লাসেন্টা
অ্যাবরাপশন’য়ের কারণ হতে পারে অ্যাসপিরিন।
গর্ভের সন্তানের বেড়ে ওঠার ওপরেও এই ওষুধের
ক্ষতিকর প্রভাব আছে। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া গর্ভাবস্থায় ‘অ্যাসপিরিন’ সেবন করা
যাবে না।
লিথিয়াম পিল: হতাশাগ্রস্ততা,
মানসিক অস্বস্তি, ‘বাইপোলার ডিজঅর্ডার’য়ের চিকিৎসায় ব্যবহার হয় ‘লিথিয়াম পিলস’। এই
ওষুধও গর্ভের সন্তানের শারীরিক ও মানসিক বিকাশের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। এছাড়াও দেখা
দিতে পারে বিকলাঙ্গতা ও গর্ভকালীন নানান সমস্যা।
লোরাজেপাম ও ক্লোনাজেপাম: ‘অ্যান্টি-অ্যাংজাইটি মেডিকেশন’য়ের তালিকায় এই দুই ধরনের ওষুধের
দেখা মেলে। এই ধরনের ওষুধের রাসায়নিক গঠনের কারণে তা গর্ভের সন্তানের মাঝে ‘উইড্রয়াল
সিম্পটোম’ নামক সমস্যা তৈরি করে। যাদের এই ওষুধগুলো নিয়মিত খেতে হয় তাদের উচিত চিকিৎসকের
সঙ্গে নিজের গর্ভাবস্থা নিয়ে আলোচনা করা।
গুয়াইফেনাসেন:
গর্ভবতী নারী সর্দিজ্বরে খুব সহজে আক্রান্ত হন। তবে তা সারাতে যেকোনো ওষুধ সেবনের আগে
সাবধান হতে হবে। জ্বর, সর্দি, কাশির ওষুধের একটি সাধারণ উপাদান ‘গুয়াইফেনাসেন’ যা গর্ভের
সন্তানের মাঝে বিভিন্ন জন্মগত সমস্যা তৈরি করতে পারে।
মলম, ক্রিম ও স্টেরয়েড ধরনের ওষুধ: শরীরের বিভিন্ন অংশে র্যাশ, ফোলাভাব, অ্যালার্জি ইত্যাদি
সবই গর্ভাবস্থার সাধারণ সমস্যা। আর সবগুলোর জন্যই ওষুধের প্রয়োজন। সব ধরনের মলম, ক্রিম,
লোশন যা ত্বকের বাহ্যিক অংশে ব্যবহার করা হয় তার সবই গর্ভাবস্থায় নিরাপদ। তবে চিকিৎসকের
পরামর্শ মাফিক ব্যবহার করা বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
ছবি: রয়টার্স।
আরও পড়ুন-