বুধবার দুপুরে সোনারগাঁ থানার পুলিশ কর্মকর্তা বাদী হয়ে দুটি
এবং হেফাজত নেতাকর্মীদের হামলায় আহত সাংবাদিক হাবিবুর রহমান বাদী হয়ে একটি মামলা করেন।
এর একটি মামলায় প্রধান আসামি হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব
মামুনুল হক।
সোনারগাঁ থানার ওসি হাফিজুর রহমান বলেন, হেফাজতের তাণ্ডবের ঘটনায়
সোনারগাঁ থানায় তিনটি মামলা গ্রহণ করা হয়েছে। এ মামলায় কয়েকশ’ জনকে আসামি করা
হয়েছে।
“সিসিটিভির ফুটেজ দেখে আসামি শনাক্ত করে নাম ঠিকানা
অর্ন্তভূক্ত করা হবে। এ ঘটনায় এজহারভূক্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।”
তবে তাদের পরিচয় জানায়নি পুলিশ।
পুলিশের কাজে বাধা, হামলা ও ভাংচুরের ঘটনায় সোনারগাঁ থানার
উপ-পরিদর্শক ইয়াউর রহমান বাদী হয়ে মামুনুল
হককে প্রধান আসামি করে ৪১ জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা করেন।
সন্ত্রাস বিরোধী আইনে আরিফ হাওলাদার বাদী হয়ে ৪২ জনের নাম
উল্লেখ করে অপর মামলাটি করেন। এসব মামলায় পাঁচ শতাধিক অজ্ঞাত আসামি রয়েছে।
এছাড়া গত শনিবার রিসোর্টে মামুনুল কাণ্ডের খবর সংগ্রহ করতে যাওয়া স্থানীয় সাংবাদিক
হাবিবুর রহমানের বাড়িঘর ভাংচুর ও মারধরের ঘটনায় ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ৭০-৮০ জনকে
আসামি করে মামলা করা হয়েছে।
গত শনিবার সোনারগাঁয়ে রয়েল রিসোর্টের এক রুমে নারীসহ হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম
মহাসচিব মামুনুল হককে নারীসহ অবরুদ্ধ করে স্থানীয়রা। ওই নারীর পরিচয় নিয়ে মামুনুলের
সঙ্গে তাদের তর্কাতর্কি হয়। পরে পুলিশ
গিয়ে মামুনুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করে।
তবে সে সময়ই হেফাজতের এক দল কর্মী ওই রিসোর্টে হামলা চালিয়ে তাদের
নেতাকে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে চলে যায়।
এ ঘটনার জেরে হেফাজতের নেতাকর্মীরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে
টায়ার জ্বালিয়ে অগ্নিসংযোগ করে। শতাধিক যানবাহন, স্থানীয় আওয়ামী লীগ কার্যালয়
ভাংচুর করে।
পুলিশ গিয়ে তাদেরকে মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে
হেফাজতের নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে। পুলিশ ৪ শতাধিক শর্টগান ও টিয়ারশেল ছুড়ে
তাদেরকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
এর আগে হেফাজত কর্মী মোহাম্মদ ফয়সাল বাদী হয়ে মামুনুল হককে
হেনস্থা করার অভিযোগে যুবলীগ-ছাত্রলীগের দুই নেতাসহ স্থানীয়দের বিরুদ্ধে সোনারগাঁয়
লিখিত অভিযোগ দেন।
এই উদ্ভুদ পরিস্থিতিতে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানার ওসি রফিকুল
ইসলামকে প্রত্যাহার করা হয়। একই সঙ্গে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) টিএম মোশাররফ
হোসেনকে বদলি করা হয়েছে।