আইপিএলের গত আসরের আগে নিলামে ম্যাক্সওয়েলকে ১০ কোটি ৭৫ লাখ রুপিতে দলে টানে কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব। তিনি পারেননি পারফরম্যান্সে সেই পারিশ্রমিকের প্রতিদান দিনে। ১১ ইনিংস ব্যাট করে রান করতে পারেন মোট ১০৮, স্ট্রাইক-রেট কেবল ১০১.৮৮। অকল্পনীয়ভাবে, পুরো আসরে একটি ছক্কাও মারতে পারেননি!
গতবারই শুধু নয়, অস্ট্রেলিয়ার হয়ে টি-টোয়েন্টিতে দুর্দান্ত পারফর্ম করলেও আইপিএলে তিনি বরাবরই ব্যর্থ। টুর্নামেন্টের ৮ আসর মিলিয়ে ৮২ ম্যাচে তার রান মাত্র ১ হাজার ৫০৫। গড় ২২.০১৩। ফিফটি মোটে ৬টি। উইকেট নিতে পেরেছেন ১৯টি।
কেবলমাত্র ২০১৪ আসরেই তিনি জ্বলে উঠতে পেরেছিলেন। সেবার ৩৪.৫০ গড়ে চার ফিফটিতে ৫৫২ রান করেছিলেন ১৮৭.৭৫ স্ট্রাইক-রেটে। এছাড়া আর কোনো আসরে নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি। সবশেষ তিন আসর মিলিয়ে ৩৯ ম্যাচ খেলেও নেই কোনো ফিফটি।
গত আসরের ব্যর্থতার পর ভারতীয় কিংবদন্তি বিরেন্দর শেবাগ বলেছিলেন, ১০ কোটি নয়, ম্যাক্সওয়েলের দাম হওয়া উচিত বড়জোর ১-২ কোটি রুপি। তার পরও ঠিকই নিলামে তাকে নিয়ে কাড়াকাড়িতে দাম ছাড়িয়েছে ১৪ কোটি। এবারই শুধু নয়, টানা ব্যর্থতার পরও আগে নানাসময়ে ১০ লাখ ডলার, ১৭ লাখ ডলারের মতো পারিশ্রমিকে দল পেয়েছেন তিনি। মূল কারণ, তার ম্যাচ জেতানোর ক্ষমতা। নিজের দিনে গুঁড়িয়ে দিতে পারেন যে কোনো বোলিং আক্রমণ।
প্রত্যাশার প্রতিদান দিতে পারেননি বলেই শেষ পর্যন্ত থিতু হতে পারেননি কোনো দলে। বেঙ্গালোর তার চতুর্থ আইপিএল দল। উচ্চমূল্যের কারণে যথারীতি এবারও তার পারফরম্যান্সে নজর থাকবে সবার।
তবে বেঙ্গালোরের ইউটিউব চ্যানেলে সাক্ষাৎকারে ম্যাক্সওয়েল বললেন, প্রত্যাশার ভার নিয়ে তিনি খুব ভাবিত নন।
“ আমি সম্ভবত লক্ষ্য ঠিক করি না। নিজেকে নিয়ে ভাবি, দলে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে চাই। সেটা পারফরম্যান্স দিয়ে হতে পারে, আচরণ দিয়ে হতে পারে, এমনকি ফিল্ডিং অনুশীলন দিয়েও সাহায্য করতে পারি যেন পুরো স্কোয়াডের, দল হিসেবে উন্নতি দেখা যায়।”
“অবশ্যই আমরা টুর্নামেন্ট জিতে চাই। তবে আমি চাই, যা কিছুই করি না কেন, দলে যেন ইতিবাচক প্রভাব পড়ে। আমি তাই খুব চিন্তিত নই (পারফরম্যান্স নিয়ে)। পারফরম্যান্স আপনাআপনিই হবে।”
আইপিএলে বরাবরই তারকাবহুল ও বড় বাজেটের দল গড়েও এখনও শিরোপার স্বাদ পায়নি বেঙ্গালোর। বিরাট কোহলি, এবি ডি ভিলিয়ার্সদের দল ব্যাটিংয়ের আগ্রাসন আরও বাড়িয়েছে এবার ম্যাক্সওয়েলকে নিয়ে। সঙ্গে ১৫ কোটি রুপিতে তারা দলে নিয়েছে নিউ জিল্যান্ডের পেসার কাইল জেমিসনকে। বলার অপেক্ষা রাখে না, শিরোপা ছাড়া অন্য কিছু ভাবছে না দলটি।
তবে ম্যাক্সওয়েলের নিজের চাওয়া, নানাভাবে দলে অবদান রাখা। নিজের অভিজ্ঞতা তরুণদের সঙ্গে ভাগাভাগি করতে চান তিনি।
“ খেলাটায় আরও অনেক কিছু (পারফরম্যান্স ছাড়াও) আছে। সম্ভবত ভারতে এটা আমার ২২তম সফর। আমার যা অভিজ্ঞতা, দলে অন্যদের সাহায্য করতে পারা উচিত আমার। কাইল জেমিসনের যেমন প্রথম ভারত সফর, আমি তাই তার খাবারসহ সবকিছুতে মানিয়ে নেওয়ায় সহায়তা করতে পারি আগের অভিজ্ঞতা থেকে। সিনিয়রদের দায়িত্ব অন্যদের সাহায্য করা।”
টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচে শুক্রবার মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের মুখোমুখি হবে ম্যাক্সওয়েলদের বেঙ্গালোর।