বৃহস্পতিবার বিকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আগের ২৪ ঘণ্টায় কোভিড-১৯ আক্রান্ত ৭৪ জনের মৃত্যুর তথ্য জানায়।
গত বছরের মার্চে বাংলাদেশে মহামারীর প্রাদুর্ভাবের পর এক দিনে এত মৃত্যু আর কখনও ঘটেনি। এনিয়ে মোট মৃত্যু ৯ হাজার ৫২১ জনে দাঁড়াল।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বুলেটিনে দেখা যায়, মৃত ৭৪ জনের মধ্যে ৪৬ জনেরই বয়স ষাটের উপরে। ১৬ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে। বাকিদের বয়স এর চেয়ে কম। ২০ বছরের নিচে কারও মৃত্যু হয়নি গত এক দিনে।
মোট মৃত্যুর পরিসংখ্যানেও বয়স্করা ঝুঁকিতে রয়েছে; ৯ হাজার ৫২১ জনের মধ্যে ৫ হাজার ৩৪৯ জনই ষাটোর্ধ্ব; যা শতকরা হিসেবে ৫৬ দশমিক ১৮ শতাংশ।
২০১৯ সালের শেষের দিকে উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী নতুন করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে বয়োবৃদ্ধ এবং অন্যান্য রোগে ভোগা ব্যক্তিদের মৃত্যু ঝুঁকিই সবচেয়ে বেশি বলে পরের বছর চীনের স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের করা এক বিস্তৃত গবেষণাতেও উঠে এসেছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের ‘সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল এন্ড প্রিভেনশন’ (সিডিসি) এর তথ্যানুযায়ী, ১৮ থেকে ২৯ বছর বয়সীদের তুলনায় ৬৫ থেকে ৭৪ বছর বয়সীদের ক্ষেত্রে করোনাভাইরাসে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার মতো জটিলতা দেখা দেওয়ার ঝুঁকি পাঁচ গুণ বেশি। আর অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতার ক্ষেত্রে এই ঝুঁকি তিনগুণ বেশি।
মানুষের দেহে অন্য কোনও রোগ (যেমন কিডনি সমস্যা, ডায়াবেটিস, ক্যান্সার প্রভৃতি) থাকলে সেক্ষেত্রেও করোনাভাইরাস সংক্রমণ জটিল আকার ধারণ করতে পারে বলে সতর্ক করছেন বিশেষজ্ঞরা।
করোনাভাইরাস: বয়স্ক ও অসুস্থরাই বেশি ঝুঁকিতে
বিষণ্নতা ও স্মৃতিভ্রংশের ঝুঁকি বাড়ায় কোভিড: গবেষণা
বাংলাদেশে গত বছর ৮ মার্চ করোনাভাইরাসের প্রথম প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর প্রথম মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছিল সরকার। এ বছর ৩১ মার্চ তা ৯ হাজার ছাড়িয়ে যায়।
গত বছরের শেষ দিকে রোগীর সংখ্যা কমে এলেও সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ে গত মার্চের শেষ ভাগ থেকে সংক্রমণ আবার বাড়তে শুরু করেছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে মৃত্যুও।
নাগরিকদের স্বাস্থ্যবিধি মানতে অবহেলা আর বিশেষজ্ঞদের উদ্বেগের মধ্যেই গত এক সপ্তাহ ধরে সংক্রমণ ও মৃত্যুর আগের সব রেকর্ড ভেঙে যাচ্ছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ২০ শতাংশের বেশি, যা এক মাস আগেও ৫ শতাংশের নিচে ছিল।
যারা করোনাভাইরাসে মারা যাচ্ছেন, তাদের মধ্যে পুরুষের সংখ্যাই বেশি। এখন পর্যন্ত দেশে মোট মৃত্যুর মধ্যে ৭ হাজার ১০০ জনই পুরুষ; যা ৭৪ দশমিক ৮৯ শতাংশ।
নারী মৃত্যুর হার তুলনামূলক কম। ২ হাজার ৩৯১ জন নারী মারা গেছে করোনাভাইরাস সংক্রমণে; যা শতকরা হিসেবে ২৫ দশমিক ১১ শতাংশ।
করোনাভাইরাস: পুরুষের মৃত্যুঝুঁকি যে কারণে বেশি
করোনাভাইরাস: মাস্কে অনীহা কেন পুরুষের?
অঞ্চলভিত্তিক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, এই পর্যন্ত মৃতদের ৫৭ শতাংশই ঢাকা বিভাগের। এর পরে রয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগে ১৭ শতাংশ। অন্য বিভাগগুলোতে মৃত্যুর হার ৭ শতাংশের নিচে। সবচেয়ে কম ময়মনসিংহ বিভাগে।