টিকার চালান সময়মতো সরবরাহ করতে না পারায় এই নোটিস পেয়েছে সেরাম, যা ভারতের গণমাধ্যম জানিয়েছে।
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় উদ্ভাবিত টিকাটি বাজারজাত করছে ব্রিটিশ-সুইডিশ কোম্পানি অ্যাস্ট্রাজেনেকা। তারা সেরামকে দিয়ে টিকা তৈরি করাচ্ছে।
বিশ্বের সবচেয়ে বড় টিকা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সেরামের প্রধান নির্বাহী আদর পূনাওয়ালা এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “অ্যাস্ট্রাজেনেকা আমাদের একটি আইনি নোটিস পাঠিয়েছে (টিকা সরবরাহে দেরির কারণে) এবং আর ভারত সরকার বিষয়টি সম্পর্কে জানে।”
মঙ্গলবার ভারতের বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি আরও বলেন, “আইনি নোটিসের বিষয়ে আমি মন্তব্য করতে পারছি না, কারণ এর সঙ্গে গোপনীয়তার নীতি জড়িত। তবে সদ্ভাব বজায় রেখে বিষয়টি সুরাহা করার জন্য আমরা সম্ভাব্য সব পথই বিবেচনা করে দেখছি।”
তিনি জানান, অন্য দেশে টিকা রপ্তানির ক্ষেত্রে ভারত সরকারের স্থগিতাদেশ এবং ভারত সরকারের সঙ্গে তাদের ‘প্রথম দাবি’ বিষয়ক চুক্তির কারণে টিকা সরবরাহে দেরি হচ্ছে এবং বিষয়টি বিদেশিদের কাছে ব্যাখ্যা করাটাও দুরূহ, যে বাজারে তারা বেশি দামে এই টিকা বিক্রি করছেন।
পূনাওয়ালা বলেন, “বিদেশে টিকা রপ্তানির চুক্তি পূরণের আইনি জটিলতা মীমাংসার চেষ্টা চলছে। সেরাম ইনস্টিটিউট ভারতের বাজারে প্রথমে টিকা সরবরাহে অগ্রাধিকার দিতে গিয়ে সময়মতো অন্য দেশে টিকার চালান পাঠাতে পারছে না। তবে এ পর্যন্ত সবপক্ষই পরিস্থিতি বুঝতে চেষ্টা করেছে। ভারত সরকারও এই জটিলতা কীভাবে কাটিয়ে ওঠা যায় সেটা পর্যালোচনা করে দেখছে।”
ভারত থেকে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা রপ্তানি ‘সাময়িকভাবে স্থগিত’
এনডিটিভিকে তিনি বলেন, “কোভিশিল্ড উৎপাদনে সেরামের সর্বোচ্চ সক্ষমতা ব্যবহার করা হচ্ছে। বিশ্ব এই টিকা চাচ্ছে এবং আমরা এ মুহূর্তে ভারতের চাহিদাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছি। চাহিদার তুলনায় সরবরাহে আমরা পিছিয়ে পড়েছি … এমনকি প্রত্যেক ভারতীয়র জন্যও টিকা নিশ্চিত করা এখনই সম্ভবপর হচ্ছে না।”
সেরামের প্রধান নির্বাহী জানান, তাদের প্রতিষ্ঠান মাসে ৬ থেকে সাড়ে ৬ কোটি ডোজ টিকা উৎপাদন করে চলেছে। তারা এ পর্যন্ত ১০ কোটি ডোজ টিকা ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারকে দিয়েছে এবং ৬ কোটি ডোজ টিকা রপ্তানি করেছে।
পূনাওয়ালা আরও জানান, জুনের মধ্যে এসআইআই-এর উৎপাদন সক্ষমতা বাড়াতে তিন হাজার কোটি রুপি প্রয়োজন।
ভারত সরকারকে কম দামে টিকা সরবরাহ করার কথা জানিয়ে তিনি দাবি করেন, তারা অনেক বেশি মুনাফা আসলে করছেন না, যেটা মূলত পুনর্বিনিয়োগ হিসেবে কাজে আসতে পারত।
বিনিয়োগের প্রয়োজনীয়তা জানিয়ে এরইমধ্যে ভারত সরকারকে চিঠি দেওয়া হয়েছে বলেও জানান সেরামের কর্ণধার।
“প্রাথমিক পরিকল্পনায় এতো বেশি উৎপাদন সক্ষমতার লক্ষ্য রেখে বাজেট করা হয়নি। আমাদের মূলত লক্ষ্য ছিলো টিকা রপ্তানি করা এবং অন্যান্য দেশ থেকে বিনিয়োগের প্রয়োজনীয় অর্থ সংস্থান করা। কিন্তু সেটা এখন আর হচ্ছে না। উৎপাদন সক্ষমতা বাড়াতে এখন আমাদের অন্য উপায় ভাবতে হবে।”
অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা যুক্তরাজ্যে ৩০ এর কম বয়সীদের না নেওয়ার পরামর্শ