ক্যাটাগরি

এডিএইচডি: গুরুত্ব না দেওয়ার পরিণাম

‘অ্যাটেনশন
ডেফিসিট হাইপার অ্যাক্টিভিটি ডিজওর্ডার’কে সংক্ষেপে বলা হয় এডিএইচডি।

বিশ্বব্যাপি
অসংখ্য শিশু এই রোগের আক্রান্ত হয় এবং পরিণত বয়সেও তা ভোগাতে থাকে। মানসিক এই রোগে
আক্রান্তদের মাঝে স্বাভাবিকের চাইতে বেশিমাত্রায় চঞ্চলতা এবং জেদ দেখা যায়।

কোনো
একটি কাজে তারা মনযোগ ধরে রাখতে পারে না, পরিণতি নিয়ে চিন্তা না করেই সিদ্ধান্ত নেয়।
যে কোনো কাজে প্রচণ্ড তাড়াহুড়া করে। ফলে একসময় তাদের আত্মমর্যাদাবোধ কমে যায়, সম্পর্কে
টানাপোড়ন সৃষ্টি করে এবং শিক্ষাজীবনে পদে পদে ব্যর্থতার সম্মুখীন হতে হয়।

কোনো
চিকিৎসাতেই এই রোগ থেকে মুক্তি নাও মিলতে পারে, ফলে সেটা হয়ত কারও সারা-জীবনের সঙ্গী
হয়ে উঠবে।

তবে
সঠিক পদক্ষেপ সময় মতো নেওয়া হলে বয়স বাড়ার সঙ্গে সমস্যা তীব্রতা কমতে পারে।

প্রাথমিক
অবস্থায় রোগ শনাক্ত করে ওষুধ ও আচরণগত পরিবর্তন আনার মাধ্যমে একে নিয়ন্ত্রণে আনতে হয়।
তবে না করলে একজন মানুষের ব্যক্তিগত ও কর্মজীবন সবই ধ্বংস হতে বাধ্য।

স্বাস্থ্যবিষয়ক
একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনের আলোকে জানানো হলো এডিএইচডি নিয়ন্ত্রণে আনতে না
পারার পরিণতি সম্পর্কে।

মনযোগের অভাব:
এডিএইচডি’তে আক্রান্তদের প্রধান সমস্যা হল মনযোগের অভাব। একটি কাজে তারা শেষ পর্যন্ত
মনযোগ রাখতে পারে না। ফলে কোনো কাজেরই সমাপ্তি ঘটে না। অপরদিকে কিছু কাজে অতিরিক্ত
মনযোগী হতে দেখা যায় এই রোগীদের।

অন্যমনস্কতা: এই
রোগে আক্রান্ত শিশুরা বিদ্যালয়ে গিয়ে শ্রেণিকক্ষে স্থির হয়ে বসতে পারেনা। ফলে শ্রেণিকক্ষের
সবচাইতে চঞ্চল ছাত্রছাত্রী হিসেবে তাদের পরিচিতি থাকে। চঞ্চল থাকলেও তাদের মন কিন্তু
পড়াশোনায় থাকে না, দিবাস্বপ্ন আর কল্পনার জগতেই তাদের সদা বিচরণ। এই উপসর্গ ছেলেদের
তুলনায় মেয়েদের মাঝে বেশি দেখা যায়। ফলে শিক্ষাজীবনে তাদের যে বড় ঘাটতি তৈরি হয় তা
পরিণত বয়সে বোঝা হয়ে দাঁড়ায়।

বেপরোয়া আচরণ:
বাড়ন্ত বয়সে প্রায় সব শিশুই বেপরোয়া আচরণ করে। তবে এডিএইচডি’তে আক্রান্ত শিশুর বেপরোয়া
আচরণ হয় অস্বাভাবিক পর্যায়ে।

হঠাৎ
তারা প্রচণ্ড রাগী ও জেদি হয়ে ওঠে, তখন তাদের সামলানো মুশকিল হয়ে পড়ে। নিজেদের আবেগের
প্রতি তাদের কোনো নিয়ন্ত্রণ থাকে না। এসময় তারা যে কাজগুলো করে তা নিজের এবং আশপাশের
অনেকের জন্যই ক্ষতির কারণ হয়ে ওঠে।

সম্পর্ক বজায় রাখতে ব্যর্থতা:
সামাজিক জীবনের যেকোনো সম্পর্ক বজায় রাখতে এই রোগ আক্রান্ত মানুষগুলোর প্রচণ্ড বেগ
পেতে হয়। এমন নয় যে তারা মানুষের সঙ্গে আলাপচারিতায় অক্ষম। বরং আলাপচারিতায় তারা অন্যদের
থেকেও সুমিষ্ট হতে পারে। তবে আকস্মিক কিছু আচরণের জন্য তাদের সম্পর্কগুলো নষ্ট হয় প্রায়শই।

কর্মক্ষেত্রে অস্থিরতা:
চাকরি বদলানো কর্মজীবনে উন্নয়নের একটি অংশ। তবে এডিএইচডি’তে আক্রান্ত ব্যক্তির চাকরি
বদলানোর প্রবণতা এত বেশি যে একসময় সেই অভ্যাসটাই তাদের কর্মজীবনের কাল হয়ে দাঁড়ায়।
এর পেছনে কারণ হল এক কাজে মনযোগ হারানো। এতে কাজে যেমন তারা পটু হতে পারে না তেমনি
দ্রুত কাজ বদলানোর কারণে কর্মকর্তাদের আস্থাভাজনও হয় না।

ছবি: রয়টার্স।

আরও পড়ুন-

যে কারণে ফোন থেকে হাত সরে না
 

গড়িমসির অভ্যাস ত্যাগ করতে করণীয়
 

বেশি চাপে সন্তানের ক্ষতি
 

সন্তানের হতাশাগ্রস্ততা বোঝার পন্থা