ড. অ্যালিসন অ্যাসটেলস বলছেন, তার ভাইয়ের ঘটনাটি ‘দুর্ভাগ্যজনক’,
কিন্তু করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষায় সবারই উচিৎ টিকা নেওয়া।
অক্সফোর্ডের গবেষকদের উদ্ভাবিত অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা
নেওয়ার আহ্বানই তিনি জানিয়েছেন বলে ব্রিটিশ সংবাদপত্র গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা
হয়েছে।
করোনাভাইরাস মহামারীর এক বছর পেরিয়ে চলতি বছর মানুষ এই
জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অস্ত্র হিসেবে পেয়েছে টিকা। কয়েকটি টিকা ইতোমধ্যে উদ্ভাবিত
হয়েছে।
ব্রিটিশ-সুইডিশ কোম্পানি অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা কোভিশিল্ড
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রয়োগ চলছে। শুধু ইউরোপের দেশগুলোতেই আড়াই কোটি ডোজ টিকা দেওয়া
হয়েছে।
ইউরোপে মার্চ নাগাদ কোভিশিল্ড টিকা নেওয়া ৭৯ জনের মধ্যে
রক্ত জমাট বাঁধার লক্ষণ দেখা গেছে। এর মধ্যে ১৯ জনের মৃত্যু ঘটেছে। তারই একজন ৫৯ বছর
বয়সী নেইল অ্যাসটেলস।
গত ১৭ মার্চ কোভিশিল্ড টিকার প্রথম ডোজ নেওয়ার কয়েক সপ্তাহের
মাথায় মৃত্যু ঘটে নেইলের। তার প্রচণ্ড মাথাব্যথা ছিল, শেষ দিকে তিনি কিছুই দেখছিলেন
না।
নেইলের বোন ইউনিভার্সিটি অব হার্ডেসফিল্ডের ফার্মাসির শিক্ষক
অ্যালিসন বলেন, তার ভাইটি ছিলেন ‘খুবই দুর্ভাগা’। কারণ টিকা নেওয়ার পর খুব কম লোকেরই
মৃত্যু হয়েছে।
তিনি বলেন, নেইলের মৃত্যুর কারণ এখনও পুরোপুরি নিশ্চিত
হওয়া না গেলেও হাসপাতালের চিকিৎসকদের ধারণা, টিকা নেওয়ার পর তার মস্তিস্কে রক্ত জমাট
বেঁধেছিল।
অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা কোভিশিল্ড। ছবি: রয়টার্স
ভাইয়ের এই ঘটনার পরও সবাইকে টিকা নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে
অ্যালিসন বলেন, “একজন ফার্মাসিস্ট হিসেবে আমি জানি ওষুধের নিরাপত্তার বিষয়টি, আমি জানি
টিকা নেওয়ার কারণে মৃত্যুর ঝুঁকি কতটা কম।”
তার ভাইয়ের টিকা না নেওয়াই কি ঠিক হত বলে মনে করেন- এমন
প্রশ্নে তিনি বলেন, “এর উত্তর দেওয়া এত সহজ নয়।
“একজন ফার্মাসিস্ট হিসেবে আমি বুঝি, কোনো ওষুধই শতভাগ নিরাপদ
নয়। যে কোনো ওষুধের ঝুঁকি ও উপকার থাকে। আর তা হিসাব করেই আমাদের সেটা নিতে হয়।”
এই কারণে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার প্রতি আস্থা না হারাতে
সবাইকে আহ্বান জানিয়ে অ্যালিসন বলেন, “আমার পরিবারে যা ঘটেছে, তারপরও আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস
করি, সবার অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা নেওয়া উচিৎ, দুই ডোজই।”
টিকা নিতে কেউ যেন ভয় না পান, সেই অনুরোধ রেখেছেন তিনি।
আর টিকা নেওয়ার পর কারও কোনো সমস্যা দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শও
দিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন
অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা যুক্তরাজ্যে ৩০ এর কম বয়সীদের না নেওয়ার পরামর্শ