শুক্রবার কাশিয়ানী উপজেলার ওড়াকান্দি ঠাকুরবাড়িতে এই উৎসব হয়। তবে স্নানোৎসব ঘিরে এবার মেলা হয়নি।
গত ১লা এপ্রিল কাশিয়ানী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে আয়োজিত জরুরি সভায় জনসমাগম এড়াতে ওড়াকান্দিতে স্নানোৎসব ও বারুণী মেলা বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয় প্রশাসন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শুক্রবার ভোর থেকে দেশের নানা প্রান্ত থেকে হাজার হাজার পুণ্যার্থী ওড়াকান্দি ঠাকুরবাড়িতে সমবেত হয়।
শ্রীধাম ওড়াকান্দি ঠাকুরবাড়িতে শুক্রবার ভোর থেকে বাস, ট্রাক, নছিমন, ইজিবাইক, অটোভ্যানসহ বিভিন্ন যানবাহনে এবং হেঁটে দেশের বিভিন্ন জেলা এবং আশপাশের স্থান থেকে দলে দলে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ আসে।
কামনাসাগর ও দুধসাগর পুকুরপাড়ে স্নান করতে আসা মানুষের উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে। সেখানে কেউ শারিরীক দূরত্ব মানেনি কিংবা কারও মুখে মাস্ক ছিল না।
বাংলাদেশ মতুয়া মহামিশনের সভাপতি মতুয়াচার্য্য পদ্মনাভ ঠাকুর বিপুল সমাগমের কথা স্বীকার করে বলেন, “করোনা পরিস্থিতিতে জনসমাগম ঠেকাতে আমরা স্নানোৎসবে ভক্তদের আসতে বারণ করে দিয়েছি। কিন্তু ভক্তরা আবেগী হয়ে বাধা উপেক্ষা করে স্নানোৎসবে যোগ দিতে ঠাকুর বাড়ি এসেছেন। সেক্ষেত্রে আমাদের কী করার আছে।”
কাশিয়ানী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা-ইউএনও রথীন্দ্রনাথ রায় বলেন, “পুলিশ দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি। পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক রয়েছে।”
কাশিয়ানী থানার ওসি মো. আজিজুর রহমানে সঙ্গে কথা বলার জন্য একাধিকবার ফোন করলেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
দুইশ বছর ধরে শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুরের জন্মতিথি উপলক্ষে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার ওড়াকান্দিতে স্নানোৎসব ও তিন দিনব্যাপী বারুণী মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এ বছর হরিচাঁদ ঠাকুরের ২১০তম জন্মতিথি।
খুলনার কপিলমুনিতে বারুণী স্নান অনুষ্ঠিত
খুলনার কপিলমুনির কালীবাড়ি ঘাটে কপোতাক্ষ নদে স্নানোৎসবে পুণ্যার্থীরা
করোনামহামারীর মধ্যে খুলনার কপিলমুনিতেও বরাবরের মতো বারুণী স্নান অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্রবার সকাল ৭টায় কপিলমুনির কালীবাড়ী ঘাটের কপোতাক্ষ নদে স্নানের মধ্য দিয়ে চারশ বছরেরও বেশি সময়ের ঐতিহ্যবাহী এই স্নানোৎসব হয়।
প্রতিবছর চৈত্র মাসের কৃষ্ণা ত্রয়োদশী তিথিতে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা এই স্নানোৎসব পালন করেন।
কপিলমুনি ইউপি চেয়ারম্যান কওছার আলী জোয়াদ্দার জানান, এই স্নানোৎসবকে ঘিরে কপিলমুনিতে বারুণী মেলা অনুষ্ঠিত হওয়ার প্রচলন ছিল। মেলা চলত এক সপ্তাহ থেকে শুরু করে পক্ষকাল কিংবা ২০/২৫ দিন বা ১ মাস পর্যন্ত।
তবে স্থানীয়দের সমন্বয়হীনতা, জায়গার অভাবসহ নানা কারণে কয়েক বছর ঐতিহ্যবাহী বারুণী মেলা বন্ধ রয়েছে বলে তিনি জানান।