বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসের রোজ গার্ডেনে দেওয়া ভাষণে তিনি বলেন, বন্দুক সহিংসতা এ দেশে মহামারী। এটি আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও যুক্তরাষ্ট্রকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলে।
বিবিসি লিখেছে, নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে নতুন পদক্ষেপ নেওয়ায় প্রেসিডেন্টকে এখন আর কংগ্রেসের অনুমোদন নিতে হবে না।
নির্দিষ্ট ধরনের বন্দুকের জন্য বিধি প্রণয়ন, ব্যাকগ্রাউন্ড যাচাই জোরদার ও স্থানীয় সহিংসতা প্রতিরোধের চেষ্টা থাকবে এই পদক্ষেপে।
“তবে যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের দ্বিতীয় সংশোধনীতে প্রত্যেক নাগরিকের অস্ত্র বহনের অধিকার সুরক্ষিত থাকায় এবং অস্ত্র নিয়ন্ত্রণের আইনকে অনেকেই তাদের সাংবিধানিক অধিকারের ওপর আঘাত বিবেচনা করায় বাইডেনের জন্য অনিবন্ধিত অস্ত্রের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া বেশ কষ্টসাধ্য হয়েই দাঁড়াবে।”
রোজ গার্ডেনে দেওয়া ভাষণে বাইডেন বলেছেন, বন্দুক প্রতিদিন যুক্তরাষ্ট্রে ১০৬ জনের প্রাণ কেড়ে নেয়।
“এটা মহামারী, এটাকে থামাতেই হবে,” বলেছেন তিনি।
তার এ ভাষণের আগের দিনই সাউথ ক্যারোলাইনায় সন্দেহভাজন এক বন্দুকধারীর হামলায় দুই শিশুসহ ৫ জন নিহত হয়েছে। সন্দেহভাজন হামলাকারী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ফুটবল লীগের (এনএফএল) সাবেক খেলোয়াড় ফিলিপ অ্যাডামসের নাম বলছে দেশটির গণমাধ্যমগুলো।
বাইডেন সাউথ ক্যারোলাইনায় নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
তার ভাষণের কয়েক ঘণ্টা পর টেক্সাসে এক বন্দুকধারীর হামলায় একজন নিহত ও অন্তত ৫ জন আহত হয়েছে।
মার্চে কলোরাডো ও জর্জিয়ায় আরও দুটি ‘ম্যাস শুটিংয়ের’ ঘটনায় প্রাণ গেছে ১৮ জনের।
বাইডেনের নির্বাহী আদেশের ফলে মার্কিন বিচার বিভাগকে এখন ৩০ দিনের মধ্যে ‘ভুতুড়ে অস্ত্রের’ সংখ্যা কমিয়ে আনতে সহায়তা করবে এমন একটি বিধিবিধান প্রস্তাব করতে হবে।
বিবিসি জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে এখন যে কেউ আলাদা আলাদা অংশ কিনে সেগুলোকে জোড়া দিয়ে সহজেই ‘ভুতুড়ে অস্ত্র’ বানিয়ে ফেলতে পারে; এসব অস্ত্রের কোনো সিরিয়াল নম্বর না থাকায় সেগুলো শনাক্তও করা যায় না।
বন্দুকের আলাদা আলাদা অংশ বা ‘কিট’ কেনার ক্ষেত্রেও যুক্তরাষ্ট্রে ক্রেতার অতীত খতিয়ে দেখার বাধ্যবাধকতা নেই।
“অপরাধী থেকে সন্ত্রাসী, যে কেউই এসব কিট কিনে ৩০ মিনিটেরও কম সময়ের মধ্যে একটি অস্ত্র বানিয়ে ফেলতে পারে,” ভাষণে বলেছেন বাইডেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রে সংঘটিত অপরাধে এ ধরনের ‘হোমমেইড’ অস্ত্রের ব্যবহার বাড়ছে। কেন্দ্রীয় আগ্নেয়াস্ত্র কর্মকর্তাদের তথ্য অনুযায়ী, লস এঞ্জেলেসে এখন যত বন্দুক জব্দ হয় তার মধ্যে ৪০ শতাংশেরও বেশি থাকে এসব ‘ভুতুড়ে অস্ত্র’।
নির্বাহী আদেশ ছাড়া কংগ্রেসের অনুমোদনের মাধ্যমে অস্ত্র নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা নেওয়া বাইডেনের জন্য বেশ কঠিন। মার্কিন সেনেটে এ ধরনের কোনো আইন পাসে অন্তত ৬০ সেনেটরের সমর্থন লাগবে।
কংগ্রেসের উচ্চকক্ষে এখন ডেমোক্র্যাট-রিপাবলিকানদের ব্যবধান মোটাদাগে ৫০-৫০; অর্থ্যাৎ অস্ত্র নিয়ন্ত্রণে কোনো আইন পাসে বাইডেনকে ডেমোক্র্যাট সেনেটরদের সবার পাশাপাশি রিপাবলিকান একটি অংশেরও সমর্থন লাগবে। রিপাবলিকানরা অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইনের বিরুদ্ধে থাকায় এ ধরনের সমর্থন পাওয়া তার জন্য মোটেও সহজ হবে না।