ঘরোয়া ক্রিকেটে শুভাগত
ব্যাটিং প্রধান অলরাউন্ডারই। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও পা রেখেছিলেন এই পরিচয়ে। ২০১১ সালে
জিম্বাবুয়ে সফরে ওয়ানডেতে সম্ভাবনার ঝলকও দেখান কিছু। প্রথম দুই ম্যাচে করেন ৩২ ও অপরাজিত
৩৫। ওই বছর চার ওয়ানডে খেলার পর এই সংস্করণে আর তার সুযোগ মেলেনি।
তার পরিচয় নতুন মোড়
নেয় ২০১৪ সালে টেস্ট ক্যারিয়ার শুরুর পর। তার অফ স্পিন বোলিংই তখন প্রাধান্য পেতে থাকে,
টেস্ট একাদশের ব্যাটিং অর্ডারে জায়গা হয় সাত-আট নম্বরে। ওই সময় টেস্ট দলে তার ভূমিকা
নিয়ে প্রশ্ন উঠত নিয়মিতই। বাংলাদেশের সেই সময়কার প্রধান কোচ চন্দিকা হাথুরুসিংহে এক
পর্যায়ে বলেন, শুভাগত দেশের সেরা অফ স্পিনার।
ঘরোয়া ক্রিকেটে বোলিংয়ের পাশাপাশি শহিদুল ইসলামের ব্যাটের হাতও খারাপ নয়।
ভূমিকা নিয়ে টানাটানির
ডামাডোলে আসল শুভাগতকে পাওয়াই যায়নি। ৮ টেস্টে মোটে ৮ উইকেট ও ১ ফিফটির পর ২০১৬ সালে
থমকে যায় টেস্ট ক্যারিয়ার। ওই বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপসহ ৫টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচও খেলেন।
এরপর ২০১৬-১৭ মৌসুমে
নিউ জিল্যান্ডে সফরের টি-টোয়েন্টি দলে ছিলেন তিনি। ২০১৭ সালে শ্রীলঙ্কা সফরের ওয়ানডে
দলেও ছিলেন। খেলার সুযোগ পাননি কোনোবারই।
এতদিন পর তার আন্তর্জাতিক
ক্যারিয়ার পুনরুজ্জীবিত সুযোগ এসেছে আবার। যদিও শ্রীলঙ্কা সফরের কেবল প্রাথমিক দলে
জায়গা হয়েছে, এটিকে তবু ফেরার পথে বড় পদক্ষেপ হিসেবেই বিবেচনা করা যেতে পারে। চূড়ান্ত
স্কোয়াডের পরিকল্পনায় না থাকলে তাকে এতদিন পর ফেরানোর কথা নয়।
টেস্ট দলে জায়গা
হারানোর সময় প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ৫৮ ম্যাচে শুভাগতর ছিল ৫ সেঞ্চুরি, বাদ পড়ার পর
এখনও পর্যন্ত ৩৯ ম্যাচে করেছেন ৫ সেঞ্চুরি। বাদ পড়ার সময় উইকেট ছিল ৫৮ ম্যাচে ১০৯টি,
বাদ পড়ার পরের ৩৯ ম্যাচে উইকেট ১০৪টি।
এতদিন সীমিত ওভারের ক্রিকেটে বিবেচনা করা হলেও এবার টেস্টের প্রাথমিক দলে আছেন শরিফুল ইসলাম।
জাতীয় লিগের সবশেষ
ম্যাচে কক্সবাজারে সেঞ্চুরি করার পাশাপাশি নেন তিনি ছয় উইকেট। এরপর এলো প্রাথমিক দলে
ডাক পাওয়ার সুখবর। ৩৪ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার হয়তো আরও বেশি স্বস্তি পাবেন, তাকে দলে
নেওয়ার ক্ষেত্রে প্রধান নির্বাচকের ব্যাখ্যায়।
“শুভাগত বেশ কিছুদিন পর ফিরছে। প্রথম
শ্রেণির ক্রিকেটে বরাবরই সে ধারাবাহিক পারফরমার। আমরা ওকে ব্যাটিং অলরাউন্ডার হিসেবেই
বিবেচনা করছি। তবে তার অফ স্পিনও বেশ কার্যকর, যা স্পিন বিভাগে আমাদের বিকল্প হিসেবে
কাজে দেবে।”
শুভাগতর পাশাপাশি
২১ সদস্যের প্রাথমিক দলে কৌতূহল জাগানিয়া নাম আছে শহিদুল ইসলাম, মুকিদুল ইসলাম ও শরিফুল
ইসলাম। এই তিন পেসারকে দলে নেওয়ার কারণও জানালেন মিনহাজুল।
“ওরা আমাদের হাই পারফরম্যান্স স্কোয়াডে
ছিল এবং যে সংস্করণেই খেলেছে, ভালো করেছে। বিশেষ করে, মুকিদুল ও শহিদুল এই মৌসুমে প্রথম
শ্রেণির ক্রিকেটে নজর কেড়েছে এবং টেস্টের জন্য সম্ভাবনাময়। ওরা তিনজনই প্রতিভাবান,
বয়সও ওদের পক্ষে আছে।”
বাঁহাতি পেসার শরিফুল
সম্প্রতি বাংলাদেশ দলের হয়ে নিউ জিল্যান্ড সফর করে এসেছেন। তবে টেস্টের প্রাথমিক দলে
জায়গা পেলেন তিনি প্রথমবার। ২০ বছর বয়সী মুকিদুল ও ২৬ বছর বয়সী শহিদুলেরও প্রাথমিক
দলে ডাক পাওয়া এই প্রথম।
শ্রীলঙ্কায় আগামী
১৭ ও ১৮ এপ্রিল নিজেদের মধ্যে প্রস্তুতি ম্যাচের পর ২১ সদস্যের প্রাথমিক দল থেকে ঘোষণা
করা হবে চূড়ান্ত টেস্ট স্কোয়াড।