জোহানেসবার্গে শনিবার প্রথম
টি-টোয়েন্টিতে স্বাগতিকদের ৪ উইকেটে হারিয়েছে পাকিস্তান। ১৮৯ রানের লক্ষ্য
সফরকারীরা ছুঁয়ে ফেলেছে এক বল বাকি থাকতে।
টি-টোয়েন্টিতে এটি পাকিস্তানের সবচেয়ে
বেশি রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে হারারেতে ২০১৮ সালে ১৮৩ রান
তাড়া করা ছিল দলটির আগের রেকর্ড।
দা ওয়ান্ডারার্স স্টেডিয়ামের ব্যাটিং
উইকেটে আলো ছড়িয়ে রিজওয়ান খেলেন ৭৪ রানের অপরাজিত ইনিংস। সাতে নেমে ১৪ বলে ৩০ রান
করে দলের জয়ে বড় অবদান রাখেন ফাহিম আশরাফ।
এদিন টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা দক্ষিণ
আফ্রিকার শুরুটা ভালো হয়নি। পাওয়ার প্লেতেই হারায় দুই উইকেট। শাহিন শাহ আফ্রিদিকে
দুই ছক্কা ও এক চার মেরে ঝড়ের আভাস দিয়ে ফিরে যান ইয়ানেমান মালান। অভিষিক্ত উইহান
লুবেকে দ্রুত ফিরিয়ে দেন হাসান আলি।
শুরুর ধাক্কা এইডেন মারক্রাম ও হাইনরিখ
ক্লাসেনের ব্যাটে সামাল দেয় স্বাগতিকরা। দুই জনের আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে দলের রানও
বাড়তে থাকে দ্রুত। ১০ ওভারে আসে ৯৮ রান।
উসমান কাদিরকে ছক্কায় উড়িয়ে ৩০ বলে
ফিফটি করা মারক্রাম এরপর টিকতে পারেননি বেশিক্ষণ। ৮ চার ও এক ছক্কায় তিনি কট
বিহাইন্ড হন মোহাম্মদ নওয়াজের বাঁহাতি স্পিনে। তার বিদায়ে ভাঙে ৬২ রানের জুটি।
পিট ফন বিলিয়োনকে নিয়ে দলের সংগ্রহ বড়
করতে থাকেন টেম্বা বাভুমার অনুপস্থিতিতে দলকে নেতৃত্ব দেওয়া ক্লাসেন। বিস্ফোরক
ব্যাটিংয়ে ২৪ বলে তুলে নেন ফিফটি।
৪ ছক্কা ও ২ চারে ৫০ রান করা দক্ষিণ
আফ্রিকা কিপার-ব্যাটসম্যানকে ফেরান হাসান। বিলিয়োনকে (৩৪) ইনিংস বড় করতে দেননি
আফ্রিদি। শেষ চার ওভারে প্রত্যাশিত ঝড় তুলতে না পারলেও দুইশ রানের কাছাকাছি সংগ্রহ
গড়ে স্বাগতিকরা।
জবাব দিতে নেমে দ্রুতই বাবরকে হারায়
পাকিস্তান। বিউরান হেনড্রিকসের বলে ৩ চারে ১৪ রান করে অধিনায়ক ধরা পড়েন
বাউন্ডারিতে। নেমেই দ্রুত রান তুলতে থাকেন ফখর জামান। লিন্ডেকে মারেন ওভারে তিন
চার।
তাবরাইজ শামসিকে ছক্কায় উড়িয়ে পরের বলে
একই চেষ্টায় মিডউইকেট বাউন্ডারিতে ধরা পড়েন ফখর (২৭)। মোহাম্মদ হাফিজ রানের খাতা
খোলেন লিন্ডেকে চার মেরে।
কিন্তু শততম টি-টোয়েন্টি খেলার মাইলফলক
ছোঁয়ার ম্যাচে মাত্র ১৩ রান করেন হাফিজ। এতেই অবশ্য এই সংস্করণে দেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি
রানে ছাড়িয়ে যান তিনি শোয়েব মালিককে। তার রান এখন ২ হাজার ৩৩৬ ও মালিকের ২ হাজার
৩২৩।
পরপর দুই বলে হায়দার আলি ও নওয়াজকে
ফিরিয়ে দেন হেনড্রিকস। এক প্রান্ত আগলে রেখে দলকে টানেন রিজওয়ান। ৩৪ বলে স্পর্শ
করেন ফিফটি।
তাকে দারুণ সঙ্গ দেন ফাহিম। দ্রুত রান
তুলতে থাকেন দুই জন। তাদের ব্যাটেই শেষ চার ওভারে ৫২ রানের কঠিন সমীকরণ মেলানোর
পথে এগিয়ে যায় পাকিস্তান। চারটি চার ও এক ছক্কায় ৩০ রান করে শেষ ওভারে ফাহিম ফিরলে
ম্যাচে টিকে থাকে দক্ষিণ আফ্রিকার আশা।
কিন্তু ৩ বলে ৯ রান তুলে হাসান
রোমাঞ্চকর লড়াইয়ে দলকে পৌঁছে দেন জয়ের বন্দরে। রিজওয়ান অপরাজিত থাকেন ৯ চার ও ২
ছক্কায় ৫০ বলে ৭৪ রানে।
আগামী সোমবার হবে চার ম্যাচ সিরিজের
দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
দক্ষিণ আফ্রিকা: ২০ ওভারে ১৮৮/৬ (মালান ২৪, মারক্রাম ৫১, লুবে ৪, ক্লাসেন ৫০, বিলিয়োন ৩৪, লিন্ডে ৬, ফেলুকওয়ায়ো ৯*, মাগালা ৯*; আফ্রিদি ৪-০-৪৫-১, নওয়াজ ৪-০-২১-২, হাসান ৪-০-২৮-২, উসমান ৩-০-৩৮-০, রউফ ৩-০-৩৭-১, ফাহিম ২-০-১৮-০)।
পাকিস্তান: ১৯.৫ ওভারে ১৮৯/৬ (রিজওয়ান ৭৪*, বাবর ১৪, ফখর ২৭, হাফিজ ১৩, হায়দার ১৪, নওয়াজ ০, ফাহিম ৩০, হাসান ৯*; লিন্ডে ৩-০-৩১-০, উইলিয়ামস ৩.৫-০-৩৯-১, হেনড্রিকস ৪-০-৩২-৩, মাগালা ৩-০-৩৫-০, শামসি ৪-০-২৯-২, ফেলুকওয়ায়ো ২-০-২১-০)।
ফল: পাকিস্তান ৪ উইকেটে জয়ী।
সিরিজ: ৪ টি-টোয়েন্টির সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে পাকিস্তান।
ম্যান অব দা ম্যাচ: মোহাম্মদ রিজওয়ান।