ক্যাটাগরি

কোভিড-১৯: ভারতে দৈনিক শনাক্ত দেড় লাখ ছাড়াল

এ নিয়ে টানা পাঁচ দিন দেশটিতে এক লাখের বেশি করে রোগী মিলল।

শনিবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আগের ২৪ ঘণ্টায় ১ লাখ ৪৫ হাজার ৩৮৪ জন রোগী শনাক্তের কথা জানিয়েছিল; রোববার তার চেয়েও ৫ শতাংশ বেশি রোগীর কথা জানাল।

সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের দাপট অব্যাহত থাকায় দেশটির অনেক অংশেই এখন রোগীর ভিড়ে হাসপাতালগুলো উপচে পড়ছে।

রোববার ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্যে একদিনে আরও ৮৩৯ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে; এ সংখ্যা পাঁচ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

প্রাণঘাতী এ ভাইরাসে ভারতে এখন পর্যন্ত সরকারি হিসাবেই মৃত্যু সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৬৯ হাজার ২৭৫ জনে। মৃতের সংখ্যায় বিশ্বে চতুর্থ স্থানে আছে দেশটি।

আক্রান্ত ছাড়িয়ে গেছে এক কোটি ৩৩ লাখ, বিশ্বের দেশগুলোর মধ্যে এটি তৃতীয় সর্বোচ্চ। এর উপরে রোগী শনাক্ত হয়েছে কেবল ব্রাজিল আর যুক্তরাষ্ট্রে।

সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন অনেক রাজ্যই রাত্রিকালীন কারফিউসহ নানান বিধিনিষেধ আরোপ করতে বাধ্য হয়েছে।

ভারতের মোট সক্রিয় রোগীর ৫১ দশমিক ২৩ শতাংশই মহারাষ্ট্রের। পশ্চিমাঞ্চলীয় এ রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধভ ঠাকরে শিগগিরই রাজ্যে লকডাউন দেওয়া হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন।

শনিবার দিল্লির সরকারও জমায়েতে নিষেধাজ্ঞাসহ নানান বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। রেস্তোরাঁ, থিয়েটার, গণপরিবহন এবং বিয়ে ও  অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় সর্বোচ্চ কতজন থাকতে পারবে তার সীমা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে।

আসন্ন নবরাত্রি উৎসব ও রমজানের কথা মাথায় রেখে উত্তর প্রদেশে ধর্মীয় স্থাপনাগুলোতে একসঙ্গে পাঁচ জনের বেশি প্রবেশে বিধিনিষেধ দেওয়া হয়েছে। 

সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতির কারণে ভারতের বিভিন্ন এলাকার হাসপাতালগুলোতে শয্যা সংকট দেখা দিয়েছে।

মধ্য প্রদেশের ভেতর সবচেয়ে বেশি রোগী শনাক্ত হওয়া ইন্দোরে আত্মীয় স্বজনরা কোভিডে আক্রান্ত রোগীর জন্য হাসপাতালের বেড খুঁজে খুঁজে হয়রান বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। শনাক্ত রোগীর উল্লম্ফনের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে শহরটির স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনাকে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

ভারতে চলতি বছরের শুরুর দিক থেকেই কোভিড-১৯ এর টিকাদান কর্মসূচিও শুরু হয়েছে; দেশটিতে এর মধ্যেই ১০ কোটি ১৫ লাখের বেশি ডোজ প্রয়োগ করা হয়েছে।

দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার তাদের কাছে পর্যাপ্ত মজুদ আছে বলে আশ্বস্ত করলেও অনেক রাজ্যই টিকার ঘাটতির অভিযোগ করছে।

আরও বেশি সংখ্যক মানুষকে টিকা দিতে ভারতে রোববার থেকে চার দিনের ‘টিকা উৎসব’ শুরু হয়েছে। করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে বিভিন্ন রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে আলোচনায় টিকাদান কর্মসূচির গতি বাড়াতে প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানের পর এ উৎসব হচ্ছে।

ভারত নিজের দেশের বাসিন্দাদের মধ্যে ১০ কোটি ডোজ টিকা দিতে মাত্র ৮৫ দিন সময় নিয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির সরকার।

বিশ্বের মধ্যে তারাই সবচেয়ে দ্রুতগতিতে এ মাইলফলকে পৌঁছেছে। একই পরিমাণ ডোজ দিতে যুক্তরাষ্ট্রের লেগেছে ৮৯ দিন, চীনের ১০২ দিন, বলেছে ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।