সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে চতুর্থ ওয়ানডেতে ১১০ রানের বড় জয় পেয়েছে স্বাগতিকরা। ২৩৭ রানের লক্ষ্য তাড়ায় সফরকারীরা গুটিয়ে গেছে কেবল ১২৬ রানে।
পাঁচ ম্যাচের সিরিজে বাংলাদেশের মেয়েরা এগিয়ে ৪-০ ব্যবধানে।
নামে উঠতিদের দল হলেও বাংলাদেশ প্রায় জাতীয় দলই খেলাচ্ছে। সালমা খাতুন, ফারজানা হকসহ খেলছেন নিয়মিত খেলোয়াড়দের বেশিরভাগই। রোববার অবশ্য খেলেননি রুমানা আহমেদ। তবে এই ম্যাচে খেলা দলটির সবারই আছে আন্তর্জাতিক ম্যাচের অভিজ্ঞতা।
দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে দলকে আড়াইশ রানের কাছাকাছি সংগ্রহ এনে দেওয়ার মূল কারিগর নিগার। বাংলাদেশ অধিনায়ক খেলেন ১৩২ বলে ১০১ রানের অপরাজিত ইনিংস। একই রান তিনি করেছিলেন দ্বিতীয় ওয়ানডেতেও। চল্লিশোর্ধ ইনিংসে অবদান রাখেন মুর্শিদা খাতুন ও সোবহানা মোস্তারি।
এরপর মূলত ফাহিমার দারুণ বোলিংয়েই অল্পতে গুটিয়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস। এই লেগ স্পিনার ২৯ রানে নেন ৪ উইকেট। সালমা খাতুনের প্রাপ্তি দুটি।
টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশ পঞ্চম ওভারে প্রথম উইকেট হারায়। শারমিন সুলতানা এলবিডব্লিউ হওয়ার পর প্রতিরোধ গড়েন নিগার ও মুর্শিদা।
আস্থার সঙ্গে খেলতে থাকেন দুই জন। এগোতে থাকেন নিজেদের ফিফটির দিকে। কিন্তু অর্ধশতকের আগে মুর্শিদা রান আউটে কাটা পড়েন, ৪১ রানে। ভাঙে ৮২ রানের জুটি।
ফারজানা হককে দ্রুত ফিরিয়ে দেন নবুলুমকো বানেটি। সোবহানাকে নিয়ে ৭ রানের মধ্যে ২ উইকেট হারানো দলের হাল ধরেন নিগার। ৭১ বলে এই কিপার-ব্যাটসম্যান স্পর্শ করেন ফিফটি।
১৩১ বলে তুলে নেন সিরিজে নিজের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। অপরাজিত থাকেন ৮ চার ও এক ছক্কায় ১০১ রানে।
মাঝে ৫২ বলে ৪৫ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন সোবহানা। শেষ দিকে আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ১৬ বলে একটি করে ছক্কা-চারে ২৫ করেন লতা মণ্ডল।
রান তাড়ায় বোলারদের তোপের মুখে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে দক্ষিণ আফ্রিকা। ওপেনার অ্যানেরি ডের্কসেনকে ফিরিয়ে প্রথম ছোবল মারেন সালমা খাতুন।
থিতু হওয়া ননডুমিসো সাঙ্গাসকে দ্রুত ফিরিয়ে দেন নাহিদা আক্তার। দুই ব্যাটারই ফেরেন স্টাম্পিং হয়ে। লতার শিকার উইকেটে জমে যাওয়া আরেক ওপেনার অ্যান্ড্রি স্টেইন।
আন্নেকে বোস এক প্রান্ত আগলে রেখে লড়াই চালিয়ে যান। কিন্তু তাকে সঙ্গ দিতে পারেননি কেউ। পরপর দুই বলে ফে টুন্নিক্লিফ ও সিনালো জাফটাকে বোল্ড করে প্রতিপক্ষকে চেপে ধরেন ফাহিমা। তার লেগ স্পিনে স্টাম্প ভাঙে লি জোন্সেরও।
এরপর বোসের লড়াই থামান সালমা। ৮১ বলে ৭ চার ও এক ছক্কায় ৬৩ রান করে হন কট বিহাইন্ড। বোস ছাড়া ২০ পার করতে পারেননি দলটির কেউ।
আগামী মঙ্গলবার সিরিজের পঞ্চম ও শেষ ম্যাচে মুখোমুখি হবে দুই দল।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ ইমার্জিং নারী দল: ৫০ ওভারে ২৩৬/৪ (শারমিন ১০, মুর্শিদা ৪১, নিগার ১০১*, ফারজানা ১, সোবহানা ৪৫, লতা ২৫*; অ্যান্ড্রুস ৫-১-১৯-১, উইন্সটার ১০-১-৩৫-০, বানেটি ১০-০-৪৫-১, জোন্স ৮-১-৪০-১, ফিগুয়েইরেডো ৭-০-২৮-০, সাঙ্গাস ৭-০-৩৯-০, বোস ৩-০-২৭-০)।
দক্ষিণ আফ্রিকা ইমার্জিং নারী দল: (লক্ষ্য ২৩৭) ৪৬.৫ ওভারে ১২৬ (স্টেইন ১২, ডের্কসেন ৮, সাঙ্গাস ১১, ফে ৭, বোস ৬৩, সিনালো ০, জোন্স ৪, ফিগুয়েইরেডো ৬, বানেটি ২*, উইন্সটার ৯, অ্যান্ড্রুস আহত অবসর; সালমা ১০-৩-১৯-২, রিতু ১০-১-১৫-১, নাহিদা ৭-০-৩১-১, লতা ৫-০-১৭-১, ফাহিমা ৯.৫-২-২৯-৪, রাবেয়া ৫-০-১৫-০)।
ফল: বাংলাদেশ ইমার্জিং নারী দল ১১০ রানে জয়ী।
সিরিজ: পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ৪-০ তে এগিয়ে বাংলাদেশ ইমার্জিং নারী দল।
ম্যান অব দা ম্যাচ: নিগার সুলতানা।