পাঞ্জাব কিংসের বিপক্ষে সোমবারের ম্যাচে এরপরও অবশ্য দুটি উইকেট পেতে পারতেন রাজস্থান রয়্যালসের এই পেসার। তার বলে একটি এলবিডব্লিউর রিভিউ নেননি অধিনায়ক সাঞ্জু স্যামসন। অনেক উপরে উঠে যাওয়া এক ক্যাচ মুঠোয় জমাতে পারেননি জস বাটলার।
মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ৬ উইকেটে ২২১ রান করে পাঞ্জাব। নেতৃত্বের অভিষেকে দারুণ এক সেঞ্চুরি করেও দলকে জেতাতে পারেননি স্যামসন। রোমাঞ্চকর ম্যাচে ২১৭ রানে থামে রাজস্থান।
৪ ওভারে ৪৫ রান দিয়ে উইকেটশূন্য ছিলেন মুস্তাফিজ।
জিততে শেষ ২ বলে দরকার ছিল ৫ রান। কিন্তু সমীকরণ মেলাতে পারেননি স্যামসন। এবারের আসরে প্রথম সেঞ্চুরি করা এই ব্যাটসম্যান ছক্কার চেষ্টায় আউট হয়ে যান শেষ বলে। ৬৩ বলে ৭ ছক্কা ও ১২ চারে করেন ১১৯ রান।
রান উৎসবের ম্যাচে দ্বিতীয় ওভারে বল হাতে পান মুস্তাফিজ। দ্বিতীয় বলেই পেতে পারতেন মায়াঙ্ক আগারওয়ালের উইকেট। বাঁহাতি পেসারের ইনসুইঙ্গার ব্যাটে খেলতে পারেননি এই ওপেনার, বল লাগে প্যাডে। রিভিউ নেননি অধিনায়ক।
পরে দেখা যায়, বল আঘাত হানতো লেগ স্টাম্পে। শেষ বলে বাউন্ডারি হজম করেন মুস্তাফিজ। ওই ওভার থেকে আসে ১১ রান।
পাওয়ার প্লেতে আবার মুস্তাফিজকে আক্রমণে আনেন স্যামসন। এবার সামনে ছিলেন ক্রিস গেইল। স্ট্রেইট ড্রাইভে বাউন্ডারি মারেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। ওভার থেকে আসে ৮ রান।
২৮ বলে ৪০ রান করে দশম ওভারে ফিরে যান গেইল। ক্রিজে গিয়েই ঝড় তোলেন দিপক হুডা। রাহুলের সঙ্গে দ্রুত জমে যায় তার জুটি। রান আসতে থাকে বানের জলের মতো।
বোলাররা যেন বল ফেলার জায়গা পাচ্ছিলেন না। একের পর এক ছক্কায় বল উড়ছিল এদিক, ওদিক। বিপজ্জনক জুটি ভাঙতে ১৫তম ওভারে মুস্তাফিজকে আক্রমণে আনেন স্যামসন।
তার আশা পূরণ প্রায় হয়েই যাচ্ছিল। প্রথম বলেই উইকেট পেতে পারতেন মুস্তাফিজ। বাঁহাতি এই পেসারের কাটারে অনেক উপরে ক্যাচ তুলে দেন হুডা। কাভার থেকে ছুটে এসে মুঠোয় নিতে পারেননি বাটলার। সে সময় ১৬ বলে ৩৯ রানে ছিলেন হুডা। জুটির রান ছিল ৬১।
পরে রাহুলের ব্যাটের কানায় লেগে মুস্তাফিজ হজম করেন ছক্কা। সেই ওভার থেকে আসে ১১ রান।
১৯তম ওভারে বোলিংয়ে এসে শুরুটা বেশ ভালো হয়েছিল। প্রথম দুই বলে দেন দুটি সিঙ্গেল। কিন্তু তৃতীয় বলটি ‘নো’ বল করে ফেলেন মুস্তাফিজ। এরপর আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেননি। শেষ চার বলে দেন ১৩ রান।
বাঁহাতি এই পেসারের ৪ ওভারে ডট বল মাত্র চারটি। একটি নো বলের সঙ্গে ওয়াইড তিনটি।
দারুণ ব্যাটিংয়ে আশা জাগিয়েও সেঞ্চুরি পাননি রাহুল। পাঞ্জাব অধিনায়ক ৫০ বলে ৫ ছক্কা ও ৭ চারে করেন ৯১ রান। তার সঙ্গে ৪৭ বলে ১০৫ রানের জুটি গড়া হুডা করেন ৬৪ রান। তার ২৮ বলের বিস্ফোরক ইনিংসে ৬ ছক্কা পাশে চারটি চার।
দারুণ এক সেঞ্চুরি করেও দলকে জেতাতে পারেননি সাঞ্জু স্যামসন। ছবি: আইপিএল
রান তাড়ায় শুরুটা ভালো হয়নি রাজস্থানের। শূন্য রানে হারায় বেন স্টোকসকে। প্রথম ওভারেই ক্রিজে যাওয়া স্যামসনের সঙ্গে একে একে বাটলার, শিভাম দুবে ও রিয়ান পারাগের জুটিতে এগিয়ে যায় দল।
৫৪ বলে সেঞ্চুরি স্পর্শ করার পর একইভাবে খেলতে থাকেন স্যামসন। আর্শদ্বীপ সিংয়ের করা শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ১৩ রান। প্রথম ৩ বলে আসে কেবল ২ রান। চতুর্থ বলে ছক্কা মেরে আশা বাঁচিয়ে রাখেন স্যামসন। পঞ্চম বলে সিঙ্গেল হতে পারতো, কিন্তু তিনি ফিরিয়ে দেন মরিসকে।
শেষ বলে রাজস্থান অধিনায়ক পারেননি লংঅফ দিয়ে বল সীমানার বাইরে পাঠাতে। স্লটেই ছিল, কিন্তু হুডাকে ক্যাচ দেন স্যামসন। নেতৃত্বের অভিষেকে সেঞ্চুরি পেলেও মাঠ ছাড়েন হারের হতাশা নিয়ে। ম্যাচ সেরা অবশ্য তিনিই।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
পাঞ্জাব কিংস: ২০ ওভারে ২২১/৬ (রাহুল ৯১, আগারওয়াল ১৪, গেইল ৪০, হুডা ৬৪, পুরান ০, শাহরুখ ৬*, রিচার্ডসন ০; সাকারিয়া ৪-০-৩১-৩, মুস্তাফিজ ৪-০-৪৫-০, মরিস ৪-০-৪১-২, গোপাল ৩-০-৪০-০, স্টোকস ১-০-১২-০, তেওয়াতিয়া ২-০-২৫-০, পারাগ ১-০-৭-১, দুবে ১-০-২০-০)
রাজস্থান রয়্যালস: ২০ ওভারে ২১৭/৭ (স্টোকস ০, ভোহরা ১২, স্যামসন ১১৯, বাটলার ২৫, দুবে ২৩, পারাগ ২৫, তেওয়াতিয়া ২, মরিস ২*; শামি ৪-০-৩৩-২, রিচার্ডসন ৪-০-৫৫-১, আর্শদ্বীপ ৪-০-৩৫-৩, মেরেডিথ ৪-০-৪৯-১, অশ্বিন ৪-০-৪৩-০)
ফল: পাঞ্চাব কিংস ৪ রানে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: সাঞ্জু স্যামসন