আর ঘরে থেকে অফিসের কাজ করার দিনও সহজে
শেষ হচ্ছে না।
ইউনিভার্সিটি অফ সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়া’য়ের
এক গবেষণায় দাবি করা হয়, ঘরে বসে অফিস করার কারণে কর্মীদের কাছ থেকে কাজের চাহিদা যেমন
বেড়েছে, তেমনি কর্মীদের কাজ থেকে মনযোগ হারানোর বিষয়ও বেড়েছে।
এছাড়াও সহকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগের ঘাটতি
তৈরি হওয়াতে কর্মীদের কার্যসম্পাদন ক্ষমতা কমে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত।
তাই ঘরে থেকেও সুস্থ মস্তিষ্কে কাজ করার
কয়েকটি পন্থা জানানো হল মানসিক স্বাস্থ্য-বিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন
অবলম্বনে।
পূর্ব পরিকল্পনা: সহকর্মী বা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার ক্রমাগত কাজের কথা মনে করিয়ে দেওয়ার চাপ না
থাকলে ঘরে বসে কাজের পরিমাণ আর সময়ের খেয়াল হারিয়ে যাওয়া খুবই সহজ। এজন্য কাজের শুরুতেই
পুরো দিনের পরিকল্পনা করে নিতে হবে। এই পরিকল্পনায় শুধু অফিসের কাজ নয় ব্যক্তিগত কাজগুলোর
জন্যই সময় বেঁধে নিতে হবে। তাই দিনের শুরুতেই পুরো দিনের রুটিন সাজিয়ে সেই অনুযায়ী
কাজ করার চেষ্টা করা ভালো।
পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার প্রস্তুতি: ঘরে বসে পুরো অফিসের সময়টুকু যে শুধু
অফিসের কাজই করবেন আর কোনো দিকে মনযোগ দেবেন না এমনটা হওয়া অনেকের জন্যই অসম্ভব। সংসারের
খুটিনাটি কাজ, বাড়িতে কোনো অতিথি আসা, সন্তান সামলানো ইত্যাদি নানান কাজে যুক্ত হতে
হবে ওই অফিসের কাজের সময়ই। এই পরিস্থিতিগুলোতে মন মেজাজ শান্ত রাখতে হবে। মনে রাখতে
হবে অফিস আর ব্যক্তিগত জীবন সবখানেই আপনার দায়িত্ব আছে। এসবের জন্য মানসিক প্রস্তুতি
রাখতে হবে।
কাজের স্থান নির্বাচন করা: এক বছর ধরে ‘হোম অফিস’ করার সুবাদে অনেকেই ঘরেই একটা অফিস বানিয়ে
নিয়েছেন ইতোমধ্যেই। যারা এখনও তা করেননি কিংবা করার সুযোগ নেই তাদের উচিত ঘরের একটা
নিরিবিলি স্থান ঠিক করে নেওয়া যে এখানেই আপনি কাজ করবেন। পর্যাপ্ত আলো বাতাস আসে, ঘরের
অন্যান্য কোলাহল কম এমন স্থান নির্বাচন করুন।
সীমারেখা তৈরি করা: ঘরে বসে অফিস মানে হল অফিস যাওয়ার তড়িঘড়ি নেই, আবার দিনশেষে বাড়ি ফেরার তাড়া
নেই। ফলে সময় জ্ঞান হারিয়ে যেতে পারে। এজন্য কাজ শুরু ও শেষ করার সময় নির্ধারিত করে
নিতে হবে। কাজের সময় ঢিলেমি না করে ওই সময়সীমার মধ্যেই কাজ শেষ করার পূর্ণাঙ্গ চেষ্টা
করাই শ্রেয়। আর কর্মকর্তাদেরও উচিত হবে কর্ম ঘণ্টার বাইরে কাজের চাপ না দেওয়া।
কাজের পোশাক:
ঘরেই অফিস বলে ঘরের পোশাকেই সারাদিন পার করাটা আরামদায়ক হবে। তবে সেই পোশাকে কাজের
মনভাব আসবে না, আলসেমি কাটবে না। তাই ফিটফাট না হলেও ঘরে পরা পোশাক বদলে পরিপাটি ও
আরামদায়ক কোনো পোশাক পরে কাজে বসা উচিত।
বিরতি নিন:
লকডাউন হলেও দিনে একদুবার বাইরে যাওয়া উচিত। মানুষের ভীড় কম এমন কোথাও একটু হাঁটা,
ঘরের কোনো কাজ সেরে আসা কিংবা ছাদ থেকে বেড়িয়ে আসা ইত্যাদি মনকে প্রফুল্ল করবে। সারাদিন
ঘরে নিজেকে আটকে রাখে কাজে ডুবে থাকলে মনমরা হয়ে পড়বেন অল্পতেই। এতে কাজে তো মন বসবেই
না, বরং কাজের পরেও মানসিকভাবে হতাশাগ্রস্ত হয়ে থাকবেন।
ঘুমে জোর দিন:
রাতে ভালো ও পর্যাপ্ত ঘুমালে পরদিন মন ভালো থাকবে, কাজের স্পৃহা বাড়বে। আর তা না করে
মোবাইল নিয়ে পড়ে থেকে রাত জাগলে পরদিন শরীর খারাপ লাগবে, কাজও এগোবে না।
আরও পড়ুন
বাসা থেকে কাজ করেও অফিসের নজরে থাকার উপায়