সোমবার
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের শরিক বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরো এক
বিবৃতিতে করোনাভাইরাসে প্রতিদিন শনাক্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধি, হাসপাতালে শয্যা,
অক্সিজেন ও আইসিইউ চিকিৎসা সংকট, শ্রমজীবী মানুষ, দরিদ্রদের কোনো সহায়তার ব্যবস্থা
না করায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
বৃতিতে
বলা হয়, “করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ে সরকার যে লকডাউন, লকডাউন খেলা খেলছে তা
সামগ্রিক পরিস্থিতি সম্পর্কে তাদের উপেক্ষার মনোভাবের পরিচয় বহন করে। এদিকে আগামী ১৪
তারিখ থেকে ‘কঠোর’ লকডাউনের যে ঘোষণা দেয়া হয়েছে তাতে ‘দিন আনা মানুষগুলো’র জন্য কি
ব্যবস্থা নেয়া হবে তা বলা হচ্ছে না।
“উল্লেখ
করার বিষয় গতবার এই খাতে ১ হাজার ৫০ কোটি টাকার যে বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল তার মাঝে সংবাদপত্রের
রিপোর্ট অনুযায়ী ৯১২ কোটি টাকা বিতরণ করা হয়েছে, ফেরত এসেছে ১০১ কোটি টাকা- যা বিভিন্ন
মোবাইল ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানের কাছে পড়ে আছে।”
ওয়ার্কার্স
পার্টি বলেছে, “শ্রমিকদের প্যাকেজের ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকার মাঝে মাত্র ৫ কোটি টাকা
বিতরণ করতে পেরেছে। এই অর্থ বিতরণে শহরে সিটি কর্পোরেশন ও গ্রামে ইউনিয়ন পরিষদকে তালিকা
তৈরি করে খুবই স্বল্প সময়ের মধ্যে দিতে বলা হলেও, তার যাচাই বাছাই ও নিয়ন্ত্রণভার সম্পূর্ণটাই
ছিল আমলাদের হাতে। আমলাতান্ত্রিক নীতিমালা ও তার বাস্তবায়নে ব্যর্থতা এই পরিস্থিতি
সৃষ্টি করেছিল। ফলে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া টাকা দুর্গত মানুষের কাছে পৌঁছায়নি। প্রধানমন্ত্রীকে
কাগুজে হিসাব দেখান হয়েছে।”
বিবৃতিতে
বলা হয়, “মন্ত্রীরা করোনা সংক্রমণে নিজেরা কোনো দায় না নিয়ে জনগণকে দোষারোপ করছে। করোনা
সংক্রমণে স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে জনগণের উদাসীনতা যত দায়ী, তার চেয়ে বেশি দায়ী
সরকারের অব্যবস্থাপনা, অদক্ষতা, দুর্নীতি। এমনকি ভ্যাকসিন সরবরাহে একটি প্রতিষ্ঠানকে
লাভবান করার যেসব পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে তাতে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে সর্বপ্রথম
ভ্যাকসিন আনলেও, এখন চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছে।”
ওয়ার্কার্স
পার্টি এই অবস্থায় ছয়টি দাবি তুলেছে। এগুলো হল-
লকডাউন
বাস্তবায়নে জনপ্রতিনিধিদের দায়িত্ব দিয়ে সরকারি বিভিন্ন বাহিনী ও প্রতিষ্ঠানের কার্যকরী
ব্যবস্থা নিশ্চিত করা; শ্রমজীবী ও গরিব মানুষ ও শ্রমিকদের জন্য বরাদ্দ প্যাকেজের অব্যায়িত
অর্থের সাথে আরও তিন হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া; ওই অর্থ বিতরণে মহানগরের ক্ষেত্রে
সিটি কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান ও জেলার ক্ষেত্রে উপজেলা চেয়ারম্যানকে প্রধান করে স্থানীয়
সংসদ সদস্য অন্তর্ভুক্ত করে তালিকা প্রণয়ন ও বিতরণ বাস্তবায়ন করা; চুক্তি অনুযায়ী যথাসময়ে
ভ্যাকসিন সরবরাহ করতে ব্যর্থ হওয়ায় সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে দৃশ্যমান জবাবদিহির মধ্যে
আনা, চুক্তি অনুযায়ী ভ্যাকসিন আনা নিশ্চিতকরণসহ ভ্যাকসিনের অন্য সূত্র সন্ধান, ভ্যাকসিন
উৎপাদনে দেশীয় সক্ষমতা কাজে লাগাতে সরকারি উদ্যোগ ও সহায়তা প্রদান; করোনা সংক্রমণের
দ্বিতীয় ঢেউয়ে তরুণরা সংক্রমিত হওয়ায় ভ্যাকসিন প্রদানের বয়স সীমা অন্যান্য দেশের ন্যায়
১৮ বছর করা; জনগণের চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যের দায়িত্ব সরকারকে গ্রহণ করতে হবে।