ক্যাটাগরি

বিদায়বেলায় কাঁদলেন ইউএনও নাহিদা বারিক

মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলা
পরিষদ মিলনায়তনে বিদায় সংবর্ধনায় অনেকেই তার সম্পর্কে বলতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।

অনুষ্ঠানের প্রধান
অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য একেএম শামীম
ওসমান।

সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান
আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস
এন্ড সিভিল ডিফেন্সের উপসহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল আরেফিন, সদর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান
মো. নাজিমউদ্দিন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফাতেমা মনির, সিদ্ধিরগঞ্জ অঞ্চলের সহকারী কমিশনার
(ভূমি) গোলাম রেজা মাসুম, উপজেলার ছয়টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য, প্রশাসনিক
কর্মকর্তাবৃন্দ।

এছাড়া সরকারি-বেসরকারি
বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন ফুল দিয়ে তাকে বিদায় জানিয়েছেন।

বক্তাবলী ইউনিয়ন পরিষদ
চেয়ারম্যান শওকত আলী বলেন, করোনা সংকটে সদর ছিল হটস্পট। এই সময়ে লকডাউন নিশ্চিত, খাদ্য
সরবরাহ, সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতকরণসহ পরিস্থিতি মোকাবেলায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করেছেন
এই ইউএনও। নারী হয়েও দিন-রাত কাজ করে গেছেন। 

কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদ
চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম বলেন, নাহিদা বারিক ছিলেন একজন সৃজনশীল ও মানবিক ইউএনও। করোনা
সংকটে মানুষের পাশে কাজ করতে গিয়ে তার পুরো পরিবার করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। কিন্তু তিনি
কাজ থেকে পিছু পা হননি। করোনা রোগীর খাবার নিয়ে গেছেন, অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে গেছেন।

সদর উপজেলা চেয়ারম্যান
আবুল কালাম আজাদ বলেন, মানবিক, সৎ ও সাহসী মানুষ নাহিদা বারিক। তিনি সততা ও দক্ষতার
সাথে দায়িত্ব পালন করে গেছেন। তিনি যেখানেই যাবেন সেখানেই তার যোগ্যতা ও মেধা দিয়ে
সফলভাবে দায়িত্ব পালন করবেন।

ইউএনও নাহিদা বারিক
তার বক্তব্যে বলেন, “যেখানে যতটুকু, চেষ্টা করেছি কাজ করার জন্য। আপনাদের সকলের টিম
ওয়ার্ক, ভালোবাসা ও সহযোগিতা পেয়েছি বলেই কাজ করতে পেরেছি।”

তিনি জানান, রাজধানীতে
তার বাড়ি থাকা সত্ত্বেও দুই বছর ১৭ দিন তার দায়িত্ব পালনের এই সময়ে একটি রাতের জন্যও
তিনি স্টেশন ছাড়েননি।

এর আগে ডিসি অফিসের
ম্যাজিস্ট্রেট, সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করে বিদায় নিলেও এত খারাপ
লাগেনি ইউএনও হিসেবে বিদায় বেলায় যতটুকু খারাপ লাগছে, বলেন তিনি।

“আপনাদের ভালোবাসা
ও সহযোগিতার কথা কখনও ভুলব না। সারাজীবন আপনাদের মনে থাকবে। এই সময়ে হয়ত আরও অনেক কাজ
করতে পারতাম, যেগুলো করতে পারিনি।”

কাজ করতে গিয়ে ভুল-ত্রুটি
হলে সেগুলোর জন্য ক্ষমা চেয়ে নেন তিনি।

“আপনাদের সকলের প্রতি
কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। ভালো যতটুকু কাজ করতে পেরেছি সেগুলোর কৃতিত্ব আপনাদের। আর ভুল
ও ব্যর্থতার সকল দায় ভার আমার।”

সংসদ সদস্য শামীম ওসমান
বলেন, সারাদেশে নাহিদা বারিকের মতো ইউএনও থাকলে দেশের চেহারা পাল্টে যেত। তিনি দায়িত্ব
পালনকালে সাহসিকতা ও বুদ্ধিমত্তা দিয়ে মানুষের জন্য কাজ করছেন। তিনি যেখানে থাকবেন
সফলভাবে দায়িত্ব পালন করবেন।

২০১৯ সালের ২৭ মার্চ
নারায়ণগঞ্জ সদর ইউএনও হিসেবে যোগদান করেন নাহিদা বারিক। এর আগেও তিনি এই জেলার বন্দর
উপজেলা ও সদরের ফতুল্লা রাজস্ব অঞ্চলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

গত ১৮ মার্চ সদর ইউএনও
নাহিদা বারিককে জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব হিসেবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা শাখায়
বদলি করা হয়। তার জায়গায় নতুন ইউএনও হিসেবে যোগদান করবেন টাঙ্গাঈল জেলার মধুপুর উপজেলা
নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফা জহুরা।